মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি পঞ্চায়েতের খাসমহল সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এক সপ্তাহ ধরে ভাঙন চলছে। শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। জমির অবস্থাও এক। তীব্র ভাঙনের জেরে গ্রাম গ্রাস করতে আসছে নদী। আতঙ্কে বাড়ির ইট খুলে উঁচু জায়গা ও আমবাগানে ঠাঁই নিচ্ছেন অসহায়রা। তার মাঝেই সরকারি ত্রাণ নিয়ে হাহাকার গ্রামে। মাথা গোঁজার জন্য ত্রিপল মিললেও শুকনো খাবার দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সাতদিন ধরে ভাত পেটে পড়েনি অনেকের। ছাতু, মুড়ি খেয়ে কাটছে অনেক পরিবারে। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার এলাকায় দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, চাঁচল মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায়, রতুয়া ১ এর বিডিও রাকেশ টোপ্পো।
এদিন বিধায়ক এলাকায় পৌঁছলে তাঁকে ঘিরে ধরে খাবারের ব্যবস্থা করার দাবি জানান দুর্গতরা। বিধায়ক সবরকম সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁদের। স্থানীয় জাহেদা বেওয়া বলেন, স্বামীর মৃত্যু হয়েছে চারবছর আগে। ভাঙনে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিন মেয়েকে নিয়ে বাগানে ত্রিপলের নীচে আশ্রয় নিয়েছি। সঙ্গের খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় চেয়ে বেড়াই।
খাসমহলের হামফুল বিবি বললেন, স্বামী দীর্ঘদিন অসুস্থ। বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বাঁধে থাকছি। পাঁচ কেজি চাল রয়েছে। শেষ হলে কী খাব জানি না।
দু’বেলা একটি করে রুটি খেয়ে কাটছে রোকেয়া বিবির। তিনি বলেন, আমাদের দুর্দশার কথা শুনে ভূতনি থেকে বোন ভুট্টার ছাতু ও আটা পাঠিয়েছে। সেসব খেয়েই দিন কাটছে।
সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ভয়াবহ ভাঙন চলছে এলাকায়। আমরা এই পরিস্থিতিতেও ভাঙন রোধের কাজ শুরু করেছি।
ভাঙনের জেরে এলাকার শতাধিক পরিবারের এভাবেই দিন কাটছে। দুর্গতদের অভিযোগ, এক সপ্তাহ ধরে ভাঙন চললেও এলাকায় প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। সেপ্রসঙ্গে ছাক্কু মণ্ডল বলেন, অসুস্থ বাবার ওষুধ কিনতে যেতে পারিনি। এখানে ঘরবাড়ি বাঁচাতে গিয়ে অনেকে জখম হচ্ছেন। তাঁদের চিকিত্সার ব্যবস্থা নেই।
চাঁচল মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায় বলেন, খাবারের জন্য এলাকায় রান্না করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। দুর্গতরা সেটা পছন্দ করেননি। তালিকা করে চিঁড়ে ও গুড় দেওয়া হচ্ছে বাড়ি বাড়ি। মেডিক্যাল টিমও দ্রুত এলাকায় পৌঁছবে।
এলাকা পরিদর্শনের পর বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় নদী ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের বরাদ্দ না পেয়ে রাজ্য সরকার সীমিত ক্ষমতায় ভাঙন আটকানোর কাজ করছে। মানুষের দুর্দশার কথা একদম ভাবছে না কেন্দ্র।
উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, আমি একাধিকবার পার্লামেন্টে ভাঙন সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা না থাকায় সমাধান হচ্ছে না।