আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
এদিন অধিবেশনে আরএসপি বিধায়ক নর্মদাচন্দ্র রায় প্রশ্ন করেন, দক্ষিণ দিনাজপুরে আত্রেয়ী, পুনর্ভবা নদীতে জলাভাবের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ তাঁদের এলাকায় আত্রেয়ী নদীতে বাঁধ তৈরি করেছে। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক ব্যাপার। এই বাঁধে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকরা জল পাচ্ছেন না। সত্যিই ওঁদের কষ্ট হচ্ছে। আবার বলব, ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বিষয়টাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এটা খুবই সংবেদনশীল ব্যাপার। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। কেন্দ্র খুব হাল্কাভাবে নিচ্ছে বিষয়টা।
এদিন কংগ্রেসের বিধায়ক মুস্তাক আলমের একটি প্রশ্নের উত্তরে ফের কেন্দ্রকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। মুস্তাকের অভিযোগ, বিহারের জলের তোড়ে ভাসছে বাংলার একাংশ। সেচ ও জলসম্পদমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ২০১৭-র আগস্টের ওই অবস্থা নিজে গিয়ে সব দেখে এসেছেন। বিহারকে জানানো সত্ত্বেও তারা উদাসীন। সমস্যা ঠেকানোর চেষ্টায় রাজ্য উত্তর দিনাজপুর ও মালদহে ১৫১ কোটি টাকা খরচ করে ১১১টি প্রকল্প করেছে। ওই দুই জেলা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরকে নিয়ে একটা বড় প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিধানসভায় বলেন, ফরাক্কায় এবং ডিভিসি-র জলাধারে ড্রেজিং হচ্ছে না। ডিভিসি ইচ্ছেমত জল ছাড়ে। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। তাদের জন্য বাঁকুড়া, হুগলি, বর্ধমানের বিস্তীর্ণ অংশ ভাসছে। বর্ষায় ঝাড়খণ্ড থেকে জল এলে ভয় লাগে। তেনুঘাট থেকে বুঝি জল ছেড়ে দেবে। ভুটান থেকে জল এসে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ ভাসিয়ে দেয়। গঙ্গায়, হলদিয়ায় ড্রেজিং হচ্ছে না। আজ প্রায় ১৪-১৫ বছর ধরে এ জিনিস চলছে। মনে হচ্ছে, বাংলা যেন মায়ের আঁচল পেতে সব জল ধারণ করে নেবে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া খরায় ভুগছে। আর বর্ষায় ভাসছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে বহুবার বলেছি। বিহারকেও বলেছি। সব রাজ্যেরই তো একটা ভৌগলিক সীমা আছে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী পায়ে হেঁটে বন্যাপ্লাবিত এলাকায় ঘুরেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে ঘুরেছেন।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান জানতে চান, সঙ্কোশের উপর আগে একটা প্রকল্পের পরিকল্পনা হয়েছিল। সেটির কী হাল? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়েও কেন্দ্রকে বলেছি। কোনও জবাব নেই। এর আগে সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, পাগলা নদীর মাধ্যমে গঙ্গার সঙ্গে পদ্মা মিশে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে মালদহ-সহ উত্তরবঙ্গর বিস্তীর্ণ অংশ এবং অসম বিপন্ন হবে। সেচ ও জলসম্পদমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জবাবে বলেন, এসব খতিয়ে দেখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কমিটি তৈরি হয়েছে। গত বছর ১৮ মার্চ কমিটির বৈঠকের যে সব সুপারিশ কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছিল, তার একটাও মানা হয়নি। আমাদের রাজ্যের যা করণীয়, তার ৮০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে।
এদিন তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের প্রশ্নের জবাবে সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সেচ দপ্তর দুটি নতুন নদীবাঁধ নির্মাণ এবং ৭১ পুরনো নদীবাঁধ সংস্কারের কাজ করেছে। এই কাজের জন্য ১৯৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। গত আট বছরে ৩১২০ কিমি নদীবাঁধ তৈরি বা সংস্কার হয়েছে। সিপিএম বিধায়ক জাহানারা বেগমের প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আগামী দু’বছরে ৪০৩ কিমি নিকাশি নালার পলি উত্তোলনের কাজের পরিকল্পনা রয়েছে। যার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা।