পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে ছোট হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য ত্রিপুরা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১০,৪৯২ বর্গ কিমি এলাকা নিয়ে অবস্থিত এই রাজ্য। এখানকার ৬০ শতাংশের বেশি বনাঞ্চল, চাষযোগ্য জমি ২৭ শতাংশের কম। লোকসংখ্যা ৪০ লক্ষ ৫০ হাজারের মতো। আয়তনের নিরিখে দেশের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য এটি। ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ (টিটিএএডিসি) অঞ্চলে ১২ লক্ষাধিক মানুষ থাকেন এবং তাঁরা ককবরক ভাষায় কথা বলেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে দীর্ঘদিন বাম সরকার ছিল। ককবরক ভাষার উন্নয়নে তারা ছিল উদাসীন। আজকের বিজেপি সরকারও তাদের পথ অনুসরণ করে চলেছে। ককবরকভাষীর ৭০-৭৫ শতাংশ মানুষ লেখালেখিতে বাংলা হরফ ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে দেবনাগরীর ব্যবহার আরও কম। কিন্তু রোমান হরফে লেখার দাবি নাকি ৯০ শতাংশের বেশি ককবরকভাষীর। ২০২১ সালে আরটিআই সূত্রে প্রাপ্ত একটি তথ্য তুলে ধরলেন রাজ্যের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা। তাঁর বক্তব্য, ২০২১ সালের একটি ডিগ্রি পরীক্ষায় ৯,৬৪৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ন’জন বাদ দিয়ে, বাকি সকলেই ককবরক লিখেছিলেন রোমান হরফে। ককবরক ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে অনিমেষবাবু কিছুদিন আগেও তিপ্রামথার নেতা হিসেবে আন্দোলন করেন। অধুনা তিপ্রামথা এবং বিজেপির জোট সরকারের মন্ত্রীও তিনি। তবুও তাঁর বক্তব্য, মাতৃভাষার ক্ষেত্রে আগ্রাসন সমর্থন করি না। একটা নিজস্ব শিক্ষানীতি থাকা উচিত। ত্রিপুরার ক্ষেত্রে লজ্জাজনক ঘটনা হল, ককবরক ভাষায় লেখার ক্ষেত্রে রোমান হরফের স্বীকৃতি এতদিনেও মিলল না! কোথাও যেন একটা রাজনীতি চলছে। আগের সরকার করেনি, এই সরকার কবে করতে পারবে সেই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। পাল্টা, ত্রিপুরা সরকারের তফসিলি জাতি উন্নয়ন মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা বলেন, একটি কমিটি গঠন করে ‘রিসার্চ ওয়ার্ক’ চলছে। এদিকে, টিটিএএডিসি এলাকা ঘুরে দেখা গেল, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষজনের মধ্যে এবারের ভোটের ফলাফল নিয়ে কৌতূহল তীব্র। সর্বত্র শুধুই বিজেপি আর তিপ্রামথার পতাকা, অন্যকোনও দলের পতাকা, ফ্লেক্স সেখানে নেই। চায়ের দোকানে বসেছিলেন বছর ষাটের রোহিত দেববর্মা। তিনি বললেন, ভোটে কী আর যায় আসে, আমাগো কথা কে শুনে?
এই ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার দিনকয়েক আগেই দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে তিপ্রাসা ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির অধীনে ত্রিপুরার আদিবাসীদের ইতিহাস, ভূমি ও রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিচয়, সংস্কৃতি এবং ভাষা সম্পর্কিত সমস্যাগুলির সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। উল্লিখিত বিষয়গুলির বাস্তবায়নে তৈরি হয়েছে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ। প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মা বলেছেন, ভোটের পর তিপ্রাসা চুক্তি নিয়ে আমরা অগ্রসর হব। তখন কেন্দ্র কিছু না-করলে আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকবে। তিপ্রাল্যান্ডের দাবি থেকে আমরা সরছি না।