নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: কোচবিহারে রসিকবিল জলাভূমির বার্ষিক জলপক্ষী গণনার কাজ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি থেকে এই কাজ শুরু হয়েছিল। তিনদিনের গণনা শেষে বনদপ্তর জানিয়েছে, গতবছরের তুলনায় এবার রসিকবিলে পরিযায়ী ও স্থানীয় পাখির সংখ্যা বেড়েছে। বেশকিছু পরিযায়ী পাখি এসেছে, যেগুলি আগে এখানে সেভাবে আসত না। এখানকার জলাভূমির স্বাস্থ্য ভালো রয়েছে বলেই এসব পাখি এখানে আসছে। তবে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বাড়লেও এখানে কিছু সমস্যা রয়েছে। জলাভূমি পার্শ্বস্থ এলাকায় বীজতলা নেট দিয়ে ঘিরে দেওয়া, যথেচ্ছ মাছ ধরা, কচুরিপানা প্রভৃতি কারণে সমস্যার হচ্ছে। তাই বনদপ্তরের দাবি, শুধুমাত্র বনদপ্তর সচেতন হলেই এসব সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। 
কোচবিহারের ডিএফও সঞ্জিতকুমার সাহা বলেন, রসিকবিলে জলাভূমির পাখি গণনার কাজ শেষ হয়েছে। গতবারের তুলনায় এবার পাখি বেশি এসেছে। সংলগ্ন এলাকায় কিছু সমস্যা আছে।  মানুষ সচেতন না হলে আমরা একা কিছু করতে পারব না। 
রসিকবিলে ১৭৮ হেক্টর এলাকায় জলাভূমি রয়েছে। এখানেই প্রতিবছর নানা প্রজাতির পাখি আসে। রসিকবিল ২০১৮ সালে জাতীয় জলাভূমির তালিকায় স্থান পায়। এবার এখানে ৫০টি প্রজাতির প্রায় ৫০০০ পাখি এসেছে। গতবছর এখানে প্রায় ৪৫০০ পাখি এসেছিল। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার এখানে পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে নর্দান পিনটেল, রেড কেসটেড পোচার, বিরল প্রজাতির ফ্যালকেটেড ডাক, ওরিয়েন্টাল ডারটার, ফেরুগিনাস পোচার্ড, সার্স স্যান্ডপাইপার, অসপ্রে, ফিস ঈগল, গ্রে হেডেট ল্যাপ উইং সহ আরও নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এখানে এসেছে। এছাড়াও স্থানীয় পাখির সংখ্যাও বেশ ভালো সংখ্যায় রয়েছে। এরা স্থায়ীভাবেই এখানে থাকে। এর মধ্যে লেসার হুইলিং ডাক বা সরাল, মাছ রাঙা, পানকৌরি সহ অন্যান্য পাখি আছে। 
গত কয়েকদিন ধরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ১০ জন সদস্য ও বনদপ্তরের ১০ জন সদস্য মিলে রসিকবিলের বিভিন্ন এলাকায় ভাগ হয়ে দূরবীণ ও ক্যামেরার সাহায্যে এসব পাখিদের পর্যবেক্ষণ ও গণনার কাজ চালিয়েছেন। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরল প্রজাতির ফ্যালকেটেড ডাক এবার এখানে দু’টি মাত্র দেখা গিয়েছে। এছাড়াও সার্স স্যান্ডপাইপার গোত্রের পরিযায়ী পাখি ২৫টি দেখা গিয়েছে। যা গতবছর মাত্র চার-পাঁচটি দেখা গিয়েছিল। জলভূমি ভালো থাকলেই এই প্রজাতির পাখিরা আসে।