বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এমনিতে ওই পাড়ায় কোনও ধরনের অপরাধের ঘটনা স্মরণকালে অনেকেই মনে করতে পারছেন না। তার উপরে মঙ্গলবার রাতে দু’টো বিয়ের অনুষ্ঠানের আনন্দে রাত জেগেছে ওই পাড়া। তারপর সাতসকালে ওই ঘটনায় স্থম্ভিত সকলে। যেখানে দেহটি পড়েছিল তার সামনেই একটি বাড়িতে মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে ‘প্রি ম্যারেজ গেট টুগেদার’ ছিল। বহুতলের মেন গেটে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল। তা জ্বলেছে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। ওই বহুতলের বাসিন্দা সুজাতা চন্দ্র জানান, আমরা রাত আড়াইটে নাগাদ ঘুমিয়েছি। কিন্তু, কোনও চিৎকার বা গণ্ডগোলের কিছু টের পাইনি। অন্যদিন বাইরে কুকুরের আওয়াজ শুনি এদিন তাও শুনিনি। যে বাড়িতে বিয়ে হচ্ছে সেই পরিবারের একজন জানান, ভোরে দধিমঙ্গলের জন্য সবাই বেরোচ্ছিলেন তখন লোকের মুখে এটা শুনতে পেলাম। আজ আমার মেয়ের বিয়ে। অথচ সকালে ওই ঘটনা দেখে আমাদের মন কী ভালো থাকে? সঠিক তদন্ত হোক। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।
তারা দাস নামে স্থানীয় বাসিন্দা জানান, তখন সকাল সাতটা পেরিয়ে গিয়েছে। জমাদার কাজ করতে এসেছেন। তিনি বললেন, একজন পড়ে রয়েছে। তখন আমি আমাদের নীচের ফ্ল্যাটে থাকা বুম্বার বাবাকে বললাম, বুম্বা কোথায়? ওর বাবা তখন খোঁজ করতে বেরোলেন। স্বপনবাবুদের পারিবারিক বন্ধু প্রণব ঘোষ জানান, মিষ্টি ব্যবহার ছিল রাজার। ওকে জন্মাতে দেখেছি। ওর বাবা আমাকে সকালে ফোন করে যখন ওই কথা জানাল, ভাবতেই পারছিলাম না।
রাজা দাসের ফেসবুক প্রোফাইলে দক্ষিণ দমদম পুরসভার কাউন্সিলার অভিজিৎ মিত্রর ছবি রয়েছে। তিনি এদিন জানান, শুনেই খারাপ লাগল। রাজা আমাদের পার্টির সমর্থক ছিল। গত রবিবার আমাদের একটি অনুষ্ঠানে এসেছিল। ওর সঙ্গে সেটাই আমার শেষ দেখা। বিধাননগর পুরসভার স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রণয় রায় এদিন ঘটনাস্থলে যান। তিনি জানান, খুবই দুঃখের ঘটনা। বাগুইআটির বাসিন্দা কংগ্রেস নেতা সোমেশ্বর বাগুই জানান, ২০১১ সালে কেষ্টপুরে তৃণমূল কর্মী স্বপন মণ্ডল খুন হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে জগৎপুরে খুন হন তৃণমূল নেতা বুড়ো ওরফে সঞ্জয় রায়। তারপরে এই ঘটনা। কমিশনারেট, কর্পোরেশন হয়েছে কিন্তু, সিসিটিভি পর্যাপ্ত হয়নি। আইন শৃঙ্খলা আরও জোরদার করা দরকার।
এদিকে, যে বন্ধুর বাড়িতে রাজা রাতে থাকবেন বলে তাঁর বাবাকে জানিয়েছিলেন সেই বন্ধু এদিন সন্ধ্যায় ফোনে বলেন, আমার বাড়িতে রাতে ছিল না রাজা। আমার সঙ্গে বাগুইআটির চালপট্টির বাজারে শেষ দেখা হয়েছে রাত ৯টা নাগাদ। আমরা একসঙ্গে চা-বিস্কুট খেয়েছি। ও আমার কাছে কিছু খুচরো পয়সা চায়। আমি ওকে ৫০ টাকা দিয়ে বলি ওটা রেখে দে। এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ রাজার পরিবারের লোকেদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে বিষয়টি জানতে পারি। আমার ভাইয়ের মতো ছিল। আমার এতটাই খারাপ লাগছে যে ওর পরিবারের সামনে দাঁড়াব কী করে সেজন্য যেতে পারিনি। স্থানীয় একজন জানান, রাজা একসময় দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় ঠিকার কাজ করতেন। পরে ২-৩ বছর অ্যাপ ক্যাব ব্যবসায় যুক্ত হন। সেখানে ওর অনেক টাকা পাওনা ছিল বলে শুনেছি। এদিকে, চন্দননগরে রাজার এক বান্ধবী থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে বিয়ে প্রায় ঠিক হয়েছিল বলে একটি সূত্রের দাবি। তবে রাজার এক পরিচিত জানান, বিভিন্ন কারণে ইদানীং ওই সম্পর্ক নিয়ে মনমরা ছিল রাজা। জিজ্ঞেস করলে কিছু বলতে চাইত না।