দুর্ঘটনা আর আঘাত যোগ আছে; সতর্ক হোন। মানসিক উত্তেজনায় লাগাম দিন, বাক বিতণ্ডা এড়িয়ে চলুন। ... বিশদ
এনআইটি দুর্গাপুরের অধিকর্তা বিজ্ঞানী অনুপম বসু বলেন, ‘সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে দিয়ে এইরকম একটি কঠিন গবেষণায় সাফল্য মিলেছে। যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নতুন ওই যৌগটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম। বিভিন্ন ট্রায়ালের পর ওষুধ হিসাবে বাজারে এলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্ল্যাটিনামের সঙ্গে জৈব যৌগের মিশ্রণ ঘটিয়ে এই বিশেষ জটিল জৈব যৌগটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এরপর পরীক্ষাগারে ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ‘এ-৫৪৯’-এর উপর প্রয়োগ করা হয়। একই ধরনের সেলের উপর সিসপ্ল্যাটিনও প্রয়োগ করা হয়। বিজ্ঞানীদের দাবি, দু’টি ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সমপরিমাণ কাজ করছে। কোনও ক্ষেত্রে আবার নতুন যৌগটি বেশি ভালো কাজ করেছে। এরপর নতুন জটিল যৌগটি ও সিসপ্ল্যাটিনটিকে সাধারণ সুস্থ এমব্রায়োনিক বৃক্ক (কিডনি) সেল লাইন ‘এইচইকে-২৯৩’-এর উপর প্রয়োগ করা হয়। তার সাফল্য দেখে চমকে যান গবেষকরা। সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত হন তাঁরা। দেখা গিয়েছে, সিসপ্ল্যাটিন সাধারণ সেলের উপর যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে, তার থেকে অনেক কম প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে নতুন আবিষ্কার হওয়া যৌগটিতে। গবেষকদের দাবি, ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধগুলি ক্যান্সার কোষের উপর কাজ করতে গিয়ে সাধারণ কোষগুলিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। ফলে, চুল উঠে যাওয়া সহ নানা উপসর্গ দেখা যায়। অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। এই নতুন যৌগকে গবেষণার ভাষায় ‘ড্রাগ ক্যান্ডিডেট’ বলা হচ্ছে। সেটা এবার ইঁদুর, গিনিপিগ, বাঁদর ও মানুষের শরীরে প্রয়োগে সফল হলে ড্রাগ বা ওষুধের স্বীকৃতি পাবে। খুলে যাবে ক্যান্সার চিকিৎসার এক নতুন দিগন্ত।
ক্যান্স্যার নিয়ে ধারাবাহিক গবেষণার জন্য এবছরই লন্ডনের ‘রয়্যাল সোস্যাইটি অব কেমিস্ট্রি’ শঙ্করচন্দ্র মইকে ফেলো মেম্বার নির্বাচিত করেছে। শঙ্করবাবু বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত রাইডি-দলদলি গ্রামের কৃষক পরিবারের ছেলে। গবেষণার কাজে তাঁকে সঙ্গ দিয়েছিলেন তাঁরই বিভাগেরই দুই গবেষক পড়ুয়া সৈকত মণ্ডল ও স্বরূপকুমার তরাই। তাঁরাও উল্লেখযোগ্য কাজ করার জন্য ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এরই পাশাপাশি, এনআইটি কেমিষ্ট্রি বিভাগের পিএইচডি করা আরও তিন পড়ুয়া ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পিএইচডি করা ছাত্র এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন। রসায়ন বিভাগের অন্য তিন অধ্যাপক অপূর্ব পাত্র, দীপঙ্কর শুকুল ও রাজনারায়ণ সাহাও সাহায্য করেছেন শঙ্করবাবুকে। বুধবার তিনি বলেন, ‘আমাদের আবিষ্কৃত এই যৌগ দ্রুত ড্রাগের স্বীকৃতি পেয়ে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হলে ক্যান্সার চিকিৎসায় আরও সাফল্য আসবে।’