বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

চশমার ইতিবৃত্ত

শান্তনু দত্ত: ‘ঠাকুরদাদার চশমা কোথা? ... দেখ্‌না হেথা, দেখ্‌না হোথা- খোঁজ না নীচে গিয়ে।...’ ঠাকুরদাদার চশমা শেষমেশ তক্তপোশে পাওয়া গেলেও প্রথম চশমার খোঁজ মিলেছিল ইতালিতে। চশমার আবিষ্কর্তা হিসেবে একজনের নাম বলা ভীষণ কঠিন। কারণ চশমার উল্লেখ রয়েছে হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে বর্ণিত প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায়। বলা হয়, ১০০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রথম চশমা তৈরি হয়। দ্বাদশ শতকে দৈনিক ব্যবহারের জন্য চশমার ব্যবহার শুরু হয়েছিল। সেটা ইতালিতে। একটি কাঠের ফ্রেমে দু’টি কাচ আটকে তৈরি হতো সেই চশমা। ইতালিতে চশমার উদ্ভাবন— এই তত্ত্ব সিংহভাগ ইতিহাসবিদ মানলেও কে প্রথম চশমার আবিষ্কর্তা, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। অনেকে বলেন ১২৮৬ সাল নাগাদ ইতালির জিওর্দানো দ্য পিসা নাকি চশমা বানিয়েছিলেন। আবার অনেকে এর কৃতিত্ব দেন রজার বেকন, সালভিনো ডি আর্মাতি প্রমুখ বিজ্ঞানীকে। তবে প্রত্যেকেই চশমা বানিয়েছিলেন দূরে দেখার অসুবিধা (মায়োপিয়া) দূর করতে। হাইপারমেট্রোপিয়া বা কাছের জিনিস দেখার চশমা এসেছে আরও পরে। চতুর্দশ শতকে ফ্লোরেন্সে বিপুল পরিমাণে চশমা তৈরি হতো। ১৪৫০- এর দশকে জোহান গুটেনবার্গ ছাপাখানা আবিষ্কার করলেন। এরপর থেকে চশমার প্রয়োজনীয়তা বাড়ে। অনেক সময় শোনা যায়, চশমার আবিষ্কর্তা বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। তিনি আসলে বাইফোকাল লেন্স তৈরি করেছিলেন। বর্তমানে আমরা যেমন নানান নকশার চশমা দেখতে পাই সেগুলি তৈরি শুরু হয়েছিল দুইয়ের দশক থেকে। 
এবার আসি, এই গরমে সুয্যিমামার হাত থেকে বাঁচতে যে চশমা ভরসা, তার প্রসঙ্গে। সানগ্লাস। কেবল রোদের তাপ উপেক্ষাই নয়, সানগ্লাস হয়ে উঠেছে এখনকার ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে, রোমের সম্রাট নিরো এই সানগ্লাসের জনক। যদিও এই নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে। গ্ল্যাডিয়েটররা তখন মরণপণ যুদ্ধ করতেন। সেই যুদ্ধ গ্যালারিতে বসে উপভোগ করতেন সম্রাট। তখন তাঁর চোখে থাকত সবুজ এমারেল্ড পাথরের তৈরি স্বচ্ছ চশমা। ত্রয়োদশ শতকে চীনে এক ধরনের কালো চশমার প্রবর্তন হয়। তা পরে থাকতেন বিচারক। আইনজীবীদের বাদানুবাদের সময় বিচারকের চোখের দৃষ্টি দেখে যাতে তাঁর মনের অবস্থা ধরা না যায়, মূলত তার জন্যই এই ধরনের চশমার চল হয়। এর পরের শতকে ইতালির আদালতেও চালু হয়েছিল। ১৭৫২ সালে জেমস এসকফ এক ধরনের রঙিন চশমা আবিষ্কার করেন। 
ঊনবিংশ শতকের প্রথম ভাগে ভূপৃষ্ঠ থেকে বেশ উঁচুতে বিমান চালানোর সময় চড়া আলো থাকায় রঙিন চশমার ব্যবহার শুরু হয়। পাইলটদের জন্য তৈরি হয় অ্যাভিয়েটর সানগ্লাস। এরপরই রোদের হাত থেকে চোখকে আরাম দেওয়ার জন্য সানগ্লাসের বিক্রি শুরু হয়। ১৯২৯ সাল নাগাদ দ্য ফস্টার গ্রান্ট সংস্থার মালিক স্যাম ফস্টার নিউজার্সিতে সানগ্লাস বিক্রি শুরু করেন। চাহিদা বৃদ্ধিতে লুক এবং সানগ্লাসের লেন্সের কালারে পরিবর্তন আনতে শুরু করে একাধিক সংস্থা। ধীরে ধীরে মানব জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে পড়ে সানগ্লাস। কেমন, হল তো? চন্দ্রবিন্দুর চ, বেড়ালের তালব্য শ, আর রুমালের মা হল চশমা। 

25th     April,   2024
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ