নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
যাই হোক, ছাব্বিশ বছর বয়সে হাইসেনবার্গ যখন তত্ত্বটি আবিষ্কার করলেন তখন তাঁর বন্ধুরাই এই তত্ত্বের সাপেক্ষে তাঁর সঙ্গে মজা করতেন।
একবার আইনস্টাইন গিয়েছিলেন এক পানশালায়। পরিবেশককে বললেন, ‘আমাদের জন্য দুটো বিয়ার নিয়ে আসুন।’ পরিবেশক তা অবাক। সে বলল, আপনি তো একাই রয়েছেন দেখছি, ‘আমাদের’ বলছেন কেন তাহলে? আইনস্টাইন তখন বললেন, ‘আসলে দ্বিতীয়টা আমার বন্ধু হাইসেনবার্গের জন্য আসলে তিনি তো অনিশ্চয়তা নীতির স্রষ্টা তাই তিনি আমার সঙ্গে আছেন আবার নেইও।’
আরেকবার হাইসেনবার্গের ভীষণ তাড়া। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে হবে, দেরি হয়ে গিয়েছে। সে সময় তিনি বস্টনে। বস্টনের রাস্তায় ভীষণ জোরে গাড়ি চালিয়ে ছুটছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। হঠাৎ তিনি খেয়াল করলেন লালবাতি লাগানো পুলিসের গাড়ি তাঁর গাড়ির পিছনে ছুটে আসছে। অগত্যা তাঁকে গাড়ি থামিয়ে নামতে হল। পুলিস অফিসার তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি জানেন, আপনি কত জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন?’
হাইসেনবার্গ তখন মজা করে বললেন, ‘আমার বেগ তো আমি জানি না, আর বেগ সম্পর্কে যখন অনিশ্চিত তখন আমি নিশ্চিত যে আমি কোথায় আছি।’ পুলিস অফিসার তখন তাঁকে বললেন আমি মেপে দেখেছি আপনি প্রায় ঘণ্টায় একশো পাঁচ মাইল বেগের উপর গাড়ি চালাচ্ছিলেন। হাইসেনবার্গ তখন চারপাশ ভালো করে তাকিয়ে নিয়ে বললেন, ‘সেকি! তাহলে আমি এখন কোথায় আছি?’
সত্যি বলতে কি হাইসেনবার্গের এই তত্ত্বটি এতটাই বহুল প্রচলিত ছিল যে ১৯২৭ সালে তত্ত্বটি আবিষ্কারের পর পর মিউনিখে একটা স্লোগান প্রচারিত হয়ে গিয়েছিল, ‘হাইসেনবার্গ হয়তো এখন এখানেই রয়েছেন।’
একজন পদার্থবিদ হয়েও হাইসেনবার্গ একজন ভালো পিয়ানো বাদক ছিলেন। এক পিয়ানো কনসার্টেই তিনি প্রেমে পড়েন এলিজাবেথ শুমাখারের। যাঁকে ১৯৩৭ সালে তিনি বিয়ে করেন। তবে, জীবনের বেশ কিছুটা অংশ তাঁর নিজের আবিষ্কৃত তত্ত্বের মতোই অনিশ্চিত ছিল। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মতো, তিনি নিজের দেশ জার্মানি ছেড়ে যাননি। আমেরিকা যেমন সে সময় পরমাণু বোমা তৈরির জন্য ম্যানহাটন প্রজেক্ট চালাচ্ছিল, জার্মানিতেও হিটলার একই কাজের জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন হাইসেনবার্গকে। এই কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পতনের পর ব্রিটিশ সরকার তাঁকে বন্দি করে। পরবর্তীকালে অবশ্য তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।