বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিনোদন
 

‘অনেক অমিল, কিছু মিল নিয়েই আমাদের যুগলবন্দি’

চালচিত্র
মৃণাল সেনের সঙ্গে তাঁর ৪২ বছরের সম্পর্ক। সেই যাত্রাপথেরই জন্মবেলার কতগুলো মুহূর্ত ও মানসিক উপলব্ধি, দ্বন্দ্ব ও দর্শন নিয়ে পরিচালক ও অভিনেতা অঞ্জন দত্তর ছবি ‘চালচিত্র এখন’ মুক্তির অপেক্ষায়। শতবর্ষে গুরুর প্রতি শিষ্যর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। মৃণাল সেনের ছবি ‘চালচিত্র’ দিয়েই অঞ্জনের সিনে-সংসারে পা রাখা। তখন আশির দশক। পরিচালক অঞ্জনের আত্মপ্রকাশ নয়ের দশকের শেষ দিকে। তখন থেকেই কি তিলেতিলে নিজেকে গুরুর গভীরতায় গড়ে তোলা? যার চূড়ান্ত পরিপূর্ণতা ‘চালচিত্র এখন’? অঞ্জনের উত্তর, ‘আমি যখন ছবি করতে এসেছিলাম, তখন ওঁর ‘ভুবন সোম’, ‘কলকাতা ৭১’, ‘ইন্টারভিউ’-এর মতো তথাকথিত রাজনৈতিক ছবিগুলোর স্টাইল আমাকে খুব আকর্ষণ করেছিল। আমার ‘বং কানেকশন’, ‘ম্যাডলি বাঙালি’, ‘চলো লেটস গো’, ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’র মধ্যে আছে মৃণালদার ওই ব্যাপারটা। ছন্নছাড়া গল্প, ক্যামেরার মুভমেন্ট, মৃণালদার ওই স্টাইলটা ধীরে ধীরে রপ্ত করেছি। ২০২৩-এ এসে যখন আমি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, এইবার আমি মৃণাল সেনকে নিয়েই ছবি করব, তখন বোধহয় ওই স্টাইলটাকে আত্মস্থ করে ফেলেছি। ফলে ‘চালচিত্র এখন’ তৈরি করতে পেরেছি অনায়াসে।’

যুগলবন্দি
দুই বিপরীত মতাদর্শের মানুষ। অঞ্জন কোনওকালেই ঘোর কমিউনিস্ট ছিলেন না। আজও নন। অথচ বামপন্থায় বুঁদ মৃণাল সেন নিজেকে ‘প্রাইভেট কমিউনিস্ট’ বলতে ভালোবাসতেন। এহেন দুই ব্যক্তির যুগলবন্দির রহস্য কোথায়? জবাবে অঞ্জনের বিশ্লেষণ, ‘মৃণাল সেন বিপরীতধর্মী মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারতেন। আমি সম্পূর্ণভাবে ওঁর বিপরীত। ওই জন্যই মৃণালদার আমার উপর একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কিছু মিল তো ছিলই। আমিও খানিকটা ছন্নছাড়া। অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। অনেকটা অমিল, কিছুটা মিল নিয়েই ছিল আমাদের যুগলবন্দি।’

আধুনিক 
যুবক অঞ্জন। অভিমানী। বড়রা বড় একটা গুরুত্ব দেন না তাঁর ভাবনার। এমন সংশয়ী সময়েই মৃণালের সংস্পর্শে আসেন তিনি। অকপট অঞ্জন স্মৃতিচারণায়, ‘আমায় কথা বলতে দিচ্ছেন। আমার কথা শুনছেন। শ্যুটিং এর পর বাড়ি যেতে ইচ্ছে করত না।’ সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা ঋজু মানুষটাকে খুব আধুনিক মনে হয়েছিল অঞ্জনের। হালকা হেসে বললেন, ‘আমার মানুষটার সঙ্গে থাকতে ইচ্ছে করত খুব। তারপরেও ‘খারিজ’ ছবির ডাবিং শেষ করেই চার বছরের চাকরি নিয়ে জার্মানি চলে গেলাম। গিয়ে ভীষণভাবে মিস করতে শুরু করলাম মৃণালদাকে। ফিরে এলাম। আর ছেড়ে যাইনি।’

গীতা সেন
উৎপল দত্তর নাটক থেকে শুরু করে, মৃণাল সেন, গোবিন্দ নিহালিনি, শ্যাম বেনেগালের ছবিতে অবলীলায় অভিনয় করেও গীতা সেন সংসারী। তা কি স্বামীর জন্য স্বার্থত্যাগ? অঞ্জনের উত্তর, ‘অভিমান ছিল কি না বুঝতে পারিনি। ছবিতে বিদীপ্তা (চক্রবর্তী) গীতাদির ওই আবছা দিকটা ভালো ভাবে ধরেছেন। গীতা সেন না থাকলে মৃণাল সেনকে আমরা পেতাম না।’ 

শাওনের মধ্যে অঞ্জন
ছবির অঞ্জন দত্তকে খুঁজে পেতে পরিচালক অঞ্জনের সময় লেগেছিল। ‘রোগা, বেশি ইংরেজি বলে, গিটার বাজায়, বখাটে, একরোখা একটা বোহেমিয়ান ছেলের খোঁজ করেছিলাম বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি আর কলেজগুলোয়। পেয়েও গেলাম। শাওন মার্কসিজমটা পড়েছিল বলে আমার বোঝাতে সুবিধে হয়েছিল। তারপরের অতিরিক্ত ডিপ্রেশন, এনার্জিটা শাওন খেটে তৈরি করেছে’, বললেন তিনি।

অঞ্জন ভার্সেস অঞ্জন
‘দত্ত ভার্সেস দত্ত’তে বাবা ছেলের সংঘাত, ‘চালচিত্র এখন’-এ গুরু-শিষ্যর সমীকরণ, এবার কি তবে অঞ্জনের মুখোমুখি অঞ্জন? হাসেন অঞ্জন। বলেন, ‘ইচ্ছে আছে। অভিনেতা অঞ্জন আর গায়ক অঞ্জনের ক্রাইসিস নিয়ে একটা ছবি করবই। এত কষ্ট করে অভিনয় শিখলাম, সিনেমা বানালাম। অথচ মানুষ আমাকে গানের জন্য বেশি মনে রাখে।’ 

বাকিটা বইতে
‘ছবিতে আমি মানুষ মৃণাল সেনকে ধরার চেষ্টা করেছি। ওঁকে পুজো করতে চাইনি। আবার গম্ভীর, মার্কসবাদী মৃণালদাকেও তুলে ধরিনি। এই ছবিতে তাই রাজনীতিতে কম এসেছে। তারপরও মানুষটার যে বিশাল ব্যাপ্তি সেটা একটা ছবিতে ধরা অসম্ভব। বাকিটা বলব বইতে। ইতিমধ্যেই ‘দেজ’ প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে। লেখাও শুরু করেছি।’
প্রিয়ব্রত দত্ত
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়

8th     May,   2024
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ