উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
তাঁর কাছে রাজা-রাজড়াদের আমলের কলম যেমন সংগ্রহে রয়েছে, তেমনি আবার এমন কলমও রয়েছে যার ওজন ২৫০ গ্রাম। রয়েছে বহুমূল্য বেশ কিছু কলমও। খালি কলম সংগ্রহ করাই নয়। এখনও সুযোগ পেলেই ঝরনা কলম দিয়ে লেখালেখিও করেন তিনি।
সুবীরবাবু পেশায় গ্রন্থাগারিক। পুরাতন মালদহের বাণী ভবন লাইব্রেরির সঙ্গে যুক্ত। শহরের গ্রীণপার্ক এলাকার এই বাসিন্দা জানান, তাঁর সংগ্রহে থাকা ফাউন্টেন পেনগুলি অত্যন্ত মূল্যবান। বেশিরভাগ কলমই অনেক পুরনো দিনের। বহু বছর আগে দোয়াতের কালিতে ডুবিয়ে নথি লেখার জন্য ব্যবহৃত খাগের কলম যেমন রয়েছে তাঁর সংগ্রহে, তেমনই রয়েছে অত্যন্ত ভারী ফাউন্টেন পেনও। চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দামের ফাউন্টেন পেনও জোগাড় করেছেন ছাপোষা এই গ্রন্থাগারিক। আর তা করেছেন নিতান্তই কলমের প্রতি তাঁর ভালোবাসা থেকেই।সুবীরবাবু জানান, প্রতিটি কলমই সচল অবস্থায় রয়েছে। তার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রমও করতে হয় তাঁকে। ফাউন্টেন পেনগুলিকে নিয়মিত পরিস্কার করে, কালি ভরে সেগুলিকে সচল রাখেন। পাশাপাশি লেখালিখির কাজেও নিয়মিত ব্যবহার করতে হয় সেগুলিকে।
সুবীরবাবু বলেন, ২০১২ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে এই কলম দিবস পালিত হয়ে আসছে। কম্পিউটার, কী – বোর্ডের যুগে এখন কলমের ব্যবহার ক্রমশ কমছে। মনের ভাব প্রকাশের এই মাধ্যমটিকে বাঁচিয়ে রাখতেই এই আন্তর্জাতিক ফাউন্টেন পেন ডে’র সূচনা । মনের মতো কলম কেনা, প্রিয়জন বা পরিচিতদের ঝর্ণা কলম উপহার দেওয়ার মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপন করে থাকেন সারা দুনিয়ার কলমপ্রেমীরা।
শুধু তাই নয়, বিশ্বের নামীদামী ফাউন্টেন পেন নির্মাতা সংস্থাগুলিও এদিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় সপ্তাহ ব্যাপী বিভিন্ন ধরণের ঝর্ণা কলম কেনার ক্ষেত্রে মোটা ছাড়ও দিয়ে থাকে। ফলে অনেকেই পছন্দের ফাউন্টেন পেন কিনে ফেলেন এই সুযোগে। এই সুযোগে তাই নিজের পরিচিত জনদেরও ফাউন্টেন পেন কেনার জন্য উৎসাহিত করছেন সুবীরবাবু নিজের উদ্যোগেই।
কেন জনপ্রিয়তা হারিয়েছে এধরনের কলম? মালদহ শিক্ষক শিক্ষণ কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা শিক্ষাবিদ শক্তিপদ পাত্র বলেন, বর্তমান যুগের ডিজিটাল টাইপিং ক্রমশ পেছনে ঠেলে দিচ্ছে কালি-কলমের ব্যবহার। ওই গ্রন্থাগারিকের ঝরণা-কলম বাঁচিয়ে রাখার এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সপ্তাহে অন্তত একদিন কলম ব্যবহারের পক্ষেও জোরালো সওয়াল করেছেন শক্তিপদবাবু।
ফাউন্টেন পেনের গুণগান গেয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ডিন, অধ্যাপক বিকাশ রায়। তিনি বলেন, ঝরনা কলমে লেখার সুখই আলাদা। অল্পবয়স থেকে ওই কলমে লিখলে হস্তাক্ষর সুন্দর হয়। নিজস্ব চিত্র