ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-৭                                                               শালকে-০
(আগুয়েরো-২, সানে, স্টার্লিং, বার্নাডো, ফডেন, হেসাস)
ম্যাঞ্চেস্টার, ১৩ মার্চ: ঘরের মাঠে শালকে’কে গোলের বন্যায় ভাসিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। রাউন্ড অব সিক্সটিনের প্রথম পর্বের ম্যাচে পেপ গুয়ার্দিওলার দল ৩-২ গোলে জিতেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যান সিটি বোঝাল কেন তারা এবার চ্যাম্পিয়নশিপের অন্যতম দাবিদার। জার্মান ক্লাবটিকে নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করলেন লেরয় সানে-সের্গিও আগুয়েরোরা। গত বিশ্বকাপে জার্মানির স্কোয়াডে ডাক না পাওয়ার পর পারফরম্যান্স আরও ক্ষুরধার হয়েছে লেরয় সানের। এদিন তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন সের্গিও আগুয়েরো-রহিম স্টার্লিংরা।
মঙ্গলবার পছন্দের ৪-৩-৩ ফর্মেশনে দল সাজিয়েছিলেন পেপ। গোলে এডারসন। রক্ষণ সামলানোর প্রধান ভার ছিল কাইল ওয়াকার, ডানিলো, লাপোর্তে ও জিনচেঙ্কোর উপর। মাঝমাঠে বার্নাডো সিলভা, গুন্ডোগান ও অধিনায়ক দাভিদ সিলভা। আপফ্রন্টে রহিম স্টার্লিং এবং লেরয় সানের পাশে সের্গিও আগুয়েরো। প্রথম পর্বের ম্যাচের ফল যে নিছকই অঘটন তা এদিন প্রথম থেকেই প্রমাণ করার চেষ্টায় ছিলেন ম্যান সিটি ফুটবলাররা। আক্রমণের পর আক্রমণ তুলে এনে তাঁরা থিতু হওয়ার সুযোগ দেননি শালকে রক্ষণকে। আগুয়েরো-বার্নাডো সিলভারা প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে এই ম্যাচ এক ডজন গোলে জেতার কথা পেপ-ব্রিগেডের। ম্যান সিটি প্রথম গোল পায় ৩৩ মিনিটে। বক্সের ভিতর বার্নাডো সিলভাকে ফাউল করা হলে পেনাল্টি পায় তারা। বুদ্ধিদীপ্ত পানেনকা শটে লক্ষ্যভেদ আগুয়েরোর (১-০)। এই গোলই শালকে’র লকগেট খুলে দেয়। মিনিট পাঁচেক পর রহিম স্টার্লিংয়ের পাস থেকে ব্যবধান বাড়ান আর্জেন্তাইন তারকাটি (২-০)। বিরতির আগে জিনচেঙ্কোর দুরন্ত থ্রু ধরে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে গোল লেরয় সানের (৩-০)। গতি ও স্কিলের মিশ্রণে এই জার্মান উইঙ্গারটি বারবার বিপক্ষ রক্ষণে ত্রাসের সঞ্চার করেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচের গতিপ্রকৃতিতে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। জয় নিশ্চিত জেনে ম্যান সিটি কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা মাঠে নামান ফিল ফোডেন, ফাবিয়ান ডেল্ফ ও গ্যাব্রিয়েল হেসাসকে। তবে তার আগে লেরয় সানের পাস থেকে চতুর্থ গোল রহিম স্টার্লিংয়ের (৪-০)। এই পর্বে শালকের লক্ষ্য ছিল, রক্ষণে ভিড় বাড়িয়ে বিপক্ষ আক্রমণ রোখা। বলা বাহুল্য, তা সফল হয়নি। ৭১ মিনিটে পঞ্চম গোল তুলে নেয় সিটি। বাঁ দিক থেকে সানের বাড়ানো বল পেয়ে মাপা শটে লক্ষ্যভেদে ভুল হয়নি বার্নাডো সিলভার (৫-০)। সাত মিনিট পরে সানেরই বাড়ানো থ্রু ধরে বিপক্ষ গোলরক্ষককে কাটিয়ে জাল কাঁপান প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন ফিল ফোডেন (৬-০)। ৮৪ মিনিটে শালকের কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতেন গ্যাব্রিয়েল হেসাস (৭-০)।
ম্যাচের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পেপ বলেন, ‘উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে আমরা ছাড়াও উঠেছে টটেনহ্যাম হটস্পার ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। যা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার। গত দশকে স্প্যানিশ ক্লাবগুলি এই প্রতিযোগিতায় আধিপত্য দেখিয়েছিল। এবার সেই ধারা আমাদের বহন করতে হবে। এদিন ছেলেরা পরিকল্পনামাফিক খেলেছে। প্রথমার্ধে তিন গোল পেলেও বিরতির পরে আত্মতুষ্ট হয়নি ওরা। গোলের এই অভ্যাস আগামী দিনেও বজায় রাখতে হবে।’