বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা মানেই
কি একাধিক সন্তান?

ব্যাখ্যা করলেন নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি-র মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ রোহিত গুটগুটিয়া।

আইভিএফ-এ বহুক্ষেত্রেই যমজ বা ট্রিপলেট বা তার চেয়েও বেশি সংখ্যক শিশু জন্মায়। এমন কেন হয়?
আইভিএফ পদ্ধতির দু’টি দিক আছে। ১. ভ্রূণকে তৈরি করা ২. ভ্রূণকে গর্ভে রাখা। এই পদ্ধতি যেমন খরচসাপেক্ষ তেমনই সময়সাপেক্ষও বটে, তাই  চিকিৎসক ও রোগী কেউই চান না এত খরচ ও সময় ব্যয় করে যে পদ্ধতি তাঁরা গ্রহণ করলেন, তাতে বিরূপ ফল আসুক। এক্ষেত্রে মা-বাবা হওয়ার ইচ্ছেও জড়িয়ে থাকে। আবেগ ও খরচ দুই-ই যেহেতু এই পদ্ধতিতে যুক্ত, তাই চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীও চান প্রথমবারেই পদ্ধতির সুফল পেতে। সেই কারণে বেশি ইঞ্জেকশন দিয়ে ডিম্বাশয়ে বেশি ডিম তৈরির প্রয়াস চলে। একে বলে ‘ওভারিয়ান স্টিমুলেশন’। সেই বেশি সংখ্যক ডিমকে মায়ের শরীর থেকে বের করা হয়। এবার পরীক্ষাগারে বাবার সিমেনের মাধ্যমে নিষিক্ত করে ভ্রূণ প্রস্তুত করা হয়। সব ডিম থেকে তৈরি ভ্রূণ যে ভালো হয়, এমনটা কিন্তু নয়। হয়তো দেখা গেল একটি বা দু’টি বা তিনটি ভ্রূণ ভালো দেখতে হল। সেই দেখতে ভ্রূণগুলিকে মায়ের ইউটেরাসে প্রতিস্থাপন করা হল। শেষে হয়তো দেখা গেল এই ভালো দেখতে ভ্রূণগুলি সকলেই বেঁচে গেল! তখন একাধিক সন্তানের সম্ভাবনা বাড়ল।

সব ভালো দেখতে ভ্রূণই কি শেষ অবধি সুস্থ থাকে?
এমন কোনও গ্যারান্টি নেই। খুব ভালো মানের গবেষণাগার হলে ভ্রূণকে পাঁচদিন পর্যন্ত বাইরেই বড় করা যায়। সাধারণ মানের গবেষণাগারে তিনদিনের বেশি ভ্রূণ রাখা যায় না। মাত্র তিন বা পাঁচ দিনের কোনও ভ্রূণ দেখে বোঝা যায় না যে ভ্রূণটি সুস্থ থাকবে কি না। কেবল বলা যেতে পারে, ভ্রূণটি ভালো দেখতে। কাজেই এটা আগে থেকে বলা অসম্ভব। ঠিক সেই কারণেই একাধিক ডিম তৈরির দিকে জোর দেওয়া হয়।

একটি ভালো দেখতে ভ্রূণ থেকে প্রেগন্যান্সি আসার সম্ভাবনা কত শতাংশ?
তিন দিনের ভালো দেখতে ভ্রূণ থেকে সন্তান তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকে মাত্র ১৫ শতাংশ। পাঁচ দিনের ভ্রূণ হলে ২৫ শতাংশ। 

এ তো বেশ টেনশনের!
তা তো বটেই! এখন আইভিএফ অনেক উন্নত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এতটাও উন্নত হয়নি যে তিন বা পাঁচ দিনের একটি ভ্রূণ দেখেই তার আয়ুষ্কাল সম্পর্কে সিলমোহর দেওয়া যাবে। তার উপর আইভিএফ করাতে আসেন কারা? যাঁদের সাধারণ উপায়ে সন্তানধারণের সমস্যা আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হবু মায়ের বয়স ৩৫ পেরিয়েছে। ফলে তাঁদের সুগার, প্রেশারের মতো কিছু সমস্যা থাকে। তাই স্ট্রেস থাকেই।

একাধিক সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা কত?
ধারা ও অভিজ্ঞতা মিলিয়ে বলতে পারি, ১০০ জনের মধ্যে ৮৪-৮৫ জনের ক্ষেত্রে ভালো ফল দেয়। তার মধ্যে ২০-২৫ জনের একাধিক সন্তান হয়।

আইভিএফ-এ যমজ বা একাধিক সন্তানের মধ্যে এক বা দু’জন কি একটু কমজোরি হয়?
না, এটা একটা সুবিধার দিক। আইভিএফ পদ্ধতিতে সবক’টি ভ্রূণই পরীক্ষাগারে আলাদা করে তৈরি হয় ও পরে মায়ের জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়। তাই এদের সক্রিয়তা স্বাভাবিক উপায়ে তৈরি ভ্রূণের চেয়ে একটু বেশি। আর প্রতিস্থাপনের সময় এমনভাবে তা দেওয়া হয়, যাতে সকলেই সমান পুষ্টি পায়। 

প্রি ম্যাচিওর হওয়ার ঝুঁকি থাকে?
সেটা কিছুটা থেকেই যায়। আর তাছাড়া যে দম্পতি আমাদের কাছে মা-বাবা হতে আসেন, তাঁদের হয় কিছুটা সমস্যা আছে, নয়তো তাঁদের বয়স বেশি। ফলে যমজ সন্তান হলে সন্তানের প্রি ম্যাচিওর হওয়ার ঝুঁকি থাকেই। তবে একটি সন্তানের বেলায় ঝুঁকি অনেক কম। 

কেউ যদি আইভিএফ-এ একাধিক সন্তান না চান?
না চাইতেই পারেন। সেক্ষেত্রে রোগীর মত নিয়ে একটি একটি করে ভ্রূণ মায়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হবে। তবে এই পদ্ধতিতে একটি অসুবিধা আছে। পরে ভ্রূণটি নষ্ট হয়ে গেলে ফের আর একটি ভ্রূণ তৈরির কার্যাবলির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এমনিতেই এটি সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তাই এতটা ধৈর্য অনেকেই দেখিয়ে উঠতে পারেন না। তবে কেউ চাইলে এভাবেও এগনো যায়।
সাক্ষাৎকার: মনীষা মুখোপাধ্যায়

16th     February,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ