নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
ইংল্যান্ডের বার্টন শহরের বাসিন্দা জোসেফ ফ্লাভিল। গাড়ি দুর্ঘটনায় মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। গত প্রায় এক বছর ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হৃদযন্ত্র চললেও মস্তিস্ক একরকম বিকলই ছিল। ফলে গোটা পৃথিবীজুড়ে ভয়াবহ মহামারীর প্রকোপ এতটুকু টের পাননি ওই যুবক। জানতেও পারেননি অদৃশ্য শত্রুর হাত বাঁচতে গোটা পৃথিবী কীভাবে দিনের পর দিন ঘরবন্দি হয়ে থেকেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে যেতে হয়েছে কতশত মানুষকে। তবে, আশার কথা একটাই, চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টায় ধীরে ধীরে চেতনা ফিরছে জোসেফের। তবে এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। আকারে ইঙ্গিতে সাড়া দিচ্ছেন তিনি। তাতেই বেজায় খুশি তাঁর পরিবার। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর মহামারী, লকডাউন—এসব কীভাবে বোঝাবেন তাঁরা জোসেফকে? এটাই বড় চিন্তা তাঁর বাড়ির লোকজনের।
জোসেফের এক আত্মীয় শেলি ফ্লাভিল জানিয়েছেন, করোনা-ভীতি এখনও কাটেনি। তাই হাসপাতালে গিয়ে জোসেফকে দেখার সুযোগ হয়নি। তার হাত ধরতে পারিনি। ভরসা বলতে একমাত্র ভিডিও লিঙ্ক। সেটির মাধ্যমেই ওকে দেখতাম। কথা বলতাম। কিন্তু ও কোনও সাড়া দিত না। খুব কষ্ট হতো আমাদের। কিছুদিন হল জোসেফ চোখের ইশারায় আমাদের কথায় সাড়া দিচ্ছে। বুঝতে পারছি, ও আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছে। এতে আমরা যে কতটা আনন্দিত তা বলে বোঝাতে পারব না। শেলির কথায়, ‘জোসেফকে বলেছি, আমরা তোমার সঙ্গে থাকতে পারছি না একথা সত্যি। তবে তুমি নিরাপদে আছো। এভাবে বেশিদিন থাকতে হবে না তোমাকে। শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে তুমি। বাড়ি ফিরে আসবে।’ লড়াইয়ে হার না মানার আত্মবিশ্বাসের ইঙ্গিত জোসেফের চোখেমুখেও।
তখনও ব্রিটেনে করোনা সেভাবে থাবা বসায়নি। জোসেফ ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। সেই থেকে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শুর তাঁর। এর পর ক্রমেই ঘনিয়ে আসে দুঃস্বপ্নের দিন। একের পর এক দেশে শুরু হয় লকডাউন। জোসেফের দেশেও প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হন। মারা গিয়েছেন লক্ষাধিক। কিন্তু কিছুই টের পাননি ওই যুবক। কোমায় থাকাকালীনই নিজেও দু’বার আক্রান্ত হন কোভিডে। জোসেফের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, একটা লম্বা যুদ্ধ একাই লড়ছে সে। এখনও জারি সেই লড়াই। তবে আরও একটা লড়াইয়ের কথা অজানা থেকে গিয়েছে তাঁর। মহামারীর বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বের যুদ্ধ-কাহিনী তাঁর কাছে গল্প হয়েই থেকে যাবে!