পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
ব্যস্ততার জীবন। সকলেই ছুটছেন নিত্য। এমন দিনক্ষণে রান্নাবান্না ও ঘরের কাজের জন্য সময় বরাদ্দ বড়ই কম। যত সহজে হেঁশেলের কাজটি সারা যায়, ততই অফিস টাইমে সময় বাঁচে। বাড়ি ফিরে ক্লান্ত শরীরে খানিক আরাম এনে দেয় বাড়তি একটু সময়। খাবার রান্না ও গরম করার জন্য মাইক্রো আভেন বাঙালির ঘরে ঘরে আপন হয়ে উঠছে। তবে কোন ধরনের খাবার মাইক্রো আভেনে গরম করা যায়, আর কী কী খাবার গরম করলে শরীরে জীবাণুর প্রবেশ ঘটে তা জানলে নিজেদেরই ক্ষতি। বেশিরভাগ গৃহস্থ বাড়িতেই প্রায় সব ধরনের খাবারই চটজলদি গরম ও রান্না করার জন্য এই কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাতে শরীরে অসুখ বাসা বাঁধে। বরং পুষ্টিবিদদের মতে, সব ধরনের খাবার এই যন্ত্রে গরম বা রান্নার চেষ্টা করলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে হিতে বিপরীত হয়। হয়তো পদ্ধতিগত ভুলেও বিপদ ডেকে আনতে পারেন। তাই জেনে নিন কোন কোন খাবার মাইক্রো আভেনে দেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে।
ডিম: খোসাসহ সেদ্ধ ডিম কখনও মাইক্রো আভেনে গরম করবেন না। বৈদ্যুতিক তাপে ডিমের খোসা ভেঙে আভেন নোংরা হবে। কাজ বাড়বে নিজেরই। তাই ডিম গরম করতে হলে খোসা ছাড়িয়ে, ডিমের গায়ে ছুরি দিয়ে কেটে দিলে গরম করুন। তবে ডিম রয়েছে এমন কোনও খাবারই মাইক্রো আভেনে গরম করা উচিত নয়। আয়নশক্তি ভেঙে অতিরিক্ত তাপ বিকিরণের ফলে ডিমের ভিতরের যাবতীয় পুষ্টিগুণ এতে নষ্ট হয়ে যায়। ডিমের কুসুমের উপর মাইক্রো আভেনের তাপের কুপ্রভাব রয়েছে। তাই ডিমের ডেভিল, এগরোল, অমলেট, পোচ এসব একেবারেই মাইক্রো আভেনে দেবেন না। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, মাইক্রো আভেনে কেক দেওয়ার কোনও অসুবিধা নেই। যেহেতু সেখানে কেকে ডিমের কুসুম আরও অনেক রকম উপাদানের সঙ্গে মিশে ফেটানো অবস্থায় থাকে।
তেল: আমরা সব রান্নায় কমবেশি তেল ব্যবহার করি। তবে মাইক্রো আভেনে তেলের ভালো ফ্যাট নষ্ট হয়। বরং তেলে থাকা খারাপ ফ্যাট মাইক্রোর তাপে বেশি পরিমাণে খাবারে মেশে। ফলে মাইক্রো আভেনে বেশি তেলযুক্ত খাবার গরম না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ঠান্ডা মাংস: ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা মাংস বের করেই অনেকে মাইক্রো আভেনে দিয়ে দেন। শরীরের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকর এই প্রক্রিয়া। এমনিতেই ফ্রিজে থাকা অবস্থায় চিকেনের গায়ে নানা ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়। এই অবস্থায় তাকে মাইক্রো আভেনে দিলে সঙ্গে সেই ব্যাকটেরিয়াগুলো সহজেই খাবারের সঙ্গে মেশে ও ফুড পয়জন ঘটায়। ঠান্ডা মাংস গরম করার সবচেয়ে নিরাপদ উপায় বেশ কিছুক্ষণ ঘরের তাপমাত্রায় তাকে রেখে তারপর কম তাপমাত্রায় তা গরম করা। এমনকী, মাংসের পুর ভরা কোনও স্ন্যাক্সও মাইক্রো আভেনে ঢুকিয়ে দ্বিতীয়বার গরম করা উচিত নয়। কিন্তু তা আমরা নিত্য ব্যস্ততায় মেনে চলতে পারি না। দোকানেও প্যাটিস, বার্গার, পিৎজা সবই মাইক্রো আভেনে গরম করার চল আছে। তাতে আমাদের শরীর যে কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার অনুপ্রবেশ ঘটেই, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই যতটা সম্ভব এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। প্রয়োজনে দোকান থেকেও ঠান্ডা কিনে এনে বাড়ির গ্যাসে হালকা করে গরম করে নিন। তাতে ক্ষতি কম হয়।
মাছ: ভাপা বা গ্রিলড মাছের বেলায় যেমন মাইক্রো আভেনে রান্না যেমন সহজ, তেমনই নিরাপদ। তবে সেটি রান্না করে খেয়ে নিন। পরে আর গরম করার উদ্দেশ্যে মাইক্রো আভেনে দিলে মাছের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। ভাপা ও গ্রিলড ছাড়া অন্য যে কোনও মাছের পদ সবসময় গ্যাসে গরম করুন। সাধারণ মাছের ঝোল, কালিয়া বা রসার ক্ষেত্রে যেহেতু মাছটি তেলে ভাজা হয়, তাই তা আবার মাইক্রো আভেনে গরম করতে দিলে মাছের শরীরে যাওয়া তেল খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। মাছের পুষ্টিগুণও এতে নষ্ট হয়।
বেবিফুড: বাজারের কৌটো দুধ বা শিশুদের দুধ কখনও মাইক্রোওয়েভে দেবেন না। ত্বকবিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর ত্বক ও হজমপ্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে মাইক্রোওয়েভ আভেনে গরম করা বেবিফুড।
মাখনযুক্ত খাবার: কেক ব্যতীত অন্য সব ধরনের মাখনযুক্ত খাবার মাইক্রো আভেনে গরম না করে গ্যাসে গরম করুন। গ্যাসের তাপ সবসময় একটি পাত্রের মাধ্যমে খাবারে পৌঁছায়। কিন্তু যেহেতু মাইক্রো আভেনে তাপের বিকিরণ পাত্র ভেদ করে সরাসরি খাবারের উপর প্রভাব বিস্তার করে, তাই কিছু খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় বা তার ভিতরের ক্ষতিকর খারাপ ফ্যাট বেরিয়ে আসে। মাখনের বেলায় ঠিক সেটাই হয়। তাই মাখন ব্রাশ করে খাবার মাইক্রো আভেনে দেবেন না। সাধারণ বেকিং বা গ্রিলড খাবারের বেলায় মাইক্রো আভেন বা ওটিজি ছাড়া উপায় থাকে না। তবে এতেও শরীরের কিছুটা ক্ষতি হয়। তাই যতটা সম্ভব ক্ষতি এড়িয়ে খাবার রাখুন ডায়েটে। নিয়মিত এসব খাবার খেলে বাড়িতে গ্যাসে তৈরি করে নিন।