বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
সিনেমা
 

এই ফেলুদা স্মার্ট কিন্তু চৌখস নয়
হত্যাপুরী

অদিতি বসুরায়: লালমোহনবাবুর সবুজ সুইফট গাড়ি, ফেলুদার মোবাইল ফোন, পুরী পর্যন্ত রোড ট্রিপ – এই সব নতুন ব্যাপার-স্যাপার যোগ করলেও ‘হত্যাপুরী’ শেষ পর্যন্ত ফেলুদা-ম্যাজিককে খানিকটা ধরে রাখতে পেরেছে, এই হল মোদ্দা কথা! আবার এই ছবির  সবটুকুই যে আচ্ছন্ন করতে পারবে ফেলুদা প্রেমীদের, তা বললে মিথ্যে বলা হবে। সন্দীপ রায়ের নতুন ‘ফেলুদা’ ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তকে বাঙালির আইকনিক গোয়েন্দা চরিত্র হিসেবে আলাদাভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। মগজাস্ত্রে শান দেওয়া এই রহস্যানুসন্ধানী চরিত্র আজও অত্যন্ত সমাদৃত। পরিচালক সেই আকর্ষণকে হাতিয়ার করেই বারবার এই ফেলুদার কাহিনি পর্দায় নিয়ে আসেন। তবে ফেলুদার উপন্যাস নিয়ে নির্মিত সিনেমা প্রসঙ্গে সত্যজিত রায় ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় জুটির সঙ্গে তুলনা আসবেই। পরবর্তীকালে সন্দীপবাবু যাঁদের ফেলুদা হিসেবে পর্দায় এনেছেন, মনে রাখতে হবে  তাঁরা  প্রায় সবাই কৃতী অভিনেতা! তাঁদের সঙ্গে তুলনায় গেলে ফেলুদা হিসেবে ইন্দ্রনীল স্বকীয়তায় উজ্জ্বল। ফেলুদার মেধাবী দৃষ্টি, শাণিত হাঁটাচলা এবং কাজকর্মের কুশলতা তিনি প্রায় ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। সামান্য যা খামতি, তা অভিনয় দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করেছেন।
সত্যজিতের ফেলুদা-সিরিজের বিখ্যাত উপন্যাস ‘হত্যাপুরী’-র কাহিনি নতুন করে বলার দরকার নেই ছোট থেকেই ফেলুদা-ভক্ত বঙ্গসন্তানদের। মূল কাহিনিকে যে পুরোপুরি অনুসরণ করেছে, ছবির শুরুতেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। লোকেশন হিসেবে পুরীকে যথারীতি চমৎকার ব্যবহার করেছেন পরিচালক। বাঙালির অন্যতম গন্তব্য এবং নস্টালজিয়া শ্রীক্ষেত্র। বহু প্রদর্শিত হলেও, স্বর্গদ্বার, জগন্নাথদেবের মন্দির, উদয়গিরিকে পুনরায় পর্দায় দেখতে ভালোই লাগে। ছবির প্লট, নেপাল থেকে পুরী পর্যন্ত বিস্তৃত। যদিও নেপালের অংশ একেবারেই অল্প দেখা যাবে। পরিচালক মুনশিয়ানার সঙ্গে ব্যাপারটা উপস্থাপিত করেছেন বটে। তবু মাঝে মাঝে ছবিটিকে বড্ড সহজ-সরল মনে হয়। ছবিতে খুন বা আঘাতের দৃশ্যগুলি একেবারেই রোমহর্ষক মনে হয়নি। রহস্যের জাল বোনার কাজটিও কেমন যেন প্রাণহীন। থ্রিলারের অভিঘাত অনুভব করতে কষ্ট হয় দর্শকের।এই ব্যাপারটিই এই ছবির দুর্বলতা। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও ইন্দ্রনীলের চরিত্রটিও বেশ একমাত্রিক। ফেলুদার বর্জ্র-কঠিন ব্যক্তিত্ব এবং রহস্য সমাধানের ক্ষুরধার বুদ্ধিমত্তা অনেক জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই গোড়াতেই এই ছবির ফেলুদাকে ভিন্ন নজরে দেখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ফেলুদা স্মার্ট কিন্তু সাধারণের সীমানা পার করতে পারে না। তাঁর চোখের ভাষা, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ অনেক নরম।  
‘হত্যাপুরী’-র কলাকুশলীরা চমৎকার কাজ করেছেন। তবে তোপসের চরিত্রে আয়ুষ দাসের আরও সাবলীল হওয়া দরকার। চিত্রনাট্য অনুসারে অভিজিৎ গুহের ‘জটায়ু’ বিশ্বাসযোগ্য নয়। যদিও অভিনেতা প্রাণপন চেষ্টা করেছেন। অসামান্য কাজ করেছেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায় (লক্ষণ ভট্টাচার্য) এবং পরাণ বন্দোপাধ্যায় (দুর্গাগতি সেন)। বিলাস মজুমদারের চরিত্রে সাহেব চট্টোপাধ্যায়ও বেশ ভালো। একই কথা বলা যায় ভরত কলের সম্পর্কে। ধনী ব্যবসায়ী মহেশ হিঙ্গোয়ানি হিসেবে তিনি যথাযথ। বড়দিন, ছুটির মরসুম, উৎসবের আবহে, ফেলুদার পর্দায় পুনরাবির্ভাব নিঃসন্দেহে আম-বাঙ্গালির জন্য সুখবর। ম্যাজিক কিন্তু একবার শেষ হলে, ফেরত আসা কঠিন। 

23rd     December,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ