বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সোনিয়ার বাড়ি আনন্দপুর থানা এলাকার নোনাডাঙায়। চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। ৫ তারিখ গভীর রাতে সেই শিশুকে খুন করে সোনিয়া। প্রতিবেশীদের বিভ্রান্ত করতে পরদিন সকালেই তিনি মেয়েকে নিয়ে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে যান। সেখানেই চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে আনন্দপুর থানা।
ময়নাতদন্তে জানা যায় ওই শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। থানার পক্ষ থেকে খুনের মামলা রুজু হয়। পুলিসের কাছে সোনিয়া প্রথমে দাবি করে, দেড় বছরের ছেলে খেলা করতে করতে আচমকা বোনের গলায় চেপে বসে। তার ফলেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায় মেয়ে। প্রথমে তার কথা বিশ্বাস করেছিলেন অফিসাররা। কারণ, শিশুটির গলায় নখ দিয়ে আঁচড়ানোর দাগ ছিল। যা দেখে তাঁরা অনুমান করেন, খেলার সময় কোনভাবে বোনকে আঁচড়ে ফেলে ভাই। সেখান থেকে কোনওভাবে গলায় চাপ পড়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যায় তিন দিনের শিশুটির।
কিন্তু একটা খটকা ছিলই। তাই গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা ও থানার অফিসাররা আবার ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। কথা বলেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে অফিসাররা বুঝতে পড়েন, দেড় বছরের শিশুর নখের দাগ এরকম এতটা গভীর হতে পারে না। এতটা চাপও সে দিতে পারবে না। এখান থেকে সন্দেহের সূত্রপাত। তদন্তকারী অফিসার অরিন্দম সরকার আবার শিশুটির মাকে জেরার সিদ্ধান্ত নেন। সেইমতো রবিবার সোনিয়াকে ডেকে পাঠানো হয়। গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা ও থানার অফিসাররা দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। সেই সময় বয়ান বদলাতে থাকে সোনিয়া। জানতে চাওয়া হয়, দাদা-বোনের উপর বসেছে দেখে তিনি নামিয়ে দিলেন না কেন? তার জবাবেও অসঙ্গতি ধরা পড়ে। শেষপর্যন্ত অবশ্য জেরায় ভেঙে পড়ে সোনিয়া।
পুলিসকে সোনিয়া জানায়, তার স্বামী সামান্য ব্যাগের কারখানায় কাজ করতেন। শুরু থেকেই সংসারে টানাটানি ছিল। বড় ছেলে জন্মানোর পর সঙ্কট আরও বাড়ে। সোনিয়া বাবার কাছ থেকে টাকা এনে বাচ্চার খাবার জোগাড় করত। এর মধ্যে সে আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে স্বামী অন্য এক মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কন্যাসন্তান জন্মের পরও স্বামী কোনও যত্ন নেননি। জন্ম থেকে অপুষ্টিতে ভোগা মেয়ে এবং ছেলেকে নিয়ে সোনিয়ার পক্ষে সংসার চালানো সম্ভব ছিল না। সেই কারণে মেয়েকে খুনের পথই বেছে নিতে বাধ্য হয় সে।