নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
ভাগ্যিস, শিয়রে ভোট! ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট নিতে হবে বিদায়ী এমএলএদের। তা না হলে ফের প্রার্থী হওয়ার ছাড়পত্র মিলবে না। ফলে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই ঘরভাড়া মেটানোর লাইন পড়েছে পার্কস্ট্রিট লাগোয়া কিড স্ট্রিটে। ইতিমধ্যেই বহু বিধায়ক বকেয়া মিটিয়ে দিয়েছেন। শনিবার পর্যন্ত সংখ্যাটা চল্লিশের কাছাকাছি। বিধানসভা সচিবালয়ের আশা, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগে বিদায়ী বিধায়কদের সকলেই ঘরভাড়া মিটিয়ে দেবেন। কারণ, ভোট ঘোষণা হলে যাবতীয় বকেয়া মেটানো কিংবা বিধানসভার লাইব্রেরির বই ফেরত দেওয়াই দস্তুর। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, ‘হস্টেলের ঘর ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে বিদায়ী বিধায়কদের। ভোটের পর ঘরগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বিজয়ীদের জন্য বরাদ্দ করতে হয়।’
কলকাতার অভিজাত এলাকা কিড স্ট্রিট। সেখানেই ২০১টি ঘর বিশিষ্ট বিধায়ক আবাসন বা এমএলএ হস্টেল। মূলত কলকাতা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকার বিধায়কদের থাকার জন্য বিলাসবহুল এই আবাসনের ব্যবস্থা। প্রতিটি ঘর মোটামুটি ১০/১৮ ফুটের। রয়েছে দু’টি বেড। এসি, টিভি ফ্রিজ সহ বিলাসিতার ঠাসা আয়োজন। অথচ, প্রতিটি বেডের ভাড়া মাত্র ৫০ পয়সা! অর্থাৎ দৈনিক ঘরভাড়া মাত্র এক টাকা! বছরে মাত্র ৩৬৫ টাকা। তা হলে পাঁচ বছরে প্রতি বিধায়কের বকেয়া দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৮২৬ টাকা করে। অনেকে আবার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-পরিজনদের জন্য অতিরিক্ত ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন। স্বভাবতই তাঁদের টাকার অঙ্ক বেড়েছে। বহু বিধায়কের নামে স্যুট, এসি ডিলাক্স রুমও বুক করা হয়েছিল। তাঁরাও সেই টাকা আগে পরিশোধ করেননি। তাঁদেরকে এবার যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে বিধানসভার সচিবালয় থেকে ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট নিতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হল, মাইনে ও ভাতা মিলিয়ে একজন বিধায়কের মাসিক আয় প্রায় ৮১ হাজার ৮৭০ টাকা। অথচ, সামান্য ক’টা টাকা ঘরভাড়া গুণতে কেন তাঁরা দীর্ঘ পাঁচ বছর পার করেন? এর কোনও সদুত্তর সচিবালয়ের তরফে মেলেনি। তবে, কয়েকজন এমএলএ ঘরোয়া আলোচনায় বলছিলেন, ‘আসলে, দেব দেব করে আর দেওয়া হয়ে ওঠে না। আমাদের একটু গা-ছাড়া মনোভাবই বকেয়া পড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।’ বিধায়ক তথা হাউস কমিটির বিদায়ী চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘ঘরভাড়ার অঙ্কটা নিতান্তই কম। তাই অনেকেই একবারে টাকা দিতে চান। অনেকে আবার মাঝপথেও দিয়ে দেন। তবে ভোট ঘোষণার পর প্রার্থী হতে গেলে বকেয়া মেটানো বাধ্যতামূলক।’
ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্য হস্টেলের নিজস্ব ঘর ছাড়াও অতিরিক্ত ঘর ভাড়ায় নিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘সবমিলিয়ে আমার ১২ হাজার টাকা বকেয়া ছিল। পুরোটাই পরিশোধ করে দিয়েছি।’ বাঁকুড়ার ছাতনার বিধায়ক ধীরেন্দ্রনাথ লায়েক বলেন, ‘ভোটে প্রার্থী ঠিক করবে দল। আমায় প্রার্থী করবে কিনা, সেটা দলের ব্যাপার। তবে হস্টেলের ঘরভাড়া বাবদ বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়েছি।’