উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এই পুজোর জন্য খুঁটিনাটি নিয়ম রয়েছে অনেক। সেসব নিয়ম মতে, লক্ষ্মী পূর্ণিমার দিন থেকেই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মায়ের প্রতিমা বানানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিমা গড়ার জন্য নির্দিষ্ট মৃৎশিল্পী পরিবার রয়েছে। তাঁরাই বংশ পরম্পরায় প্রতিমা গড়েন। প্রতিমা বানানোর সময়ে সেই শিল্পী নিরামিষ ভোজন করেন। কালীপুজোর অমাবস্যায় কাঁধে করে মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় সেই প্রতিমা। কালীপুজোর রাতে মন্দিরে পুজো দিতে আসেন মালদহ জেলার পাশাপাশি প্রতিবেশী দুই দিনাজপুর জেলার ভক্তরাও।
উদ্যোক্তাদের দাবি, কালীপুজোর রাতে এক হাজারেরও বেশি মানতের পাঁঠা এখানে বলি দেওয়া হয়। দেবী খুব জাগ্রত। তাঁকে বেশিক্ষণ রাখা হয় না। পুজোর পরের দিন অমাবস্যা ছাড়ার আগেই কাঁধে করে প্রতিমাকে পাশের দিঘিতে বিসর্জন দেওয়া হয়। নির্মাণের স্থান থেকে মন্দিরে নিয়ে আসা ও মন্দির থেকে বিসর্জন দিতে নিয়ে যাওয়ার সময় কোনওরকম যানবাহন ব্যবহারের রীতি নেই।
বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন অরিন্দম নন্দী চৌধুরীদের হাতে। তাঁরা ওই এলাকার জমিদার পরিবারের বর্তমান সদস্য। তাঁরা সপরিবারে বর্ধমানে থাকেন। শুধু শ্যামাপুজোর সময় তাঁরা এখানে আসেন। তাঁদের উদ্যোগেই গত ১১৪ বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জমিদার পরিবার পুজোর দায়িত্ব নেওয়ার আরও শ’খানেক বছর আগে থেকেই ওই পুজো হয়ে আসছে।
জমিদার পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও পুজোর আয়োজনে হাত লাগান। গাজোল শ্যামাপুজোর দায়িত্বে থাকা ওই নন্দী চৌধুরী পরিবারের কর্মচারী প্রেমজিৎ কুমার ঝাঁ বলেন, আমাদের হাতে এই পুজোর দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। আমরা শুধু সেগুলি পালন করি। নিয়ম মেনে উপকরণ জোগাড় করে দিই ও ব্যবস্থা করে দিই। প্রতিমা থেকে পুরোহিত সহ পুজোর সব খুঁটিনাটি খরচ তাঁরাই দেন। অমাবস্যার রাতেই প্রতিমার চক্ষুদান থেকে শুরু করে রং, সব করা হয়। গাজোলের পাশাপাশি জেলার দুই শহর, চাঁচল, বামনগোলা, দুই দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, বালুরঘাটের ভক্তরাও এখানে আসেন। মায়ের কাছে মানত করে যান।
গ্রামের বাসিন্দা কিরণ দাস বলেন, এটি বহু পুরোনো পুজো। আগে এলাকা ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল। তার মধ্যেই আনুমানিক ২০০ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়। বিভিন্ন রোগ, মহামারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় বাসিন্দারাই এই পুজো শুরু করেন। পরে জমিদার পরিবার এই পুজোর দায়িত্ব নেন। এখনও তাঁরাই দায়িত্বে রয়েছেন। পরবর্তীতে মন্দিরও তৈরি করেছেন জমিদারেরা। এছাড়া আমরা, গ্রামবাসী মিলে একটি অমাবস্যা কমিটি গড়েছি। আমরা প্রতি অমাবস্যাতেই মাকে পুজো দেওয়ার আয়োজন করে থাকি। ফাইল চিত্র