দুর্ঘটনা আর আঘাত যোগ আছে; সতর্ক হোন। মানসিক উত্তেজনায় লাগাম দিন, বাক বিতণ্ডা এড়িয়ে চলুন। ... বিশদ
ওই মেডিক্যাল কলেজের ভেতরে কোভিড ১ ব্লকের সামনে অস্থি ও ফিজিক্যাল মেডিসিন আউটডোরে যাওয়ার ব্যস্ত পথের পাশেই ডাঁই হয়ে থাকে জঞ্জাল। যাঁরাই ওই পথ দিয়ে যান, পচা দুর্গন্ধের জন্য অজান্তেই তাঁদের হাত চলে যায় নাকে। রুমালে, কাপড়ে নাক চাপা দিয়ে চলতে হয়।
ওই জঞ্জালের তালিকায় রয়েছে মেডিক্যাল বর্জ্যও, যা আরও বিপজ্জনক। প্রতিনিয়ত এই বর্জ্য দূষণ ছড়ায়। হাসপাতালে গোটা তিনেক ভ্যাট রয়েছে বটে। তবে সাফাইকর্মীরা ওয়ার্ডের ব্যবহৃত মালপত্র নিয়ে এসে ছুড়ে দেন ভ্যাটের উপরেই। কোনওটা ভ্যাটে পড়ে, কোনওটা আবার মাটিতেই পড়ে থাকে। দিনভর তা জমতে থাকে। তখনই শুরু হয় গোরু, কুকুর, বেড়ালের টানাটানি। দিনকয়েক আগে মৃত বেড়ালের দেহ পড়ে ছিল অর্থোপেডিক আউটডোরে যাওয়ার রাস্তায়। টানা তিনদিন গন্ধ ছড়িয়ে মানুষের পায়ে পায়ে মিশে যায় মৃত বেড়ালের দেহ। বছরভর ওই পথ দিয়েই চলতে হয় প্রতিবন্ধী রোগী থেকে হাসপাতালের কর্মী, নার্স, সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসকদের।
পক্ষাঘাতে আক্রান্ত এক রোগী মঙ্গলবার ইসলামপুর থেকে এসেছিলেন ফিজিওথেরাপি করাতে। মেডিক্যাল কলেজের গেট থেকে টোটোয় চড়ে নামেন জঞ্জালের পাশে। পাঁজাকোলা করে হুইলচেয়ারে বসানোর সময় তাঁর ছেলে রশিদ শেখ বলছিলেন, উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে নামী সরকারি মেডিক্যাল কলেজের এই হাল, ভাবতেও পারছি না। সেখানেই শেষ নয়, বাবাকে নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে ঢুকতেই তাঁর নজরে পড়ল তাল তাল গোবর পড়ে। থাকবে নাই বা কেন, ওই করিডরেই তো রোগী, রোগীর পরিজন, চিকিৎসক, নার্স, হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে হাঁটছে গোটা কয়েক গোরুও। এই চিত্র প্রায় প্রতিদিনের। গোবরে পা দিয়ে পিছলে পড়েছেন অর্থোপেডিক রোগী, এমন ঘটনাও রয়েছে। তবু হুঁশ নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। মুখ্যমন্ত্রীও বিভিন্ন সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তা যে মানা হয়নি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতাল চত্বর একবার ঘুরলেই তা মালুম হবে।
বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ১৫ দিন আগে যা চিত্র ছিল, আজও তা বদলায়নি। অস্থি বিভাগের এক চিকিৎসকের কথায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবই জানে। কিন্তু কিছুই হয় না। হাসপাতাল সুপারের কথায়, এ নিয়ে কেউ তো এনিয়ে কমপ্লেন করেনি। অর্থাৎ কমপ্লেন না করলে তাঁদের নজরে এসব আসে না।
আজ শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বৈঠক হচ্ছে। থাকবেন রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানও। তিনিও এসব শুনে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তবে রোগীদের কল্যাণে হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কাজটা এবার কতটা বাস্তবায়িত হয়, তা দেখার অপেক্ষাতেই রয়েছেন ভুক্তভোগীরা। নিজস্ব চিত্র