উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
রোহনের এভাবে আত্মহত্যার ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁরা বললেন, ক্রিশিয়ান রোনাল্ডো ও নেইমারের ভক্ত রোহনের ধ্যানজ্ঞান ছিল ফুটবল। রোহনের স্কুলের পড়ুয়ারা সহ প্রধান শিক্ষক, সভাপতি, অন্যান্য শিক্ষকরা তার বাড়িতে আসেন। রোহনের শিক্ষক অভিষেক বিশ্বাস কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিলেন প্রয়াত বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় কৃশানু দে। রোহনের মধ্যে আমরা কৃশানুকে দেখতাম। ফরওয়ার্ডে অসম্ভব ভালো খেলত। পুলিস প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, পড়াশোনা নিয়ে মায়ের গঞ্জনায় অভিমানী হয়েই আত্মঘাতী হয়েছে রোহন।
রোহনের জেঠুতুতো দিদি কবিতা রায় এদিন দুপুরে রোহনদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ফুটবল খেলাই ছিল ওর প্রাণ। সদ্য ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র দলে সুযোগ পেয়েছিল। পড়াশোনাও মন দিয়ে করত। তবে সামনে রোহনের বার্ষিক পরীক্ষা। ওর স্কুলে একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা চলছে। যেকারণে রোহনের স্কুলে ছুটি রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রোহন মাঠে খেলাধুলো করে বিকেলে আসে। আবার এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে রোহন লুকোচুরিও খেলে। ওর মা ওকে বলে, সামনে পরীক্ষা। ও যেন পড়তে বসে। প্রতিটি বাচ্চার মা যেভাবে শাসন করে, সেভাবেই রোহনকে ওর মা বলেছিল। তেমন ধমকও দেয়নি। তবে পড়শিরা জানালেন, সোমাদেবী বেশ জোরেই ধমক দিয়েছিলেন রোহনকে। ফুটবলে তুখোড় হলেও কেন পড়াশোনায় আগ্রহী নয়, তা নিয়েই তিনি বকাবকি করেন। যদিও এরপরেও রোহন ওর মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দোকান থেকে কেক, বিস্কুট কিনে আনে। তারপর দোতলার ঘরে চলে যায়। পুলিস জানিয়েছে, সন্ধ্যায় রোহনকে পড়াতে তার গৃশিক্ষিকা আসেন। রোহন বরাবরই দরজা বন্ধ করে পড়াশোনা করত। তবে গৃহশিক্ষিকা বারবার ডাকলেও ভিতর থেকে কেউ সাড়াশব্দ দেয়নি। এরপরই গৃহশিক্ষিকা সোমাদেবীকে ডেকে নিয়ে আসেন। তিনিও ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে আত্মীয়-পরিজন ও পড়শিদের তিনি ডাকেন। তাঁরা ছুটে এসে দরজা ভেঙে দেখেন, গলায় শাড়ির ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ওই কিশোর ঝুলছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। রোহনের পিসি মিলি মণ্ডল বললেন, রোহনের বাবা রাজু রায় পেশায় ক্যাবচালক। রোহনের দাদা একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে ছেড়ে দেয়। মঙ্গলবারও তিনি রোহনের সঙ্গে গল্প করেছেন। তাঁর এক ভাইপোর সঙ্গে রোহন খাবার আনতে গিয়েছিল। রোহনের মা এমন কোনও কথা বলেনি, যা ওর অভিমানে লাগে। কিন্তু তারপরেও নিজেকে শেষ করে ফেলল। রোহনের স্কুলের শিক্ষক অভিষেক বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি রিলায়েন্স কাপ প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বী স্কুলকে পাঁচ গোলে হারিয়েছে নাকতলা হাইস্কুল। রোহন একটা গোল না করলেও ম্যাচের সেরা হয়েছিল। তাহলেই বুঝুন, কতটা ভালো খেলোয়াড় ছিল।