নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: মদের টোপই হচ্ছে ‘স্টোনম্যানের’ ফাঁদ! শুক্রবার শিলিগুড়িতে ধৃত ‘স্টোনম্যান’ কমল পণ্ডিতকে নিয়ে যুবক খুনের ঘটনা পুনর্নির্মাণ করার পর এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিস। একইসঙ্গে তারা ধৃতকে জেরা করে কিছু চোরাই মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছে। তবে মৃতের স্মার্টফোন এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস। মৃতের পরিচয়ও অজানা। গোটা ঘটনা নিয়ে শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পশ্চিম) কুনুয়ার ভূষণ সিং অবশ্য বলেন, ওই খুনের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ও উপকরণ মিলেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই মৃতের পরিচয় জানা যাবে বলে আশা করছি।
এদিন দুপুরে ধৃত স্টোনম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় খুনের ঘটনার তদন্তকারী অফিসার দেবব্রত খাঁ। তাঁর সঙ্গে প্রধাননগর থানার আরও দু’জন অফিসার এবং ফোর্স ছিল। কীভাবে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে তা কার্যত অভিনয় করে ব্যাখ্যা করে ধৃত। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে জংশনের সামনে নিয়ে যাওয়া হয় ধৃতকে। সেখানে সে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। তারপর সে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে যায়। মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে মৃত যুবক বাধা দেন। এর জেরে মৃতের সঙ্গে ধৃতের ধস্তাধস্তি হয়। তখন সে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে ওই যুবককে খুন করে। মৃতের কাছ থেকে নগদ ২৬০০ টাকা এবং মোবাইল ফোন নিয়ে চম্পট দেয়।
তদন্তকারী পুলিস অফিসাররা বলেন, মদ জোগাড় করে দেওয়ার নাম করেই ওই যুবককে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে নির্জন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে ধৃত জানিয়েছে। কাজেই ঘটনার রাতে সম্ভবত মদের খোঁজে মৃত যুবক জংশন এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। তখনই তিনি স্ট্যোনম্যানের ফাঁদে পড়েন। ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পশ্চিম) বলেন, এমনটা হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ঘটনার আগেই ওই যুবক মদ পান করেছিলেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমনই তথ্য মিলেছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুধু ওই যুবককে খুন নয়, মদ সহ বিভিন্নরকম টোপ দিয়ে ধৃত ‘স্টোনম্যান’ একাধিক ছিনতাইয়ের অপারেশন চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ করে ধৃতের মাধ্যমে পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। যে মোবাইল ফোনগুলি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ছিনতাই করে সে কয়েকজনের কাছে বিক্রি করেছিল। এর থেকেই মনে হচ্ছে, ছিনতাইয়ের জন্য অভিনব ফাঁদ তৈরি করেছিল ধৃত। ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পশ্চিম) বলেন, ধৃত মাদকাসক্ত। খুব সম্ভবত নেশার টাকা জোগাড় করতেই এভাবে জংশন এলাকায় ছিনতাই চালাতো। প্রসঙ্গত, ৫ অক্টোবর স্টোনম্যানের হাতে খুন হওয়া ওই যুবকের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। পুলিস জানিয়েছে, কয়েকটি মোবাইল ফোন মিলেছে। মৃতের পরিচয় জানতে সেগুলি দেখা হচ্ছে।