ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
উচ্চবিত্ত সমাজের প্রতিভূ অনল ও নীরা রায়। অসুখী এক দম্পতি। আধুনিকতার আড়ালে স্বেচ্ছাচারিতা, শারীরিক মোহ, মিথ্যাচারিতা, ক্রমশ দূরে ঠেলে দিয়েছে দুজনকে। স্বামী অনলের কাছে ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে যায় নীরার অসংলগ্ন জীবনযাত্রা। ঘৃণায়, রাগে অনল বুঝতে পারে না কি করা উচিত। ঠিক এই সময়েই খুন হয় নীরা।
দাম্ভিক, অহংকারী, স্বেচ্ছাচারী নীরার সবচেয়ে বড় জোর, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি, অর্থ। যে সম্পত্তির কিছু অংশের হকদার, তার বোনের ছেলে, রজত। রজতের প্রেমিকা শীলা, অন্তসত্ত্বা। তাদের এই সম্পর্ক মেনে নেয় না নীরা। রজত, শীলাকে বিয়ে করে আলাদা সংসার পাতার জন্য নীরার কাছে তার প্রাপ্য চায়। নীরা, রাজি হয় না। ফলে রজত রেগে ওঠে। দুজনের মধ্যে তুমুল বিরোধ বাধে। রজত বলে সে জানে, কি করে তার প্রাপ্য আদায় করে নিতে হয়। এমতাবস্থায় নীরা খুন হয়।
খুনের অস্ত্র হিসেবে খুনী, নীরার হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে। যেটা আগের দিন চুল শুকোতে ব্যবহার করেছিল রজতের প্রেমিকা শীলা। স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহের তালিকায় চলে আসে অনল, রজত এবং শীলা। কে খুন করল নীরাকে? এই তিনজনের মধ্যে কেউ? না কি চতুর্থ কোনও ব্যক্তি? সেটা বলা যাবে না নাটকের স্বার্থে। সুতরাং সেই আলোচনায় না গিয়ে অন্য কথা বলি। প্রথমেই যেটা নজর টানে, সেটা হল নিখুঁত মঞ্চসজ্জা। চমৎকার একটা ড্রয়িংরুম, যেটা কখন যেন চরিত্র হয়ে ওঠে, রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ধন্যবাদ সন্দীপ সুমন ভট্টাচার্য এবং অজিত রায়কে, যারা মঞ্চ নিয়ে এত বাস্তবোচিত চিন্তাভাবনা করেছেন। এই ধরনের থ্রিলারধর্মী নাটকের মূল ভিত্তি হল বলিষ্ঠ অভিনয়। যা এই নাটকের প্রত্যেক শিল্পী করেছেন। অনবদ্য, অরিন্দম গুহ (অনল), সম্রাট মুখোপাধ্যায় (রজত), মৌমিতা দাস(শীলা) এবং নীরা ও শোভারূপী তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায় ঠাকুর। চমৎকার সঙ্গত করেছেন দীপক দাস, অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সোমা পাত্র। সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের টানটান পরিচালনা থ্রিলারের মজাকে দ্বিগুণ করে তোলে। রহস্যধর্মী নাটকের আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আলোর প্রক্ষেপণ। এক্ষেত্রে পুরোটা না হলেও অনেকটাই সফল জয়ন্ত দাস।
সম্প্রতি নান্দীরঙ্গ নাট্যসংস্থার নিবেদনে তপন থিয়েটারে ৫ দিন ব্যাপী এক নাট্যোৎসব ‘নাট্যমেলা ২০২০’ অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী প্রযোজনা ছিল নান্দীরঙ্গ’র ‘আততায়ী’।