উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
মাস চারেক আগে তিনি নিরুদ্দেশ হন। কোনওভাবে চলে এসেছেন কলকাতা বিমানবন্দর এলাকায়। দুই জায়গার মধ্যে দূরত্ব প্রায় ১২০০ কিলোমিটার। বিধাননগর পুলিস কমিশনারেটের অন্তর্গত এয়ারপোর্ট থানা এবং হ্যাম রেডিও-র চেষ্টায় তাঁর সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জোগাড় করা সম্ভব হয়েছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এয়ারপোর্ট এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় ওই মহিলাকে। দেখে সন্দেহ হয় এয়ারপোর্ট থানার কর্তব্যরত পুলিস কর্মীদের। পুলিস যখন তাঁকে উদ্ধার করে তখন তিনি নিজের সম্পর্কে কোনও তথ্যই সঠিকভাবে দিতে পারেননি।পুলিসকর্মীরা তাঁকে রাজারহাটের একটি হোম কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় হ্যাম রেডিও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। শুরু হয় মহিলা সম্পর্কে যাবতীয় খোঁজখবর। হ্যাম রেডিও কর্তৃপক্ষ নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জানতে পারেন মহিলা বিবাহিত এবং তাঁর বাপের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। তাঁর বাবার নাম বিজয় হেলা। ১৬ বছর হয়ে গিয়েছে তিনি নিরুদ্দেশ। এই তথ্য সামনে আসার পর মহিলার আত্মীয়-স্বজনের খোঁজখবর পাওয়া আরও জটিল হয়ে পড়ে। তখনও নিজের নাম বলতে পারেননি মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা। মাসখানেক কেটে যায় এ ভাবেই। তখনও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কোনও খবর জানা যায়নি। তিনি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করছেন না দেখে হোমের সুপার তনুশ্রী দেবনাথ মহিলাকে প্রশ্ন করেন। জবাবে ওই মহিলা জানান, তিনি গর্ভবতী। নিজের মাতৃত্বের কথাবার্তার সূত্র ধরে মহিলার মায়ের নাম মনে পড়ে যায়। মহিলা হোম কর্তৃপক্ষকে বলেন, তাঁর মায়ের নাম অগ্নি হেলা। একইসঙ্গে নিজের নাম বলেন, পার্বতী দাস।
এই তথ্য হোমের তরফে জানানো হয় হ্যাম রেডিওর সম্পাদক, অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসকে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, মহিলার ছবি দেখানো হয় ক্যানিংবাসী তাঁর মাকে। কথাবার্তার মাধ্যমে মহিলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের যোগসুত্র পাওয়া যায়। তখনই উত্তরপ্রদেশের হ্যাম রেডিওর কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মহিলার ছবি দিয়ে খোঁজ চালিয়ে জানা যায়, তাঁর স্বামীর নাম সুধীর কুমার। স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার পর ২২ জুন সীতাপুরেরর স্থানীয় থানায় নিরুদ্দেশ সংক্রান্ত ডায়েরি করেন তিনি। হ্যাম রেডিও কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় সুধীর কুমার জানান, তাঁর স্ত্রীর নাম সরস্বতী। নিরুদ্দেশ হওয়ার দিনকয়েক আগে অত্যধিক মাত্রায় অসংলগ্ন হয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। সাক্ষাৎকারে অম্বরীশবাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সীতাপুরের পুলিস সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মানসিক ভারসাম্যহীন এবং সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দিন কয়েকের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশ থেকে রওনা দেবেন সুধীরবাবু।
সরকারিভাবে পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করার পরই হোমের তরফে সরস্বতীকে তুলে দেওয়া হবে তাঁর স্বামীর হাতে। হোম কর্তৃপক্ষের সুপারের অনুরোধ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধাননগর পুলিসের সহায়তা একান্তভাবে কাম্য। স্থানীয় পুলিসকর্মীদের সাহায্যে মানসিক ভারসাম্যহীন সরস্বতীকে তাঁর স্বামীর হাতে তুলে দেওয়া আরও সুবিধাজনক হবে। পার্বতী দাস। -নিজস্ব চিত্র