সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
শুধু কী নেতাজি, গান্ধীজি থেকে চিত্তরঞ্জন দাস এসেছিলেন এই রানিগঞ্জে। ইংরেজ আমলের অন্যতম বড় বাণিজ্য শহর রানিগঞ্জ একাধারে যেমন বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল ছিল, তেমনি এখান থেকে অর্থসাহায্যও পেতেন তাঁরা। বাঙালি, মাড়োয়ারি, মুসলিম একযোগে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। রানিগঞ্জের মাটিও বহু বীর বিপ্লবীর জন্ম দিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অগ্রণী নিবারণচন্দ্র ঘটক, দুর্গাদাস হালদার। রানিগঞ্জের সরস্বতী কর্মমন্দির ছিল বিপ্লবীদের আখড়া। স্বাধীনতা আন্দোলনে বাণিজ্য শহরের এই ভূমিকা সেভাবে কোথাও তুলে ধরা হয়নি। স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিচিহ্নগুলিকে আলাদা করে সংরক্ষণের উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। যার জেরে স্বাধীনতা আন্দোলনে রানিগঞ্জের অবদান জানেই না নতুন প্রজন্ম।
চিকিৎসক জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষ দেশের বৈপ্লবিক সময়কালে রানিগঞ্জ শহরের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান ছিলেন। বিপ্লবীদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ট যোগ ছিল। তাঁর বাড়িতে গোপনে বিপ্লবীদের আনাগোনা লেগেই থাকত। রোগী সেজেও অনেকে তাঁর কাছ চিকিৎসা করানোর অজুহাতে চলে আসতেন। তাঁর নাতি ক্ষৌণিশচন্দ্র ঘোষ বলেন, তাঁদের বাড়িতে নেতাজির সঙ্গে তাঁর দাদু খাবার খাচ্ছেন, সেই ছবিও ছিল। কিন্তু তা বাড়িতে রাখা হয়নি পুলিসি উৎপাতের ভয়ে। যে খাটে তিনি ছিলেন, তা দেখতে বহু মানুষ আসতেন। কিন্তু তা উইপোকায় খেয়ে ফেললে। নিবারণচন্দ্র ঘটক ছিলেন সিয়ারসোল রাজ হাইস্কুলের শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় কবি নজরুলের মধ্যে বৈপ্লবিক ভাবনার বীজ তিনিই বপন করেছিলেন। ইংরেজরা তাঁকে জেলে পাঠায়। তাঁর নাতি অশোক ঘটক বলেন, কাউকে দোষ দেব না। আমরাও তো তাঁদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে পারিনি। বানোয়ারিলাল ভালোটিয়া, জগন্নাথ ঝুনঝুনওয়ালা, গোবিন্দা খৈতানের মতো উদ্যোগপতিদের সঙ্গে বিপ্লবীদের সুসম্পর্কের সাক্ষী এই রানিগঞ্জ। বিপ্লবীদের দমনে এখানে কুয়ো ও ফাঁসিকাঠেরও বন্দোবস্ত করেছিল ইংরেজরা। এখানকার লেখক প্রাক্তন অধ্যাপক রামদুলাল বসু বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে রানিগঞ্জের ভূমিকা সামনেই এল না। আসানসোল হেরিটেজ রিসার্চ গ্রুপের হেমন্ত মণ্ডল, বাংলাপক্ষের সম্রাট কররা বলেন, আমরা চাই এগুলির সংরক্ষণ করা হোক। আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, আমি যত দ্রুত সম্ভব এনিয়ে যা করা সম্ভব, তা করব। রানিগঞ্জের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক ও চেয়ারম্যান রুনু দত্ত বলেন, এভাবে সত্যিই ভেবে দেখা হয়নি।