বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর

জীবাণুসার প্রয়োগে বাড়বে ফলন
কৃষকদের ঘরে উঠবে বাড়তি লাভ

ব্রতীন দাস ও মোহন গঙ্গোপাধ্যায়: ভালো ফলন পেতে জমিতে জীবাণুসার প্রয়োগ জরুরি। বলছেন কৃষি আধিকারিকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, সঠিক সময়ে ও সুপারিশকৃত মাত্রায় জীবাণুসার প্রয়োগে ১০-১৫ শতাংশ ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব। 
জীবাণুসার কীভাবে ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক? কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসলে জীবাণুসার প্রয়োগে মাটিতে বসবাসকারী উপকারি জীবাণুর সংখ্যা ও তাদের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। ফলে জমিতে আরও বেশি মাত্রায় নাইট্রোজেন ও কার্বন যুক্ত হয়। তাছাড়া জীবাণুসার প্রয়োগের মাধ্যমে জৈব নাইট্রোজেন, মাটিতে অদ্রবীভূত ফসফেট ও পটাশকে গাছের ব্যবহার যোগ্য করে তোলা যায়। ফলে কম খরচে গাছের সুষম খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হয়। এতে একদিকে যেমন চাষের খরচ কমে। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো যায়। ফসলে রোগপোকার আক্রমণও কম হয়। 
চাষিরা নিজেরাই জীবাণুসার তৈরি করতে পারেন। এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণেরও সুযোগ রয়েছে। কৃষি আধিকারিকদের দাবি, যেকোনও ফসলে নাইট্রোজেন সারের বিকল্প হিসেবে ২৫-৫০ শতাংশ জীবাণুসার ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত হারে রাসায়নিক সার প্রয়োগে জমির ক্ষতি হচ্ছে। বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে মাটি। এক্ষেত্রে নতুন করে কৃষকদের পথ দেখাতে পারে জীবাণুসার। এই সার তৈরি করে গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির হাতে আসতে পারে বাড়তি অর্থ। গ্রামের বেকার ছেলেমেয়েরাও যুক্ত হতে পারেন একাজে। 
হুগলির সহ কৃষি অধিকর্তা (বিশ্বব্যাঙ্ক) জয়ন্তকুমার পাড়ুই জানিয়েছেন, আতমা প্রকল্পে বলাগড়ে জীবাণুসার তৈরি হচ্ছে। এই সার প্রয়োগে সুফল পাচ্ছেন চাষিরা। প্রকৃতঅর্থে জীবাণুসার প্রয়োগে গাছের খাদ্যগ্রহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বীজের অঙ্কুরোদগম ও ফুল-ফল ধারণ ক্ষমতা বাড়ে। আরামবাগের কৃষি আধিকারিক (প্রশাসন) সজল ঘোষ জানিয়েছেন, সব্জিচাষিদের মধ্যে জীবাণুসার প্রয়োগে ঝোঁক বাড়ছে। কৃষকদের বোঝানো হচ্ছে, লাগাতার রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটিতে থাকা উপকারি জীবাণুর সংখ্যা কমছে। এই ক্ষতি রুখতে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ কমিয়ে জীবাণুসার ব্যবহারে জোর দেওয়া দরকার। 
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবাণুসার কেনার সময় কয়েকটি বিষয় দেখে নিতে হবে। তার মধ্যে প্রধান, কোন ফসলের ক্ষেত্রে সেই জীবাণুসার প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া জীবাণুসারটি কবে তৈরি করা হয়েছে। তার কার্যকারিতা কতদিন থাকবে। কীভাবে সেটি ব্যবহার করতে হবে। এক কেজি অ্যাজোটোব্যাক্টর, এক কেজি ফসফোব্যাক্টর, এক কুইন্টাল জৈবসারের সঙ্গে এক সপ্তাহ মিশিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেই মিশ্রণ এক বিঘা জমিতে প্রথম চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। জীবাণুসার প্রয়োগের এক সপ্তাহ আগে বা পরে রাসায়নিক সার দেওয়া যাবে না।
 কৃষি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, থাইরাম বা পারদঘটিত কোনও রাসায়নিক দিয়ে যদি বীজ শোধন করা হয়, তা হলে রাইজোবিয়াম জীবাণু মারা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে রাইজোবিয়ামের মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে। তবে কার্বেন্ডাজিম বা ম্যাঙ্কোজেব দিয়ে বীজ শোধন করলে তা রাইজোবিয়ামের উপর কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলে না। দেখা গিয়েছে, দানা জাতীয় কীটনাশকের মধ্যে ফোরেট ১০জি রাইজোবিয়ামের ক্ষতি করলেও কার্বোফুরান ৩জি ব্যবহারে কোনও ক্ষতি হয় না। 

11th     November,   2020
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ