গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
গত সপ্তাহে জার্মানি বলেছিল, নিশ্চিত করতে হবে কেজরিওয়ালের সুবিচার। এবং এক্ষেত্রে তাঁকে যেন নিরপেক্ষ আইনি সহায়তা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, জার্মান প্রশাসন বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছিল, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। যে কোনও গণতন্ত্রে আইনের বিধি হল, দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত আইনের চোখে সকলেই নিরপরাধ। এই বিধি যেন কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়। এক সুরে এবার আমেরিকা মুখ খোলায় অস্বস্তি বেড়েছে মোদি সরকারের। আর একইসঙ্গে ভোটের মুখে চাপ বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিশ্বগুরু হিসেবে আন্তর্জাতিক দুনিয়া এবং দেশের ভোটারদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা এখন মুখ থুবড়ে পড়ছে। সিঁদুরে মেঘ হয়ে দেখা দিচ্ছে চীনের আগ্রাসনও। সোমবার বেজিং ফের বিবৃতি দিয়েছে, ‘অরুণাচল প্রদেশে ভারতের কোনও অধিকার নেই। এই অঞ্চল চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’ এই নিয়ে এক মাসে চারবার।
তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদের নামে মাসের পর মাস জেলে রেখে দেওয়া এবং জামিনের বিরোধিতা করা কেন্দ্রীয় এজেন্সির প্রবণতা। বিরোধীরা এই ইস্যুতে বারবার সরব হয়েছে। আর এখন বিরোধীদের সেই উদ্বেগই ধরা পড়ছে আমেরিকার বিবৃতিতে! লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে একটি ক্ষুদ্র অর্ধরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-জার্মানির মতো রাষ্ট্র কঠোর বার্তা দিচ্ছে কেন? কেনই বা ভারতের গণতন্ত্রকে বারবার পড়তে হচ্ছে পশ্চিমি দুনিয়ার প্রশ্নের মুখে? বিরোধীদের কটাক্ষ, এই তো প্রথম নয়। যে যে মানদণ্ড আদর্শ গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি, তার প্রায় সবই গত কয়েক বছরের আন্তর্জাতিক রিপোর্টে ধাক্কা খেয়েছে। গত বছরও ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম সমীক্ষায় ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১৬১! পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাতেও এর থেকে বেশি সংবাদ স্বাধীনতা রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে এই সমীক্ষায়। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত ক্রমেই পিছনে হাঁটছে। সর্বশেষ রিপোর্টে ভারতের স্থান ১১১তম। আর বিশ্ব গণতন্ত্র সূচকে? ১০৮ নম্বর। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের এই অবনমনে মোদি সরকার এতটাই দিশাহারা যে, নীতি আয়োগে সম্প্রতি স্থির হয়েছে, গণতান্ত্রিক সূচক নির্ণয় করার জন্য ভারত নিজেই একটি কমিটি গঠন করবে। অবসার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন তৈরি করবে এর মাপকাঠি। কারণ ভারত সরকার মনে করছে, ওই আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির রিপোর্ট পক্ষপাতমূলক। কিন্তু বিদেশি ‘বন্ধু’রা যদি সরাসরি আক্রমণে নামে? তার ওষুধ কী? আমেরিকা এবং জার্মানির তোপের পর কেন্দ্রের চিন্তা, আবার কোনও দেশ কেজরিওয়াল ইস্যুতে মুখ খুলবে না তো? যারা ভারতকে কঠোর বার্তা দিচ্ছে, তারা রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পরিষদের সদস্য এবং নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপের এলিট নীতি নির্ধারকও। এখনও কিন্তু সেই ‘কোর গ্রুপে’ ভারতের অন্তর্ভুক্তি হয়নি। মোদির ১০ বছর পরও! এটা কি ভারতের বিদেশনীতির জন্য হতাশাজনক নয়?