উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বেশকিছু বাড়িতে জ্বরের রোগী আছে। পরপর দু’দিনে দু’টি মৃত্যুর ঘটনাই শহর এলাকার হওয়ায় পুরসভার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার বিষয়টি বেশি করে সামনে আসছে। এনিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন এদিন শ্রীরামপুরে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকও করে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মঙ্গলবার মৃত শিশু সুনিধি শর্মা ও বুধবার মৃত যুবক সোনু চৌধুরীর ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের উল্লেখ থাকলেও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বিষয়টি মানতে নারাজ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, জেলায় এখনও ডেঙ্গুতে মৃত্যু নথিভুক্ত হয়নি। শেষ যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে সেক্ষেত্রে ডেঙ্গুর জন্যেই তা হয়েছে কি না নথিপত্র পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
একইভাবে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাতেই ভদ্রেশ্বরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বিষয়টি মানতে নারাজ পুরসভা। সেখানকার চেয়ারম্যান প্রলয় চক্রবর্তী বলেন, সারাবছর ধরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়। যে এলাকার যুবক মারা গিয়েছেন সেখানে নিকাশি নালার উপরেই বাড়ি গজিয়ে উঠেছে। এলাকার মানুষ সচেতন হননি। যদিও এদিন পুরসভার দল সেখানে পাঠানো হয়েছে, যাতে ওই এলাকার মানুষ সচেতন হন এবং মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করা যায়।
মৃত সোনুর বাবা সত্যনারায়ণ চৌধুরী এদিন বলেন, পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা খারাপ। সবসময়েই মশা ঘুরে বেড়ায়। ছেলেটার শুধু জ্বর হয়েছিল। দু’টো দিনও সময় না দিয়ে চলে গেল। কলকাতাতেও নিয়ে যেতে পারলাম না। তরতাজা ছেলেটা মশার কামড়ে মরে গেল। স্বভাবতই ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিজেপি। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুবীর নাগ বলেন, দু’দিনে দু’টো তরতাজা প্রাণ চলে গেল, আর রাজ্যের প্রশাসন শুধু বিজেপিকে কীভাবে আটকান যায় তা নিয়ে ব্যস্ত। যারা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তারা বিজেপিকে কীভাবে আটকাবে। পুরসভাগুলি কেবল খেয়োখেয়িতে ব্যস্ত। মানুষের জীবনের দাম তাদের কাছে নেই। এই জেলার বাসিন্দারা সবই বুঝছেন বলেই আমার বিশ্বাস।
ভদ্রেশ্বর পুরসভার মালাপাড়া বাই লেনের বাসিন্দা সোনু কলেজ পড়ুয়া। ওই ছাত্রটি গত ১৪ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয়ভাবে রক্ত পরীক্ষায় তাঁর এনএস-ওয়ান পজিটিভ অর্থাৎ ডেঙ্গুর সম্ভাবনা ধরা পড়ে। এরপর ১৬ নভেম্বর তাঁকে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। সেখানেই তিনদিন ভর্তি থাকার পরে মঙ্গলবার রাত থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি। বুধবার সকালে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাস্তাতেই তিনি মারা যান। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই কলকাতা মেডিক্যালে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম নিয়েই শ্রীরামপুরের পাঁচ বছরের ফুটফুটে শিশু সুনিধি শর্মার মৃত্যু হয়েছিল। ফলে দু’দিনে দু’জনের মৃত্যু নিয়ে প্রশাসন যাই বলুক, পুর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ জমে উঠছে।