বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
শিলিগুড়ি পুরসভার পাঁচটি বরো রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসে সংশ্লিষ্ট বরো অফিস থেকে দু’টি পাকা বাড়ির প্ল্যান পাশ করা হলেও সেগুলির ফি কোষাগারে জমা পড়েনি। প্ল্যানগুলি পাশের জন্য ৪০-৫০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে হিসেব পরীক্ষা করতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে। এরপর খোঁজখবর নিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য মেলে। সেই প্ল্যানগুলি জমা নেওয়ার সময় যে রসিদ বা চালান দেওয়া হয়েছে, তাতে বরো অফিসারের সই জাল করা হয়েছে। অফিসের কোনও অফিসারের স্বাক্ষরের সঙ্গে ওই সইয়ের মিল নেই।
ওই বরোর এক অফিসার বলেন, ওই প্ল্যানগুলি জমা দিয়ে ছিলেন পুরসভার একজন বিল্ডিং সুপারভাইজার। বিল্ডিং প্ল্যান পাসের হিসেবে গরমিল সামনে আসার পর সোমবার ওই সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁকে দেওয়া বিল্ডিং প্ল্যান পাশের চালানগুলিও পরীক্ষা করা হয়। বরোর অফিসার ইনচার্জ জে কে পোরে বলেন, আমার সই জাল করে ওই সুপারভাইজারকে চালানগুলি দিয়েছিলেন এককর্মী। বিষয়টি আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। এখন তাঁরা যা নির্দেশ দেবেন, সেমতো পদক্ষেপ করা হবে।
পুর কমিশনার সোনাম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, বিষয়টি পুরসভার সচিব খতিয়ে দেখছেন। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ওই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ওই অভিযোগ নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের পর অনিয়ম হয়েছে বলেই পুরসভার আধিকারিকরা মেনে নিয়েছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, গতবছর জুলাই মাসে ওই বরো কমিটির ক্যাশ কাউন্টারে ১০০ পাতার একটি বিবিধ চালান বুক দেওয়া হয়। তা থেকে রসিদ কেটে বিল্ডিংয়ের প্ল্যান পাশ, বাড়ির সেফ্টি ট্যাঙ্ক সাফাই, বাড়ির বর্জ্য পরিষ্কার প্রভৃতি জন্য নির্দিষ্ট ফি নেওয়া হয়। বরো অফিস থেকে ওই বই রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে। এনিয়েই অনেকের অভিযোগ, বিল্ডিং প্ল্যান পাশের ফি শুধু নয়, সেফ্টি ট্যাঙ্ক, জঞ্জাল সাফাই সহ বিভিন্ন পরিষেবার ফি হাতিয়েছে ওই চক্র। এর পেছনে বরো কর্মীদের একাংশ জড়িত আছে বলেই মনে হচ্ছে।
ওই বরো অফিসের এক আধিকারিক বলেন, জুলাই মাসে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মী ছুটিতে ছিলেন। তখন চালান বুক ছিল একজন কর্মীর হেফাজতে। নিয়ম অনুসারে যেকোনও চালান বুক শেষ হওয়ার পর পুরসভায় জমা দেওয়ার কথা। ওই চালান বুক বরো অফিসে নেই। ওই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও সদুত্তর মেলেনি। বরোর অফিসার ইনচার্জ বলেন, ওই কর্মী জানিয়েছেন, তিনি সেটি হারিয়ে ফেলেছেন। পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, অভিযুক্ত ওই কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করার পরামর্শ মেয়রকে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বরোর চেয়ারপার্সন সিপিএমের স্নিগ্ধা হাজরা বলেন, ওই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে নোটশিট তৈরি হয়েছে। আইন অনুসারে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।
পুরভোটের মুখে এনিয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকার বলেন, আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে আরও বড় মাথা জড়িত রয়েছে। এব্যাপারে তদন্ত করে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি প্রশাসনের কাছে জানাব।