নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পর পর দু’বছর স্কুলে বসে পরীক্ষা দেওয়া হয়নি অধিকাংশ স্কুলপড়ুয়ার। তাই মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে অফলাইন টেস্ট নেওয়ার সুপারিশ করছেন অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক। পুরো নম্বরের না হোক অন্তত এমসিকিউ ধাঁচে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক ছাত্রছাত্রীদের। না-হলে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়বে তারা। এমনই মনে করছেন প্রধান শিক্ষকরা। যদিও, এই টেস্টে কাউকে আটকে দেওয়ার পক্ষপাতী নন তাঁরা।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য সিআইএসসিই, সিবিএসই এবং বেশ কয়েকটি রাজ্য পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা করায় বেশ আশাবাদী। যদিও, সিআইএসসিই হঠাৎই মঙ্গলবার তাদের অনলাইন পরীক্ষা স্থগিত করেছে। তবে, সিবিএসই তাদের দশম ও দ্বাদশের অফলাইন পরীক্ষা নিচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের পর্ষদ এবং সংসদ হয়তো তাদের দিকেই তাকিয়ে ছিল। এবার হয়তো কিছু একটা ঘোষণা করা হবে। উৎসব মরশুম শেষ হলেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলের আনার উদ্যোগ নিতে হবে। টেস্টও যদি ছোট করেও নেওয়া হয়, তাহলে সেটা স্কুলে বসেই দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। ফাইনালের আগে টেস্টের মতো পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন খুবই জরুরি।
শাখাওয়াত গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিংহ মহাপাত্রের মত, পুজোর ছুটির পরে পর্ষদ এবং সংসদ স্কুলগুলিকে টেস্ট নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলে, সেটাই সবচেয়ে ভালো হবে। পড়ুয়াদের প্রস্তুতিও ভালো হবে। কারণ তারা বহুদিন পরীক্ষা দেয়নি। তিনি অবশ্য পরীক্ষা অনলাইন না অফলাইনে হবে, তা ঠিক করার বিষয়টি সরকার এবং বোর্ডগুলির উপরেই ছাড়ার পক্ষপাতী। হওড়া জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমলকুমার শীল বলেন, অনেকদিন ধরে পরীক্ষাই হয়নি। তাই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ভয় কাজ করবে। মূল পরীক্ষার আগে অবজেক্টটিভ টাইপ বা এমসিকিউ ধাঁচে কম নম্বরের পরীক্ষা হলে ভালোই হবে। উল্টোডাঙার সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সঞ্চয়িতা চৌধুরীর কথায়, স্কুল খুললেই কোভিড বিধি মেনে টেস্ট নেওয়া উচিত।
যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুদার বলেন, চলতি বছরে মাস দুয়েক স্কুল খোলা থাকাকালীন আমরা পূর্ণ নম্বরের অফলাইন টেস্ট নিয়েছিলাম। এবারও আমাদের সেই পরিকল্পনা রয়েছে। সংক্ষেপিত সিলেবাসে, ফাইনালের প্রশ্নপত্রের ধাঁচ অনুসরণ করেই পরীক্ষা নেব। গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তমলুকের উপকণ্ঠে শিমুলিয়া চণ্ডীমাতা কেদারনাথ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক তিমিরবরণ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ভিত্তিতে আর কতবার মূল্যায়ন হবে? তাই বাস্তবের মাটিতে নামার সময় হয়েছে। তাই টেস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, করোনার গ্রাফ বাড়ছে। সিআইএসসিই তাদের পরীক্ষা স্থগিত করেছে। এগুলিও খুব নেতিবাচক লক্ষণ। তাই সবদিক বিবেচনা করে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং দেখার বিষয়।