ব্যবসার গতি ও বেচাকেনার সঙ্গে লাভও বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। শত্রু সংখ্যা বাড়বে। ... বিশদ
২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত পদ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মন্ত্রিসভা—কলকাতা হাইকোর্টে এমন তথ্য পেশ করেছিল রাজ্য সরকার। তার জেরেই চাকরি বাতিলের রায় দিতে গিয়ে উচ্চ আদালত জানায়, অতিরিক্ত পদ তৈরিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে সিবিআই। প্রয়োজনে হেফাজতে নিয়ে জেরাও করা যাবে। এদিন সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে ওই নির্দেশের বিরোধিতায় সরব হন রাজ্য সরকারের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী। তার জেরেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, অতিরিক্ত পদ তৈরিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না সিবিআই। ফলে খানিক স্বস্তি পেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা।
যদিও রাজ্য সরকারের আবেদন সত্ত্বেও চাকরি বাতিলের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট। তবে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণ, ‘২৫ হাজার সংখ্যাটি বিরাট। এত লোকের চাকরি চলে যাওয়ার বিষয়টি কিন্তু বিশাল ব্যাপার।’ একইসঙ্গে অবশ্য তাঁর প্রশ্ন, ওএমআর শিটই নেই। সার্ভারে কোনও মিরর ইমেজ পর্যন্ত রাখা নেই। তা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাহলে কোন তথ্যের ভিত্তিতে যোগ্য-অযোগ্য বাছা সম্ভব? প্যানেলের বাইরে যদি নিয়োগ হয়ে থাকে, সেটা সম্পূর্ণ জালিয়াতি।
পাল্টা সওয়ালে রাকেশ দ্বিবেদী এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেন, ‘যোগ্য-অযোগ্য বাছাইয়ের বিকল্প রাস্তা আমাদের কাছে আছে। তাছাড়া সিবিআই আট হাজার লোকের বেআইনি নিয়োগের প্রশ্ন তুলছে। তার জন্য যোগ্যদের চাকরি যাবে কেন?’ চাকরিহারাদের পক্ষে আইনজীবী মুকুল রোহতগি এবং পার্থসারথি দেববর্মনও বলেন, ‘হাইকোর্ট কী করে সরাসরি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিতে পারে? তারা তো নিয়োগ কর্তা নয়। সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলতে পারে মাত্র। তাছাড়া নিয়ম অনুযায়ী ওএমআর শিট দু’বছর রাখতে হয়। আট বছর আগে যারা চাকরি পেয়েছে, তাদের ওএমআর শিট থাকবেই বা কী করে?’ মামলার বিবাদী তথা যোগ্য অথচ চাকরি না পাওয়া প্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘ওএমআর শিট পেশ করতে না পারলে চাকরিও থাকবে না। এ তো সহজ ব্যাপার! বেআইনিভাবে নিয়োগ মোটেই মেনে নেওয়া যায় না। অতিরিক্ত পদ কেন তৈরি করা হয়েছিল?’
রাজ্যের আইনজীবী অবশ্য সাফ জানান, অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছিল ওয়েটিং লিস্টের জন্য। তাছাড়া সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়নি। স্রেফ একজন ক্যান্সার আক্রান্তকে মানবিকতার কারণে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। ফলে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ ঠিক নয়। তখনই আদালত জানিয়ে দেয়, আপাতত এই বিষয়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে।