শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
নগাঁও লোকসভা কেন্দ্রের ধিং এলাকায় বাড়ি রুহুল আমিনের। রাখঢাক না করেই বললেন, ‘আপনি (হিমন্ত) বলেছিলেন মিয়াঁ ভোটের দরকার নেই। কিন্তু আপনি এখন ভালোই বুঝতে পারছেন, আমাদের সমর্থন ছাড়া বহু আসনেই জেতা যাবে না। তাই ভোটের সময় আমাদের কাছে আসছেন। আমাদের যখন দরকারই নেই, আমরা কেন আপনাকে সমর্থন করব?’ ক্ষোভের সুর ৫৬ বছরের আমিনের কণ্ঠেও। পেশায় শিক্ষক। বললেন, ‘২০২১ সালে অসমে বিজেপি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা অসম্মানজনক কথা বলে চলেছেন। ওরা বলেছেন মিয়াঁদের মহিলারা বাচ্চা জন্ম দেওয়ার মেশিন। আমাদের সবার খারাপ লেগেছিল। মুখ্যমন্ত্রী এখন দাবি করতেই পারেন, মিয়াঁদের মহিলা ও অল্প বয়সি ভোট বিজেপি পাবে। কিন্তু প্রমাণ হবে, তাঁর এই দাবি ভুল।’ আজ শুক্রবার ভোটগ্রহণ এই নগাঁও লোকসভা আসনে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮ লক্ষ ২০ হাজার। তার মধ্যে ১০ লক্ষ ৫০ হাজার মুসলিম ভোটার। কংগ্রেসের বিদায়ী সাংসদ প্রদ্যোৎ বরদলুই এবারও লড়াইয়ে। উল্টোদিকে তিন মাস আগে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে গিয়ে টিকিট পেয়েছেন সুরেশ বোরা। ভোটের এই উত্তাপ প্রসঙ্গে আমিনের বক্তব্য, ‘সাধারণ ধারণা হল মিয়াঁ সম্প্রদায় অনগ্রসর শ্রেণি। তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু বোঝে না। কিন্তু এটা ঠিক নয়। বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদলে দিতে পারে। তার ফলে মায়ারমারের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। মুসলিম ও খ্রিস্টানদের সব স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হতে পারে। মানুষ চিন্তিত।’ ক্ষোভ ঝরে পড়ল মৌসুমী বেগমের গলাতেও। বেলতোলি এলাকার এই তরুণী বিএ ষষ্ঠ সেমেস্টারের ছাত্রী। তাঁর সোজাসাপ্টা কথা, ‘আমরা ওদের বিশ্বাস করি না। বিশ্বাস করি না ওদের প্রতিশ্রুতিকেও। সরকার গড়া ইস্তক মুসলিমদের হেনস্তা করে চলেছে।’ নগাঁও কলেজে দর্শনের এই ছাত্রীর আরও বক্তব্য, ‘অল্প বয়সিদের কাছে এবারের ভোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হল সিএএ। তাছাড়া, মুসলিম মেয়েরা তিন তালাক অবলুপ্তির বিরুদ্ধেই। কারণ, তিন তালাক ব্যবস্থায় স্বামীর উপর ক্ষুব্ধ মেয়েদের পক্ষেও বিবাহ বিচ্ছেদ অপেক্ষাকৃত সহজ ছিল।’ রূপাহির বাসিন্দা ইকরামুল হোসেন আবার বলছেন, ‘মিয়াঁরা খুব চুপচাপ স্বভাবের। তাঁরা বিজেপির সব সভায় বড় সংখ্যায় যোগ দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁরা নাচছেনও। কিন্তু তাঁরা কোনওদিন বিজেপিকে ভোট দেবেন না। কিছু ভালো কাজকর্ম হয়েছে ঠিক কথা। কিন্তু হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও তাঁর মন্ত্রীরা যে ভাষায় কথা বলেছেন, আমরা কখনও ভুলব না। ক্ষমাও করব না।’