বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টুনিঘাটা মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা রামকৃষ্ণ মণ্ডল (৫৮) ও লীলা মণ্ডল (৫১) গত ১৫ সেপ্টেম্বর ভোররাতে গুলিতে খুন হন। খুনের পর মৃত দম্পতির ছোট জামাই বান্টি সাধু ও মেয়ে নিবেদিতা মণ্ডল সাধু পরিবারের অন্যান্যদের বোঝাতে থাকে যে, পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা থাকা কাশীপুর কলতলা এলাকার যুবক তন্ময় বরই খুন করেছে। মৃত রামকৃষ্ণবাবুর ভাই জ্যোর্তিময়বাবু থানায় তন্ময়ের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিস তন্ময়কে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তন্ময়কে জেরা করে পুলিস বুঝতে পারে, সে কোনওভাবেই এই খুনের সঙ্গে জড়িত নয়। তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পারেন, খুনের সঙ্গে বান্টি সাধুর যোগ রয়েছে। টানা জেরার পর পুলিস ২৪ সেপ্টেম্বর বান্টিকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি সুপারি কিলার অজয় দাসকেও গ্রেপ্তার করেছিল। ধৃতদের জেরা করে পুলিস জানতে পারে, রামকৃষ্ণবাবু অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ান। তাঁর বড় মেয়ে মারা গিয়েছেন। বড় মেয়ের একমাত্র মেয়ে তাঁদের কাছে থাকতেন। নিবেদিতা ও তাঁর স্বামী একাধিক ব্যবসা করত। সেই ব্যবসা চালাতে গিয়ে বাজারে বান্টির প্রায় ৮ লাখ টাকা দেনা হয়েছিল। সে কারণে মেয়ে ও জামাই একাধিকবার জায়গা বিক্রি করে তাঁদের টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। যদিও রামকৃষ্ণবাবু জায়গা বিক্রি করে টাকা দিতে রাজি হননি। সে কারণে ক্ষিপ্ত বান্টি শ্বশুর ও শাশুড়িকে খুন করার জন্য ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে ভাড়াটে খুনি অজয়কে নিয়োগ করেছিল। পুলিস অজয়কে জেরা করার পাশাপাশি তার মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখে, নিবেদিতা খুনের আগে প্রায় ৪৭ মিনিট অজয়ের সঙ্গে কথা বলেছিল। সেই কথপোকথনের রেকর্ডিং উদ্ধার করার পর পুলিস জানতে পারে নিবেদিতাও এই খুনে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী। হাতে তথ্যপ্রমান এলেও সদ্য প্রসবা নিবেদিতাকে পুলিস গ্রেপ্তার করেনি। শুক্রবার রাতে পুলিস তাকে জয়গাছি বেলতলার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, খুনের দিন নিবেদিতা বাবা ও মায়ের মৃতদেহ জড়িয়ে ধরে আর্তনাদ করে কেঁদেছিল। সে নিজেই যে খুনের সঙ্গে জড়িত, সেকথা তদন্তকারীরাও প্রথমে ভাবেননি। গ্রেপ্তারের পরও তার কোনও অনুশোচনা নেই। পুলিস জানিয়েছে, ঠান্ডা মাথার খুনিদের মতো সে নির্লিপ্ত। পুলিসের সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় কথা বলে তাঁর মাস দু’য়েকের সন্তানকে শ্বশুর ও শাশুড়ির কাছে রেখে এসেছে। হাবড়া থানার আইসি গৌতম মিত্র বলেন, টাকার জন্য বাবা ও মাকে খুন করার বিষয়ে স্বামী ও সুপারি কিলারের সঙ্গে কথা বলেছিল নিবেদিতা। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ হাতে আসার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।