সংবাদদাতা, মালদহ: দলের জন্মলগ্নের নেতাকর্মী, যাঁরা অভিমান করে দূরে সরে রয়েছেন, এবার তাঁদেরকে নতুন করে জায়গা দেওয়া হতে পারে তৃণমূলের ব্লক ও পুর এলাকার কমিটিতে। জেলা কমিটি ঘোষণা হয়ে গিয়েছে আগেই। এবার দ্রুত পুর ও ব্লক কমিটি গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইংলিশবাজার শহর ও গ্রামীণ এলাকার নতুন কমিটি সরাসরি ঘোষণা না করে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রথমে খসড়া কমিটি গঠন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এরপর নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে কয়েকদিনের মধ্যেই। আসলে নবাগত নেতাকর্মীদের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়া অনেক পুরনো তৃণমূল কর্মীর কাছেই ঘুরপথে বার্তা পাঠাচ্ছে বিজেপি। তাঁদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে বিজেপিতে যোগ দিলে তাঁদের যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হবে। বিজেপির এই গোপন তৎপরতার বিষয়টি জানতে পেরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের ইংলিশবাজারের কোঅর্ডিনেটর দুলাল সরকার বলেন, ৮ নভেম্বর মালদহ শহরের টাউন হলে দলের টাউন কমিটি গঠন নিয়ে একটি বৈঠক করবেন টাউন তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। ১০ নভেম্বর ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে বৈঠক হবে কাজীগ্রামের একটি বেসরকারি বিএড কলেজে। ব্লক তৃণমূল সভানেত্রী প্রতিভা সিংহ ওই বৈঠকে থাকবেন। দু’টি বৈঠক থেকে খসড়া কমিটি তৈরি করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে ওই কমিটিগুলি গঠন করা হবে। প্রতিটি ব্লকেই আলোচনার ভিত্তিতে ব্লক কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন দুলাল সরকার। ইংলিশবাজার টাউন তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, আমরা কমিটি গঠন সম্পর্কিত বৈঠকে দলের পুরনো দিনের নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তেমনই ডাকা হয়েছে পরবর্তীকালে দলে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীদেরও। আমরা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে চাই। নবীন ও প্রবীণদের মেলবন্ধনের পাশাপাশি পুরনো ও নতুনদের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সামনেই নির্বাচন। আমরা দ্রুত কমিটি তৈরি করে পুরোদমে নির্বাচনের কাজে ঝাঁপাতে চাইছি।
বৃহস্পতিবার ইংলিশবাজার পুরসভায় গিয়ে দুলাল সরকারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। মূলত কমিটি গঠন সম্পর্কিত বিষয় নিয়েই দু’জনের আলোচনা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, দল ক্ষমতায় রয়েছে। অনেকেই উন্নয়নের শরিক হতে তৃণমূলে এসেছেন বা আসছেন। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, যখন দল ক্ষমতায় ছিল না, তখন অনেক নেতাকর্মী দলের জন্য ঘাম ঝরিয়েছেন, লড়াই করেছেন, পরিশ্রম করেছেন। তাঁদের অবদান ভুলে গেলে চলবে না। আমরা সকলকেই প্রাপ্য মর্যাদা দিয়ে দলের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাই। আর দলের কোনও নেতাকর্মীই যেন দল না ছাড়েন,তা নিশ্চিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে তৃণমূল নেতৃত্বও। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিটি গঠন নিয়ে ওই দু’টি বৈঠকেই জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর ছাড়াও ইংলিশবাজারের বিধায়ক নীহার ঘোষ, যুব সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস হাজির থাকবেন। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ইংলিশবাজারের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকেও।