নিজস্ব প্রতিনিধি,, কৃষ্ণনগর: আবাস যোজনা প্রকল্পে বাংলা থেকে মুখ ফিরিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্পের যোগ্য উপভোক্তা খুঁজতে দফায় দফায় সমীক্ষা চালিয়েছিল। কেন্দ্রের অনুমোদিত যোগ্য উপভোক্তারাও বঞ্চিত হয়েছেন আবাস প্রকল্পের টাকা পেতে। নদীয়া জেলায় সেই যোগ্য বঞ্চিত উপভোক্তাদের সংখ্যাও প্রায় ৫০ হাজার। এছাড়াও বহু গৃহহীন মানুষ রয়েছেন, যাঁদের নাম তালিকায় নেই। বিষয়টি নিয়ে বহুবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছেন। তাই এবার বঞ্চিতদের পাকা বাড়ির সুনিশ্চিয়তা দিতে রাজ্যজুড়ে নাম সংগ্রহ করবে তৃণমূল কংগ্রেস। সেইমতো নির্দিষ্ট ফর্ম বিলি করা হবে। যেখানে বঞ্চিতদের নাম ও ফোন নম্বর নথিভুক্ত থাকবে। নির্দিষ্ট ফর্ম ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়েছে। তারপর তা বিলি করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। 
পাশাপাশি, কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে  ‘কর্ম আমার অধিকার তোমার’ বার্তা নিয়ে বিধানসভা ভিত্তিক মহুয়া মৈত্রের কাজের লিফলেট বিলি করবে ঘাসফুল শিবির। যেখানে প্রতি বিধানসভায় মহুয়ার কাজের উদাহরণ তুলে ধরা হবে। বিগত পাঁচ বছরে সংশ্লিষ্ট বিধানসভায় কত টাকার কাজ হয়েছে, তা তুলে ধরা হবে। সেই লিফলেট বিধানসভায় পোঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নির্বাচনের আগে প্রচারে একাধিক নয়া কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে। 
যেমন, চাপড়া বিধানসভায় সড়কের মানোন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হয়েছে ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালের মহিলা ও জরুরি বিভাগের উন্নয়নের জন্য ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। সেইসঙ্গে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভাতে সড়ক উন্নয়নের জন্য সাংসদ তহবিলের ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্যও ৯ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। 
প্রসঙ্গত, একশো দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বাংলার মানুষ। বিকল্প হিসেবে কথা দিয়ে কথা রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা মিটিয়েছে রাজ্য সরকার। নদীয়া জেলাতেই প্রায় দেড় লক্ষ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে আবাস যোজনা প্রকল্পতেও কেন্দ্রের বিকল্প হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেটাই বাস্তবায়ন হতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচিতে বঞ্চিতদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তার জন্য একটি ফর্ম বানানো হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে। তাতে লেখা রয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য পাকা বাড়ি সুনিশ্চিত করে দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসঙ্গে সেই ফর্মে এই কাজের সুবিধা পেতে একটি নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাতে ফোন করে এই কর্মসূচিকে সমর্থন জানানোর জন্য বলা হয়েছে। আর সেই ফর্মে নাম, গ্রাম পঞ্চায়েত, ফোন নম্বর চাওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই সেই ফর্ম বিলি করা হবে বলে জানা গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই কর্মসূচির ভোট ব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলবে রাজ্য জুড়েই।  কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, নির্বাচনে জয় সুনিশ্চিত করতে আমরা একাধিক কর্মসূচি নিয়েছি। বিধানসভা ভিত্তিক লিফলেট বিলি করা হবে।  বিজেপি নেতা সন্দীপ মজুমদার বলেন, উল্লেখযোগ্য কোনও কাজ করেননি বলেই এইসব নিত্যনতুন নাটক করতে হচ্ছে। এসব করে কিছু হবে না। একশো দিনের কাজে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে। আবাস প্রকল্পেও করত। তাই কেন্দ্র টাকা দেয়নি।