কর্মস্থলে জটিলকর্মে অনায়াস সাফল্য ও প্রশংসালাভ। আর্থিক দিকটি শুভ। ক্রীড়াস্থলে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ
মঙ্গলবারের দুপুরে কাঠফাটা রোদ। খালি গায়ে আখতারের পাশেই শুয়ে রয়েছেন বৃদ্ধ গোলফাহান শেখ। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। কৃষক পরিবারের গোলফাহানের সুগার ধরা পড়েছে। ভালো ডাক্তার দেখাতে পিজির দুয়ারে কড়া নাড়ছেন। সোমবার পরীক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছেন। মঙ্গলবার রিপোর্ট নিয়ে চলে যাবেন। কারণ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখন ডাক্তার বসবেন না। আবার পরের সপ্তাহে আসতে হবে তাঁকে। অনেক ভেবে বললেন, ‘কর্মবিরতি হলে তো গরিব মানুষদের খুবই অসুবিধা। সুপ্রিম কোর্টের কথা মেনে ওঁরা কর্মবিরতিটা তুলে নিতেই পারতেন।’ একথা বলেই খানিক চুপ করে রইলেন। তারপর বললেন, ‘আমরা বললে কি কোনও কাজ হবে? কে জানে!’ এদিকে সকাল থেকে মহম্মদ আসলামকে নিয়ে এসএসকেএমের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে চলেছেন তাঁর ছেলে। জরুরি বিভাগের পর মেডিসিন বিভাগের ওপিডিতে গেলেন। শেষ পর্যন্ত কোথাওই আর ভর্তি হল না। অ্যাম্বুলেন্সে উঠে পেশায় ঘুড়ির ব্যবসায়ী ছেলে বলছিলেন, ‘বাবার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খাওয়া-দাওয়া করছে না। এখানে নিয়ে এলাম। এখন বলছে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যেতে।’ ভোগান্তির চিত্র শুধু এসএসকেএমে নেই। হাওয়াই চটির কারখানার শ্রমিক মহম্মদ আলি তাঁর বৃদ্ধ বাবা মহম্মদ সেলিমকে নিয়ে সেই শনিবার থেকে পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ঘুরছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘সেবার ন্যাশনালে নিয়ে গেলাম। চিকিত্সক পেলাম না। বাইরে দেখালাম। এখন আবার সমস্যা হচ্ছে। তাই এখানে নিয়ে এসেছি। শুনছি তো নাকি সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও কর্মবিরতি উঠছে না। দেখি কী হয়!’
ওপিডির টিকিট কাউন্টার, ওষুধ নেওয়ার লাইন, ডাক্তার দেখানোর লাইন, সর্বত্র উপচে পড়ছে রোগীদের ভিড়। কিন্তু মঙ্গলবার এসএসকেএমে দেখা গেল, অবস্থান মঞ্চের মতো ওপিডি রুমগুলোও ফাঁকা। ওপিডিতে গত এক মাসের রীতি মেনে সেই দু’একজন চিকিত্সক বসেছেন। আর অবস্থান মঞ্চ থেকে আন্দোলনরত চিকিত্সকরা দৌড়েছেন স্বাস্থ্যভবন সাফাই অভিযানে। রোগী ও পরিজনদের প্রশ্ন, ‘সাফাইয়ের কাজ তো চিকিত্সকদের নয়। আমরা সকলে মৃত চিকিত্সকের জন্য বিচার চাই। সুপ্রিম কোর্টের বার্তাও কানে নেবেন না ওঁরা? জানি না। ওঁরা শিক্ষিত। ভালো বুঝবেন নিশ্চয়ই।’