নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
প্রাচীন শরীরচর্চার অন্যতম মাধ্যম হল যোগ ব্যায়াম। মানসিক ও শারীরিক শক্তি বাড়ায়। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে ভারতে যোগ অনুশলীন শুরু হয়। তারপর কালের নিয়মে বিভিন্ন পন্থায় পাড়ি দিয়েছে ‘সাত সাগর তেরো নদী’। মুনি-ঋষিদের শরীরচর্চার এই পদ্ধতি সাদরে গ্রহণ করেছে পশ্চিমী দেশগুলি। বর্তমানে ব্রিটেনের স্কুল, হাসপাতাল, হেলথ ক্লাবগুলিতে যোগ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রস্তাব মতো ফি বছর ২১ জুন গোটা বিশ্বজুড়ে ‘ওয়ার্ল্ড যোগা ডে’ পালিত হয়।
কিন্তু, করোনা মহামারী যোগ প্রশিক্ষকদের উপার্জন কেড়ে নিয়েছে। এক অদ্ভূত জীবন সংগ্রামের মুখে তাঁদের দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অনেকেই ‘সেল্ফ এমপ্লয়মেন্ট ইনকাম সাপোর্ট স্কিম’-এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যোগ প্রশিক্ষকদের আয় নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওয়াকার্স ইউনিয়ন অব গ্রেট ব্রিটেন (আইডব্লুজিবি) ইউনিয়ন। সেখানে দেখা গিয়েছে, করোনা মহামারীর আগে ৬০ শতাংশের বেশি যোগ প্রশিক্ষক খুব সামান্য অর্থ উপার্জন করতেন। কয়েকজন আবার ঘণ্টায় পাঁচ পাউন্ডেরও কম। সেইসঙ্গে জুটত না ওভারটাইম। শুধুমাত্র ৪ শতাংশ প্রশিক্ষক চাকুরিজীবীর মর্যাদা পেতেন। সঙ্গে অন্যান্য সুবিধা। মহিলা প্রশিক্ষকদের ক্ষেত্রে সেই হার ৩ শতাংশ। আর ১৯ শতাংশ শিক্ষকের লিখিত চুক্তি ছিল।
এ প্রসঙ্গে আইডব্লুজিবি যোগা টিচার্স ইউনিয়নের সেক্রেটারি সিমরান উপ্পল বলেছেন, বিশ্বব্যাপী যোগের বাজার ছ’হাজার কোটি টাকা হলেও বহু যোগ প্রশিক্ষক বেতন পান না। বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হন। আমরা আশ্রমের মধ্যে তারকা ঘিরে থাকা কোনও সাধু-সন্ত নই। তাই যোগ প্রশিক্ষকদের মর্যাদা ও মানবাধিকারকে সম্মান জানানোর সময় চলে এসেছে। পাশাপাশি, যোগ প্রশিক্ষকেরা যথাযথ বেতন, সম্মান পান না বলেও জানিয়েছেন ইউনিয়নের সদস্য তথা ‘বেম’ গোষ্ঠীর সদস্য লিনেট গ্রিনঅ্যাওয়ে।
কিন্তু, ইউনিয়ন তৈরি হলেই কি যাবতীয় সমস্যা, বঞ্চনার সমাধান হয়ে যাবে? জবাবে কৃষ্ণা রূপারেলিয়া নামে এক যোগ প্রশিক্ষক বলেছেন, ইউনিয়ন একটা ভালো পদক্ষেপ। আমি তাতে যোগ দিতে পারি। ব্রিটেনের ‘হুইল অব যোগা’ সংস্থা থেকে ৫০০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিয়ে মহামারীর আগে স্থানীয় একটা জিমে যোগ চর্চা শেখাতাম। বর্তমানে ‘আর্ট অব লিভিং’-এর ‘শ্রী শ্রী যোগা’র স্বেচ্ছাসেবক। মহামারীর পর্বে দেশবাসীর উত্তেজনা ও উদ্বেগ দূর করতে অনলাইনে যোগ শেখাই। আমার আয়ে খুব বেশি প্রভাব না পড়লেও, এমন অনেক যোগ প্রশিক্ষকের বিষয়ে জানি, যাঁদের অবস্থা শোচনীয়।