নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
কী এই গেম: এটি একটি সিঙ্গল প্লেয়ার গেম। চোখ ধাঁধানো গ্রাফিক্স ও অ্যাডভেঞ্চারে মোড়া ১০টি মিশন রয়েছে এখানে। তবে, মিশনে নামার আগে অবশ্য ট্রেনিং নেওয়ারও ব্যবস্থা আছে। টেক-অফ, এয়ার কন্ট্রোল, ক্যামেরা, ল্যান্ডিং, অস্ত্র ব্যবহার, লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার মতো একাধিক বিষয় এখান থেকেই অভ্যাস করে নেওয়া যাবে।
প্রস্তুতকারক সংস্থা: গেমটি তৈরি করেছে ‘থেরাই ইন্টারেক্টিভ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে দিল্লির একটি সংস্থা। এরা মূলত মিলিটারি কমব্যাট গেমস ডেভেলপ করে। ভারতীয় বায়ুসেনার প্রথম মোবাইল গেম ‘গার্ডিয়ান অব স্কাই’ এরাই তৈরি করেছিল।
বিশেষত্ব: শুরুতেই তিনটি পৃথক মোড রয়েছে গেমটিতে। ট্রেনিং, সিঙ্গল প্লেয়ার এবং ফ্রি ফ্লাইট। ট্রেনিং শেষ করার পর আপনার জন্য অপেক্ষা করবে ১০টি আলাদা মিশন। এগুলি সহজ থেকে ধীরে ধীরে জটিল হয়েছে। মিশনগুলিতে যুদ্ধবিমান ওড়ানো বা শত্রু পক্ষকে আঘাত হানার বিষয়টি তো রয়েছেই। পাশাপাশি, বায়ুসেনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন কমব্যাট ভেহিকল চালাতে এবং উদ্ধার কাজেও হাত লাগাতে হবে আপনাকে। মিশনগুলির মধ্যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, এয়ার ডিফেন্স অপারেশন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো বিভিন্ন স্টেজ রয়েছে।
যুদ্ধবিমান ও মিসাইল: মিশনের প্রতিটি ধাপে মিরাজ, অ্যাপাচি, সুখোই ও রাফালের মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা যাবে। এতে রয়েছে গাইডেড মিসাইল, লেজার টেকনলজি, পিছিনে ধাওয়া করে আসা মিসাইলকে বোকা বানানোর প্রযুক্তিও। ভারতীয় বায়ুসেনা পারফরম্যান্সের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করে না। এই গেমের ক্ষেত্রেও সেই বিষয়টিকেই প্রাধান্য পেয়েছে। তাই, একটি মিশনে আপনি যতক্ষণ না পর্যন্ত তিনটি স্টার পাচ্ছেন, ততক্ষণ পরের মিশনে যেতে পারবেন না।
আকর্ষণ অভিনন্দন: এই গেমের অন্যতম আকর্ষণ হল বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের মতো এক চরিত্রের উপস্থিতি। গেমের ডিফল্ট সেটিংসে রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার ওই বীর যোদ্ধার মুখ ও নাম। এখানে, আপনি মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরা অন করে নিজের মুখ এবং পছন্দসই নাম ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু, এই মুহূর্তে সেটা না করাই ভালো। কারণ, এই ফিচার্সটি আপনাকে বিশেষ একটা খুশি করতে পারবে না।
লুক অ্যান্ড ফিল: গেমটির হোমস্ক্রিনের লেআউট বেশ আকর্ষণীয়। শুরুটাও থ্রিলিং। মাল্টি অ্যাঙ্গেল ক্যামেরার সুবিধাও রয়েছে। কিন্তু, কন্ট্রোলে কিছু খামতি থেকে গেছে। সাউন্ড কোয়ালিটিতে অন্যান্য কমব্যাট গেমের তুলনায় খানিকটা পিছিয়ে। তবে, গ্রাফিক্স বেশ ভালো। সেটিংসে গিয়ে আপনি নিজের মতো করে একে কাস্টমাইজডও করতে পারবেন। বেসিক অ্যান্ড্রয়েড ফোনেও স্বাচ্ছ্যন্দে গেমটি খেলা যাবে। যেটুকু খামতি রয়েছে, পরবর্তী আপডেটে ডেভেলপাররা সেগুলি মিটিয়ে ফেলবেন বলেই আশা করা যায়। পাশাপাশি, গেমটি ইনস্টল করলে সেখানে বায়ুসেনা সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যও মিলবে। হোমস্ক্রিনের বাঁদিকে একেবারে নীচে তিনটি অপশন রয়েছে। সেখান থেকে বায়ুসেনায় চাকরি এবং বায়ুসেনা সম্পর্কে জানার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে।
কোথায় মিলবে: গুগল প্লে স্টোর এবং আইওএস প্ল্যাটফর্ম থেকে সহজেই গেমটি ডাউনলোড করা যাবে। অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে ট্রেনিং সেশনের জন্য প্রথমে কোনও লগ ইন করার দরকার পরে না। তবে, পরবর্তী ধাপে অতিরিক্ত কিছু ফিচার্সের জন্য আপনাকে ইমেল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিতে হবে। আপাতত এটি সিঙ্গল প্লেয়ার গেম। অক্টোবর মাসেই ‘ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স: দ্য কাট অ্যাবভ’-এর মাল্টি প্লেয়ার ভার্সন বাজারে আসতে চলেছে বলে খবর।
গেমের নেপথ্যে: দিল্লিতে এই থ্রি-ডি গেমটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বায়ুসেনা প্রধান বি এস ধানুয়া। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হঠাত্ করে মোবাইল গেম বাজারে আনার কথা কেন ভাবল বায়ুসেনা? জবাবে ধানুয়া বলেন, এই গেমের মধ্য দিয়ে যুব সমাজ আরও ভালোভাবে বায়ুসেনা সম্পর্কে জানতে পারবে। পাশাপাশি, গেমের প্রতিটি স্টেজে যে অ্যাডভেঞ্চার রয়েছে, তাতে তারা ব্যাপকভাবে অনুরক্ত হবেন। এবং ভবিষ্যতে বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তারা আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে।
প্রতিযোগী: কিন্তু, সারা দেশ যখন পাবজিতে ডুবে রয়েছে, সেই সময় কতটা দাগ কাটতে পারবে এই গেম? বাজার চলতি অন্যান্য গেমকে সংখ্যার বিচারে ‘ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স: দ্য কাট অ্যাবভ’ যে ভালোই টেক্কা দিয়েছে, তা ডাউনলোড সংখ্যাতেই পরিষ্কার। বাজারে এই মুহূর্তে বেশ কিছু ফ্লাইট সিমুলেশন গেম রয়েছে। এর মধ্যে ইনফাইনাইট ফ্লাইট সিমুলেশন, এয়ার নেভি ফ্লাইট, ফ্লাইট পাইলট সিমুলেশন, ব্যাটল কপ্টার সিমুলেশন, এফ ১৮ কেরিয়ার ল্যান্ডিং অত্যন্ত পরিচিত নাম।
অতঃপর: একটা প্রশ্ন উঠতেই পারে, মর্ডান ওয়ারপ্লেন বা স্টার কমব্যাটের মতো অন্যান্য প্লেন কমব্যাট গেমকে কি টেক্কা দিতে পারবে ‘ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স: দ্য কাট অ্যাবভ’? এটা নিয়ে কিন্তু ধোঁয়াশা আছে। তবে, এই সব নিয়ে চিন্তা না করে বায়ুসেনার এই গেম খেলেই দেখতে পারেন। দিনের শেষে হতাশ হবেন না বলেই মনে হয়।