অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
গুরুটোলা গ্রামের বাসিন্দা মিঠু শেখ বলেন, কখনও ভাবতেই পারিনি এত ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে উচ্চবিত্ত ওই পরিবারটির। অঢেল জায়গা জমি তো ছিলই তার সাথে দু’টি ডাম্পার, এসইউভি গাড়ি, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাড়ি – কী ছিল না ওদের। তবে বরাবরই ওই পরিবারের ছোট ছেলে সকলকে এড়িয়ে চলত। অনেকে ভাবতেন পড়াশোনা নিয়ে থাকে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে ওদের পরিবারের কাউকেই দেখেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিস একদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেও নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরে বাড়ি ফিরে এসে কিছুদিনের জন্য ফের বেপাত্তা হয়ে যায় আসিফ। তারপরে ফিরেও আসে হঠাৎ করে। গোটা বাড়িই প্রায় মুড়ে ফেলেছিল সিসিটিভি ক্যামেরায়। বাড়ি থেকে সে বের হতো না বললেই চলে। অনলাইনে খাবার আনাত প্রায় নিয়মিতই। গ্রামের কিছু বাসিন্দার মুখে শুনেছি জাওয়াদ আলি আর তাঁর পরিবারের সদস্যরা নাকি কলকাতা বা অন্য কোথাও থাকে। কিন্তু এদিন সকালে সব জেনে তো আকাশ থেকে পড়লাম। ভাবতেও পারছি না ওই অল্প বয়সি ছেলেটি চার জনকে খুন করে ভাবলেশহীন অবস্থায় থাকছিল সেখানেই!
ওই গ্রামেরই এক প্রবীণ বাসিন্দা মোসলেম শেখ বলেন, এই গ্রামে আমরা শান্তিতেই থাকি। একে অপরের খোঁজ খবর রাখি। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি এত বড় ঘটনা শুধু ঘটেই যায়নি চার মাস ধরে চার চারটি মৃতদেহ রাখা ছিল গ্রামেরই একটি বাড়িতে। ভাবতেই শিউরে উঠছেন সকলে। মাঝে শুনেছিলাম আসিফ বলে বেড়াচ্ছিল তার বাবা নাকি তাকে ল্যাপটপ কিনে দেয়নি তাই বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল। পরে আবার বাড়ি ফিরে ওর বাবাকে বোঝায় সব সম্পত্তি বিক্রি করে দাও। আমরা গ্রাম ছেড়ে কলকাতায় চলে যাব। বেশ কিছুদিন ওর বাড়ির লোককে না দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করাতে বলেছিল সবাই নাকি কলকাতায় আছে। আজ আসবে কাল আসবে করে সময় কাটাচ্ছিল। এমনিতে আসিফ বাইরের দিক থেকে নিরীহ। সে যে এত বড় কাণ্ড ঘটাতে পারে তা কারও কল্পনাতেও ছিল না।
গ্রামের পুরুষ মহিলাদের এখন একটাই জিজ্ঞাস্য কী এমন ঘটল যে পুরো পরিবারকেই নির্দ্বিধায় খতম করে দিল এক অল্প বয়সি ছেলে।
গুরুটোলার এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক বলেন, সকলেই চান নিজেদের এলাকার নাম সারা দেশ জানুক। কিন্তু এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের কারণে যে আমাদের গ্রাম খবরের শিরোনামে চলে এল তা মানতে পারছি না। একরাশ হতাশা ঝড়ে পড়ে তাঁর গলা থেকে।