বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
বঙ্গ সিপিএমের এহেন ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ গোছের আচরণ নিয়ে যখন দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, তখন সুদূর তামিলনাড়ুতে কিন্তু দল খোলাখুলিভাবে ভোটের বাজারে কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্যের কথা প্রকাশ্যে তুলে ধরছে। সোমবার দক্ষিণী রাজ্যের মাদুরাইতে ভোট নিয়ে একটি রাজনৈতিক কনভেনশন ছিল। সেখানে আবার মুখ্য বক্তা হিসেবে হাজির ছিলেন এতদিন কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্যের অন্যতম বিরোধী বলে পরিচিত পলিটব্যুরো নেতা প্রকাশ কারাত। কিন্তু সেই কর্মসূচির প্রচার উপলক্ষে পার্টির তরফে যে ব্যানার-ফ্লেক্সে গোটা মাদুরাই শহর ছেয়ে দেওয়া হয়েছে, তাতে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী তাবড় রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ছবি জ্বলজ্বল করছে। সেই ছবিগুলির মধ্যে রয়েছেন সোনিয়া এবং রাহুল গান্ধীও। ডিএমকে’র প্রয়াত নেতা করুণানিধি এবং বর্তমান সুপ্রিমো স্টালিন এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন জোটের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য দলের প্রধান নেতাদের ছবিও ঠাঁই পেয়েছে সেখানে। সিপিএমের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির ছবিও রয়েছে সোনিয়া-রাহুলের ঠিক পাশেই। ছবি সহ প্রচারের রীতি না থাকলেও কারাত এবং ইয়েচুরির ছবি দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলা নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে রাজ্য পার্টি কোনও আপত্তি তোলেনি।
অন্যাদিকে, আগামীকাল কন্যাকুমারীতে ডিএমকে’র ডাকে জোটের একটি বড় জনসভা রয়েছে। বক্তা হিসেবে সেখানে অন্যতম আকর্ষণ রাহুল। সেই মঞ্চে আবার রাহুলের পাশে ইয়েচুরির থাকার কথা। দেশের শেষ প্রান্তের এই নগরী এখন স্টালিনদের পাশাপাশি রাহুল এবং ইয়েচুরিরও বড় বড় কাট আউটে ভরে গিয়েছে। তামিলনাড়ুতে এবার স্টালিনের জোটে সিপিএম এবং সিপিআই দু’টি করে আসন লাভ করেছে। এই জোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেস। এছাড়া রয়েছে আরও কয়েকটি দল। কোনও রাখঢাক না করে জোটের সব দল মিলে একত্রে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের সিপিএম নেতৃত্ব এ নিয়ে কোনও ছুঁৎমার্গ রাখবে না বলেই ঠিক করেছে। সেই কারণে কারাত বা ইয়েচুরির দলীয় কর্মসূচির প্রচারেও সোনিয়া-রাহুলদের ছবি ব্যবহারে কার্পণ্য করছে না তারা। তামিলনাড়ু রাজ্য পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, আমরা মনে করি, ভোটের লড়াইয়ে নেমে কোনও ঢাকঢাক-গুড়গুড় করা চলে না। বিজেপি-এআইএডিএমকে’র মতো শক্তিকে রুখতে কংগ্রেস বা অন্য কোনও দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ মোর্চা করে লড়তে নেমে একে অপরকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। এই ঐক্য রক্ষায় কোনও ছুঁৎমার্গ রাখলে তা সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়াবে। অন্তত প্রচারের ক্ষেত্রে এই রীতি আমরা মেনে চলব।
কংগ্রেস-ডিএমকে’র জোটের শরিক হিসেবে দক্ষিণের রাজ্যের দলীয় নেতৃত্ব যখন এই অবস্থান নিচ্ছে, তখন বাংলায় কেন আলিমুদ্দিনের ম্যানেজাররা বিপরীত পথে হাঁটবেন, তা নিয়ে প্রত্যাশিতভাবে দলের ভিতরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষ করে গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় এই সমস্যা তথা বিভ্রান্তির খেসারত দলকে দিতে হয়েছিল বলে সাংগঠনিক পর্যালোচনায় উঠে এসেছিল। তাই ইস্তাহার ভিন্ন হলেও এবার শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হলে অন্তত উভয় শিবিরের তরফে একটি যৌথ প্রচারপত্র প্রকাশের দাবিও উঠতে আরম্ভ করেছে।