কর্মে কিছুটা শুভ। খেলাধূলায় বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন। মানসিক দিকটি বিক্ষিপ্ত থাকবে। ... বিশদ
এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টে অপরাজিত টিম ইন্ডিয়া। সেটা যেমন ইতিবাচক, তেমনই দলে আত্মতুষ্টি জাঁকিয়ে বসার আশঙ্কাও থাকছে। তাই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার আগে ক্রিকেটারদের তোতা পাখির মতো কোচ রাহুল দ্রাবিড় শুধু ম্যাচে ফোকাস রাখার কথাই বলছেন। সামান্য ভুলচুক মানেই ফের একরাশ লজ্জা নিয়ে দেশে ফেরা। ২০১৩ সালের পর যে ভারত আইসিসি’র কোনও ট্রফি জিততে পারেনি! চূড়ান্ত পর্যায়ে বার বার মুখ থুবড়ে পড়া দেখে অনেকেই টিম ইন্ডিয়া’কে চোকার্স বলতে শুরু করেছেন। এই অপবাদ ঘোচানোর দুর্দান্ত সুযোগ এবার সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়াদের সামনে।
বিরাট কোহলির অফ ফর্ম ছাড়া ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স মোটামুটি সন্তোষজনক। আসলে টি-২০ ফরম্যাটে ব্যক্তিগত নৈপুণ্য কখনও কখনও দলের সাফল্য ঠিক করে দেয়। যেমনটা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে। রোহিত শর্মার ঝোড়ো ৯২ রানই ফারাক গড়ে দিয়েছিল দুই দলের মধ্যে। হিটম্যানের এই ফর্ম বজায় থাকলে কপালে দুঃখ রয়েছে ইংল্যান্ডেরও। সেই সঙ্গে যদি কোহলি ছন্দে ফেরেন তাহলে তো সোনায় সোহাগা। বিরাট বড় মঞ্চের নায়ক। তিনি জানেন, কীভাবে পালে হাওয়া টানতে হয়। সেমি-ফাইনালের আগে ভুলত্রুটি শুধরে নিতে অনুশীলনে নিজেকে নিংড়ে দিয়েছেন। ‘ল অব অ্যাভারেজ’ মানলে সেমি-ফাইনাল হয়ে উঠতে পারে কোহলিময়।
এবারের বিশ্বকাপে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের অভিমুখ বদলে গিয়েছে ঋষভ পন্থের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে। গুরুতর চোট কাটিয়ে আইপিএলে ফেরা এবং বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়ে সেরাটা মেলা ধরা সতীর্থদেরও উদ্বুদ্ধ করেছে সমানভাবে। সূর্যকুমার যাদব চাপের মুখে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করছেন। হার্দিক পান্ডিয়ার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে। তবে শিবম দুবেকে বয়ে বেড়ানোর কোনও মানে নেই। বরং যশস্বী জয়সওয়ালকে সুযোগ দেওয়া উচিত।
শুধু প্রতিপক্ষ নয়, ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বাদ সাধতে পারে আবহাওয়া। নেই কোনও রিজার্ভ ডে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টি নামে। তবে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। তবে খেলা ভেস্তে গেলে গ্রুপের এক নম্বর দল হিসেবে ফাইনালে উঠবে রোহিত ব্রিগেডই। জর্জটাউনের পিচ নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে দুই শিবিরে। এখানে শেষ ম্যাচ হয়েছিল ৮ জুন। স্থানীয় কিউরেটরের বার্তা, পিচে বাউন্স বেশি থাকবে না। বরং বল ঘুরবে। সেক্ষেত্রে দুই দলের স্পিনারদের হাতেই থাকবে ম্যাচের চাবিকাঠি। একদিকে, কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেল ও রবীন্দ্র জাদেজা। অন্যদিকে, আদিল রশিদ, মঈন আলি, লিভিংস্টোন। ফলে লড়াই জমবে।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বেশ শক্তিশালী। তবে শুরুতে সল্টকে দ্রুত ফেরাতে পারলে চাপে পড়ে যাবেন বাটলার, বেয়ারস্টোরা। সেই কাজটা করতে হবে যশপ্রীত বুমরাহ কিংবা অর্শদীপ সিংকে। পাওয়ার প্লে’তে জোরালো ঝাঁকুনি দিতে পারলে তা সমাল দেওয়ার মতো মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান নেই ইংল্যান্ড শিবিরে। ফলে কঠিন হবে হ্যারি ব্রুক, স্যাম কারানদের কাজ। দু’বছর আগে ক্রিস জর্ডন ধস নামিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটিংয়ে। এই ম্যাচেও আর্চারের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফের তিনি ঝলক দেখানোর চেষ্টা করবেন।
স্টার স্পোর্টসে সরাসরি সম্প্রচার।
সেমি-ফাইনালের
কুশীলবরা মোট সাক্ষাৎ ২৩
ভারত জয়ী ১২, ইংল্যান্ড জয়ী ১১
রোহিত শর্মা
শুরুটা খুব একটা ভালো না হলেও সুপার এইটে চেনা ছন্দে ভারত অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর ঝোড়ো ৯২ ফারাক গড়ে দেয় দুই দলের মধ্যে। চলতি
টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ১৯১ রান, যা দলীয় সর্বাধিক।
নজরে থাকবেন
জস বাটলার
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ম্যাচের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ইংল্যান্ড অধিনায়ক এবারের টুর্নামেন্টে ৪৭.৭৫ গড়ে করেছেন ১৯১ রান। একটি হাফ-সেঞ্চুরিও রয়েছে।
যশপ্রীত বুমরাহ
বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন তারকা পেসার। তাঁর নিঁখুত ইয়র্কারের উত্তর নেই ব্যাটারদের কাছে। চলতি আসরে ৬ ম্যাচে তাঁর নামের পাশে ১১টি উইকেট। রেখেছেন কৃপণতম বোলিংয়ের (৪.০৮) দৃষ্টান্ত।
কুলদীপ যাদব
গায়ানার জর্জ টাউন স্টেডিয়ামের পিচে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে কুলদীপের ঘূর্ণি মুশকিলে ফেলবে ইংরেজ ব্যাটারদের। টি-২০ বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ
৭ উইকেট।
ফিল সল্ট
আইপিএলের সময় থেকেই দুরন্ত ফর্মে এই ইংরেজ ওপেনার। পাওয়ার প্লে’র ফায়দা তুলতে দারুণ দক্ষ। চলতি আসরে ১৮৩ রান করে ফেলেছেন। গড় ৪৫.৭৫।
আদিল রশিদ
পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন ৩৬ বছর বয়সি লেগ-স্পিনার। ৭ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৯টি উইকেট। ইকনমিও রীতিমতো ঈর্ষণীয় (৬.৭০)।