ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
গুরু-তত্ত্বের আবিষ্কর্তা হলেও এই বিশ্ববিখ্যাত মানুষটি মোটেই ভীষণ গম্ভীর বা রসবোধহীন ছিলেন না। তাঁর জীবনের বেশ কিছু ঘটনা থেকে মানুষ আইনস্টাইনের পরিচয় পাওয়া যায়। শোনা যায়, বারো বছর বয়স পর্যন্ত আইনস্টাইন খুব মসৃণভাবে কথা বলতে পারতেন না। স্কুলের ক্লাসে অন্য সতীর্থদের বিরক্ত করা আর দুষ্টু স্বভাবের জন্য তাঁকে সবাই ডাকত ‘রটারডাম রটার’ বলে। তবে, তাঁর ক্লেপটোম্যানিয়া নামে একটি অসুখ ছিল। যে কারণে ছোটবেলায় আইনস্টাইন অজ্ঞানতাবশত প্রায়ই অন্যদের জিনিস চুরি করে ফেলতেন। অবশ্য পরবর্তীকালে তিনি এই রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
যাই হোক আইনস্টাইন একদিন আমেরিকার প্রিন্সটন থেকে ট্রেনে উঠেছেন। যে সময় বিজ্ঞানী হিসাবে তিনি খ্যাতির শীর্ষে। টিকিট পরীক্ষক যথারীতি আইনস্টাইনের কাছে এসে টিকিট চাইলেন। আইনস্টাইনও তাঁর কোটের পকেটে হাত দিয়ে টিকিট বের করতে গিয়ে দেখলেন টিকিটটা নেই। কোথায় গেল টিকিট! তিনি তাঁর প্যান্টের পকেট, জামার পকেট এমনকী ব্রিফকেস তন্ন তন্ন করে খুঁজলেন কিন্তু কোথাও টিকিটের দেখা নেই। আইনস্টাইনের অবস্থা দেখে সেই টিকিট পরীক্ষক তাঁকে বললেন, ‘স্যার আমি জানি আপনি কে। শুধু তাই নয়, ট্রেনে উপস্থিত অন্যান্যরাও আপনাকে চেনেন। আপনি ট্রেনে টিকিট না কেটে উঠবেন, এটা হতেই পারে না।’ এই বলে টিকিট পরীক্ষক অন্য যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
এর কিছুক্ষণ পর সেই টিকিট পরীক্ষক খেয়াল করলেন যে আইনস্টাইন তখনও টিকিট খুঁজে চলেছেন, ট্রেনের মধ্যে হাঁটু মুড়ে বসে সিটের তলা পর্যন্ত হাতড়াচ্ছেন। টিকিট পরীক্ষক তখন আইনস্টাইনকে বললেন, ‘স্যার আমি তো আপনাকে বললাম, আপনার টিকিট দেখানোর কোনও প্রয়োজন নেই, আপনি কেন শুধু শুধু ওটাকে খুঁজছেন।’ উত্তরে আইনস্টাইন বলেন ‘আসলে আমি কোথায় যাব সেটাই ভুলে গিয়েছি, তাই টিকিটটা না খুঁজে পেলে সেটা কিছুতেই মনে করা সম্ভব নয়।’
আইনস্টাইনকে জীবনে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তাঁর আবিষ্কার সম্পর্কে বক্তৃতা দিতে হয়েছে। এই সব দিনগুলিতে তাঁর সঙ্গী হিসাবে থাকতেন তাঁর এক গাড়ির চালক হ্যারি। হ্যারি, আইনস্টাইনের বক্তৃতার সময় পিছনের সারিতে বসে থাকতেন আর সবটা শুনতেন। একদিন হ্যারি আইনস্টাইনকে বলেন ‘প্রফেসর, আপনি আপনার ওই আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বের ওপর বক্তৃতাটা এতবার দিয়েছেন যে, আমার তো দাঁড়ি, কমা সুদ্ধ মুখস্থ হয়ে গিয়েছে।’ শুনে আইনস্টাইন বলেন, ‘খুব ভালো কথা, আমার পরের সপ্তাহে ডর্টমাউথ যাওয়ার কথা। ওখানে আমাকে আগে কেউ দেখেনি, তুমি সেখানে আইনস্টাইন হয়ে বক্তৃতা দাও আর আমি তোমার জায়গায় ড্রাইভার হয়ে যাব।’
যেমন কথা তেমন কাজ। হ্যারি তো ডর্টমাউথে বক্তৃতা দিল। সবাই হ্যারিকেই আইনস্টাইন ভাবল। বক্তৃতার শেষে শ্রোতারা কঠিন কঠিন প্রশ্ন করতে লাগল। বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য হ্যারি বুদ্ধি খাটিয়ে ড্রাইভার রূপী আইনস্টাইনকে দেখিয়ে বললেন, ‘আপনাদের প্রশ্নগুলি এতটাই সোজা যে, এর উত্তর আমার ড্রাইভারই দিতে পারবে।’ বিজ্ঞানীর মতো তাঁর ড্রাইভারটিও ছিলেন বুদ্ধিমান।
মৃণাল শীল