রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
নন্দকুমার হাইরোড থেকে দূরপাল্লার একাধিক বাস পুরী যায়। অভিশপ্ত ওই বাসটি রবিবার বিকেলে নন্দকুমার থেকে রওনা দিয়েছিল। সোমবার বিকেলে ফের ওই বাসটি পুরী থেকে রওনা দিয়েছিল। অভিশপ্ত ওই বাসে একচেটিয়া পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দারা ছিলেন। তাঁদের বেশিরভাগ ভুবনেশ্বর এইমসে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। এছাড়াও কয়েকজন পুরী ভ্রমণ সেরে ফিরছিলেন। রাতে জাজপুর জেলার ধরমশালা থানার অন্তর্গত বারাবাটি গ্রামে একটি ব্রিজ থেকে ১৫ফুট নীচে বাসটি পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
নন্দীগ্রাম থানার খোদামবাড়ি গ্রামের বর্ণালী দাস বেরা(৩৫), ভূপতিনগর থানার উড়উড়ি গ্রামের উত্তম মাইতি(৪৫), এগরা থানার দুবদা গ্রামের অচিন্ত্য মাইতি(৬৫) ও চণ্ডীপুর থানার ঘোলদা গ্রামের মনোজ ঘোষের(৪৭) মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় জখম ৪০জনের মধ্যে ২৬জন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। দুর্ঘটনার পর পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি)সুমন মোহান্তির নেতৃত্বে পাঁচটি ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যাম্বুলেন্স এবং একটি মিনিবাস ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে দু’জন অফিসার ঘটনাস্থলে যান। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসে থাকা পূর্ব মেদিনীপুরের ১২জন যাত্রীকে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া, ১০জন কটক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাশাপাশি প্রশাসনের উদ্যোগে ধরমশালা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
ওড়িশা রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের অ্যাডিশনাল কমিশনার লালমোহন শেঠি বলেন, চালকের গাফিলতির জেরেই এই দুর্ঘটনা। বাসের ফিটনেস সংক্রান্ত কোনও সমস্যা ছিল না। এবছর মার্চ মাসে শেষবার ফিটনেস সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিল। বেপরোয়া গতি বা ওভারটেক করার সময় এমনটা ঘটতে পারে। ব্রিজের উপর থেকে বাস পড়ে যাওয়ার মুহূর্তেও ড্রাইভার ব্রেক কষেননি। বাস চালকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস থেকে ৪৬জন যাত্রীকে কটকের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন চিকিৎসাধীন। পাঁচজনকে আইসিইউতে রাখা হয়। তাঁদের দু’জনের অবস্থা গুরুতর। দুর্ঘটনার পর মৃতদের পরিবার পিছু তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। পাশাপাশি জখমদের বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবার কথা বলা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় মৃত নন্দীগ্রামের বর্ণালি দাস বেরার স্বামী চন্দন দাস গুরুতর জখম। তাঁর ডান হাত ভেঙে গিয়েছে। বর্ণালিদেবী ভুবনেশ্বর এইমসে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। অভিশপ্ত বাসে দম্পতি বাড়ি ফিরছিলেন। দুর্ঘটনায় স্ত্রী মারা যান। স্বামী গুরুতর জখম হন। এগরার দুবদা গ্রামের অচিন্ত্যবাবু পরিবারের ন’জন সদস্যকে নিয়ে পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন।