পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি।প্রতিকার: আজ দই খেয়ে শুভ ... বিশদ
নিহত তৃণমূলকর্মী জয়দেব রায় পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। গত ১০ জুন রাতে বর্ধমানের খানা জংশন এলাকায় কাজ সেরে তিনি সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। সাটিনন্দী গ্রামের কলাদিঘির পাড় এলাকায় আচমকা তাঁর উপর হামলা হয়। তিনি প্রাণে বাঁচার জন্য চিৎকার করলে তৃণমূল কর্মীরা দলবেঁধে ছুটে যান। হামলকারীরা জয়দেব রায়কে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে এলোপাথাড়ি কোপায়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষও বাঁধে। জয়দেববাবুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরদিন অর্থাৎ গত ১১ জুন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওইদিন বিকালে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা মৃতের বাড়িতে গিয়েছিলেন। আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি, মৃতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। অবশেষে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ পেলেন জয়দেববাবুর স্ত্রী।
অন্যদিকে, জামালপুরের সামসুদ্দিন আলি শেখ গুজরাতে কাজে গিয়েছিলেন। গত বছর সেখানেই খুন হন তিনি। তিনিও পরিবারে একমাত্র রোজগারে ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর চরম আর্থিক সমস্যায় পড়েছিল গোটা পরিবার। টানা এক বছর অভাবের সঙ্গেই দিনগুজরান করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তাই তাঁর পরিবারকেও আড়াই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সামসুদ্দিন আলি শেখের স্ত্রী আঙ্গুরা খাতুনের হাতেও ক্ষতিপূরণের ওই চেক তুলে দেওয়া হয়।
এদিন দুপুরে নিহত তৃণমূলকর্মীর স্ত্রীকে এবং সামসুদ্দিীনর স্ত্রীকে জেলাশাসকের দপ্তরে হাজির থাকতে বলা হয়েছিল। তাঁরা দু’জনেই এসেছিলেন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ তাঁদের হাতে ওই ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন। সেখানে জেলাশাসক বিজয় ভারতী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। চোখের জল মুছতে মুছতে তাঁরা ওই ক্ষতিপূরণের চেক নেন।
জয়দেব রায়ের স্ত্রী চম্পা রায় বলেন, আমার স্বামীই ছিলেন পরিবারের একমাত্র ভরসা। আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের কথা ভেবে এই সাহায্যের চেক পাঠিয়েছেন। খুবই ভাল লাগছে। মুখ্যমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ। সামসুদ্দিন আলি শেখের স্ত্রী আঙ্গুরা খাতুন বলেন, আমার স্বামীর রোজগারেই পুরো সংসারটা চলত। তিনি গুজরাট থেকে টাকা পাঠাতেন। স্বামী খুন হওয়ার পর সংসারে অনটন নামল। তাঁর মৃত্যুর পর গত এক বছর আমরা খুবই কষ্টের মধ্যে রয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে এই ক্ষতিপূরণ পেয়ে খুবই ভাল লাগছে। এই ক্ষতিপূরণে আমাদের পরিবারের অনেকটাই সুরাহা হবে। মুখ্যমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ, জেলাপ্রশাসনকেও ধন্যবাদ।
এ ব্যাপারে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, দু’টি পরিবার খুবই গরিব। যে দু’জন খুন হয়েছেন তাঁরা পরিবারের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুর পর দুই পরিবারেই আর্থিক অনটন নেমে এসেছিল। দুই পরিবার ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর থেকে তাঁদের আড়াই লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, আমাদের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দুই গরিব পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণের দু’টি চেক জেলাশাসকের দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন। এদিন আমরা তাঁদের দু’জনের হাতে ক্ষতিপূরণের সেই চেক তুলে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সবার কথা ভাবেন। তাই একটি জন্মানোর পর থেকেই তিনি নানা প্রকল্প নিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের কথাও ভেবেছেন। তাঁদের জন্য আর্থিক সহায়তাও করছেন। এমনকী, কোনও মানুষ মারা যাওয়ার পর কীভাবে তাঁর দেহ সৎকার করা হবে, তা নিয়েও তিনি প্রকল্প তৈরি করেছেন। শেষকৃত্যের জন্যও তিনি আর্থিক সাহায্য করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি সবার উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা করেন এবং বাস্তবায়ণ করেন।