বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

ফল না ফলের রস, কোনটা বেশি উপকারী?

সন্দীপ রায়চৌধুরী: গরমে সকলের প্রাণ ওষ্ঠাগত। যাঁরা শুধু চার দেওয়ালের মধ্যে কাজ করেন তাঁদের কথা একরকম।  কিন্তু যাঁদের রোদে তেতে পুড়ে কাজ করতে হয়, এই গরমে সুযোগ পেলেই তাঁরা ঢকঢক করে নানা ধরনের পানীয় গলায় ঢালেন। আম, লিচু, আপেল, স্ট্রবেরি, কমলালেবু, আনারস, পেয়ারা,  মিক্সড ফ্রুট, আমলকী, মুসাম্বি, বেদানা, আঙুর ইত্যাদি মরশুমি ফল থেকে শুরু করে এখন ডাবের জলের মতো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পানীয়ও পাওয়া যায় বোতলবন্দি অবস্থায়। এসব আরও বেশি করে বিজ্ঞাপিত করার জন্যে প্যাকেটের গায়ে বড় বড় হরফে লেখা থাকে ‘নো অ্যাডেড সুগার,’ ‘নো অ্যাডেড প্রিজারভেটিভ’, ‘নো অ্যাডেড কালার’ইত্যাদি। কিন্তু আদতে তা কতটা কার্যকরী? 
দেখা যাক আয়ুর্বেদশাস্ত্র এ বিষয়ে কী বলছে? কীভাবে ফল খাওয়া যাবে তা নিয়ে আয়ুর্বেদে দুটো কথা বলা হয়েছে। দন্তনিষ্পীড়িত না যন্ত্রনিষ্পীড়িত অর্থাৎ দাঁতে চিবিয়ে ফল খাবেন না যন্ত্রে পেষণ করে? চরক সংহিতা অনুসারে চিবিয়ে ফল খেলেই উপকার বেশি। তাহলে সরাসরি ফলের গুণ আপনার শরীরে ঢুকবে। যন্ত্রনিষ্পীড়িত ফল খাওয়ার কী অসুবিধা, সেটাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেহেতু যন্ত্র দ্বারা পেষণের ফলে কিছুটা সময় পেরিয়ে যায়, গুণাগুণও সেই পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তিত হতে পারে। একে বলে কালাপেক্ষ। অর্থাৎ আপনি ফল যখন খাচ্ছেন, তখন গুণও সরাসরি আপনার শরীরে প্রবেশ করছে। কিন্তু যন্ত্রের পেষণের জন্য ফলের রস প্রকৃতির সংস্পর্শে আসছে, তার একটা সময়কালও থাকছে। ফলে তার গুণাগুণের পরিবর্তন হতে পারে। 
একটা উদাহরণ দিয়ে বলি। ধরুন আখের রস। আখ রস করার সময় বিশেষ করে পঞ্জাব অঞ্চলে দেখবেন আখের খোসা না ছাড়িয়েই রস করে ফেলা হয়। আবার আমাদের এখানে খোসা ছাড়ানো হয়। তবে কন্দ বা গাঁটগুলো থেকে যায়। সেগুলো রস করে ফেলায় গুণের তফাত হয়। আখ ছাড়িয়ে চিবিয়ে খেলে যে সমস্যাটা হয় না। এটা অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য। 
এছাড়াও কিন্তু ফল দিয়ে আমরা বিভিন্নরকম কুইজিন বা প্রিপারেশন তৈরি করি। যেমন ধরুন আম পান্না, বেলের শরবত ইত্যাদি। কচি বেল বা পোড়া বেলের শরবত বঙ্গদেশে বহুল প্রচলিত। পাকা বেলের শরবত যেমন হয়, তেমনই কাঁচা বেলের শরবতও হয়। কিন্তু পুড়িয়ে করা হয়। ‘পান্না’ শব্দটা এসেছে পানক থেকে। আয়ুর্বেদে পানক হল একটি আহার কল্পনা। প্রথমে পোড়ানো হচ্ছে, তারপর নিষ্পেষিত হচ্ছে, তারপর অনেকরকম আলাদা দ্রব্য যোগ করা হচ্ছে। যেমন মিষ্টির জন্য মিছরি, তারপর সৈন্ধব মেশানো হয়, অম্লদ্রব্য, শুকনো আদার গুঁড়ো মেশানো হয়। এইরকম অন্যান্য দ্রব্য মিশিয়ে একটা কল্পনা করা হয় বা একটা বিশেষ জিনিস বানানো হয় যা শরীরের পক্ষে উপকারী। ওর বদগুণটাকে কমিয়ে অন্য দ্রব্যের ভালো গুণগুলো আরোহণ করা।  ফলের রসেও বিশেষ বিশেষ কল্পনার উল্লেখ আয়ুর্বেদে আছে। অর্থাৎ শুধু যন্ত্রনিষ্পেষিত ফলের রস নয়, তার সঙ্গে অন্যান্য দ্রব্য মিশিয়ে এমন কিছু তৈরি করা যা শরীরের পক্ষে উপকারী। তার আলাদা আলাদা গুণেরও উল্লেখ আছে। তবুও তুলনামূলকভাবে কাঁচা ফলের থেকে খেজুর, কিশমিশ ইত্যাদি থেকে পানক বানানো হলে তা কিন্তু বিষ্টঙ্গী। এই বিষ্টঙ্গী শব্দের অর্থ হল যা সহজে হজম হয় না। কিন্তু কাঁচা বেল বা আমের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয় না।

9th     May,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ