ইসলামাবাদ: চীনা নাগরিকদের উপর আক্রমণ, সেনা ঘাঁটিতে হামলা— কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এই জোড়ায় ঘটনায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান। সোমবার রাতে বালুচিস্তানে পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌসেনা ঘাঁটি পিএনএস সিদ্দিকিতে আক্রমণ চালায় সশস্ত্র বালুচ জঙ্গিরা। রাতের অন্ধকারে নৌঘাঁটিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে তারা। তবে নিরাপত্তাবাহিনীর তৎপরতায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। নৌসেনার দাবি, খতম করা হয়েছে পাঁচজন সন্ত্রাসবাদীকে। গুলির লড়াইয়ে আধাসামরিক বাহিনী বালুচিস্তান ফ্রন্টিয়ার কর্পসের একজন আধিকারিক নিহত হয়েছেন। ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর মজিদ ব্রিগেড। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর ও বালুচিস্তানে চীনা বিনিয়োগের বিরোধিতা করে আসছে বিএলএ। তাদের অভিযোগ, এই প্রদেশের সম্পদকে লুট করছে বেজিং ও ইসলামাবাদ। পাক সরকারের থেকে স্বাধীনতার দাবি করে আসছে তারা। তাদের সেই দাবি অবশ্য নাকচ করেছে পাক প্রশাসন। গত ২০ মার্চ এমনই এক আক্রমণ হয়েছিল পাকিস্তানের গদর বন্দরে।  ঘটনায় আটজন বালুচ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল। 
এর কয়েক ঘণ্টা পরেই হামলা হয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে। চীনের সাহায্যে এই প্রদেশের দাসুতে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাঁধ তৈরি হচ্ছে। মঙ্গলবার ইসলামাবাদ থেকে তদারকির জন্য সেখানে যাচ্ছিলেন চীনা ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা। শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় তাঁদের কনভয়ের মাঝে ঢুকে পড়ে একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি। তখনই ঘটে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ। এর ফলে কনভয়ের একটি গাড়ির আরোহী পাঁচজন চীনা ইঞ্জিনিয়ার ও একজন পাক ড্রাইভারের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন অনেকে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিস বাহিনী ও নিরাপত্তা আধিকারিকরা। মৃতদেহগুলিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আক্রমণকারীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। বেশ কয়েক বছর ধরে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এর অংশ হিসেবে দাসুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নন সাধারণ নাগরিকরা। তাঁদের দাবি, জোর খাটিয়ে তাঁদের উচ্ছেদ করে এই প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। এ জন্য আগেও আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন চীনা নাগরিকরা।