বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
শিলিগুড়ি শহরে করোনা কবলিত এলাকাগুলির মধ্যে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড বিপজ্জনক বলেই চিহ্নিত। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক, প্রায় ৭০ জন। ইতিমধ্যে কয়েকজন মারাও গিয়েছেন। তাই সংক্রমণের চেন ভাঙতে এখানে কন্টেনইমেন্ট জোনের সংখ্যাও বেশি করা হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত এখানে কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা ছিল ছ’টি। এই অবস্থায় এই ওয়ার্ডের অন্তগর্ত রাজীবনগর, নিউপোকাইজোত ও মহামায়া কলোনির বাসিন্দারা জমির দলিল না পেয়ে চিন্তায় পড়েছেন।
তিনটি কলোনির বাসিন্দাদের কেউ ব্যবসা, আবার কেউ দিনমজুরের কাজের সঙ্গে যুক্ত। কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, করোনার থাবায় ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে। দিনমজুরের কাজও নেই। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে কার্যত গৃহবন্দি রয়েছি। ফলে জমির দলিলের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে পারিনি। এজন্যই সঙ্কট আরও বেড়েছে। কয়েকজন আবার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করার পরও জমির নিঃশর্ত দলিল না মেলায় রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারছি না। এনআরসি লাগুর পর আবার হয়তো উচ্ছেদ হতে হবে। করোনার পাশাপাশি জমি হারানোর আতঙ্কও গ্রাস করেছে।
পাঁচ মাস আগে শিলিগুড়ি মহকুমায় পাঁচটি কলোনিকে অনুমোদন দেয় রাজ্য সরকার। প্রশাসন জানিয়েছে, কলোনিগুলির মধ্যে রাজীবনগর, নিউ পোকাইজোত ও মহামায়া কলোনি রয়েছে। রাজীবনগরে ৪০০টি, পোকাইজোতে ৩৫০টি এবং মহামায়া কলোনিতে ৪০টি পরিবার রয়েছে। অর্থাৎ তিনটি কলোনিতে বাসিন্দার সংখ্যা ২৫০০’র বেশি। দীর্ঘদিন আগে গড়ে ওঠা ওই কলোনিগুলিকে অনুমোদন দিয়েছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের অধীনে থাকা উদ্বাস্তু, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ। এরপর সমীক্ষাও চালানো হয়। ম্যাপ ধরে সেগুলির জমি জরিপও হয়েছে। এই কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে থাবা বসায় করোনা। এরজেরই জমির নিঃশর্ত দলিল প্রদানের কাজ থমকে গিয়েছে।
প্রশাসনের আধিকারিকরা বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো নিঃশর্ত দলিল প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৬ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সংশ্লিষ্ট তিনটি কলোনির বাসিন্দাদের কাছ থেকে রিফিউজি বা উদ্বাস্তু সার্টিফিকেট, সচিত্র ভোটার কার্ড সহ প্রয়োজনীয় নথি চাওয়া হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাসিন্দারা আবেদন করেননি। তাছাড়া করোনা সংক্রমণের জের প্রশাসনের কর্মীরাও সংশ্লিষ্ট কলোনিগুলিতে এখন যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।
তৃণমূলের শিলিগুড়ি টাউন-১ নম্বর কমিটির সভাপতি সঞ্জয় পাঠক বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই উদ্বাস্তুদের জমির পাট্টা দিচ্ছে। গত মার্চ মাসে ৪৬ সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের ২২ জনকে বাড়িতে গিয়ে জমির পাট্টা দেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। করোনার জেরে এখন সেই কাজ বন্ধ রয়েছে। এনিয়ে ভয়ের কিছু নেই। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই ওই বাসিন্দাদের জমির নিঃশর্ত দলিল দেওয়া হবে।