কর্মস্থলে জটিলকর্মে অনায়াস সাফল্য ও প্রশংসালাভ। আর্থিক দিকটি শুভ। ক্রীড়াস্থলে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ
বাঁকুড়ার ইন্দাস থেকে স্ত্রীকে নিয়ে এসে অসহায় অবস্থায় পড়লেন এক ব্যক্তি। বুধবার দুপুরের দিকে এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে স্ত্রীকে ট্রলিতে শুইয়ে অসহায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে পেশায় দিনমজুর হাসান মণ্ডল। বললেন, ‘বউ কিছু খেতে পারছে না। উঠে বসতেও পারছে না। চোখে দেখতে পায় না। বাঁকুড়া আর বর্ধমানের সরকারি হাসপাতালে দেখিয়েছি। এবার এখানে জরুরি বিভাগে এলাম। আমাদের ওপিডিতে পাঠাল। সেখানে ডাক্তার দেখার পর আবার জরুরি বিভাগে এলাম। একটা রিপোর্ট করতে বলল। তারপর বললেন, বেড নেই। কী করব এখন আমি! মরো মরো রোগীকে ভর্তিই করতে পারলাম না। বাড়ি ফিরে গেলে কি হবে ভাবতে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।’ হাসান অগত্যা স্ত্রীকে নিয়ে ফিরেই গেলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ গিয়াসুদ্দিন। বললেন, ‘ভাগ্নির ছেলের ইউএসজি করানোর ডেট নিতে এসেছি। খবরে পড়লাম, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে। তাই ভাবলাম হাসপাতাল গিয়ে খবর নিয়ে আসি। কিন্তু এখানে এসে শুনছি, তারিখ দিচ্ছে কিন্তু তা আবার কিছুক্ষণের মধ্যে বদলেও দিচ্ছে।’ পিজি শুধু নয়। একই চিত্র দেখা গেল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও। মেডিক্যালে মহম্মদ জাফির নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে এলেন তাঁর পরিবার। তাঁরা মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এক পরিজন বললেন, ‘মঙ্গলবার এসএসকেএমে গিয়েছিলাম। সেখানকার ডাক্তার বললেন, ভর্তি করাতে হবে। কিন্তু হাসপাতালে আমাদের অনেক্ষণ ঘোরাল। চিকিৎসা না পেয়ে রাতে অনেক চিত্কার করলাম আমরা। তখন বলল, চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে চলে যান।’ বুধবার সকাল হতেই সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জাফিরবাবুকে। তাঁর পরিজনের অভিযোগ, ‘এখানেও বলল, ব্রেনের চিকিত্সক নেই। তারপর মেডিক্যাল কলেজে আনলাম। এখানেও চারদিক ঘুরছি। ওঁরা ওপিডিতে দেখাতে বললেন। লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে সেখানে দেখালাম। কিন্তু কোনও চিকিত্সাই হচ্ছে না। এই রোগীকে নিয়ে এখন কোথায় যাব আমরা? মানুষটাকে কি সবাই মিলে মেরে ফেলতে চাইছে?’
শহরের অধিকাংশ হাসপাতালে একই চিত্র। সর্বত্র উদ্বিগ্ন মুখের ভিড়। ‘আবার কবে যে সমস্ত কিছু ঠিক হবে? চিকিত্সকরা যে কবে রোগীদের দিকে চেয়ে দেখবেন?’ এই আশায় তাঁদের দিকে তাকিয়ে খেটে খাওয়া মানুষরা। তাঁদের কেউ দিনমজুর। কেউ ভাগচাষি। কেউ কারখানার শ্রমিক। কেউ রিকশ চালান। অসুস্থ হলে সরকারি হাসপাতাল ছাড়া গতি নেই তাঁদের।