বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

টিফিন ব্রেকের  মজা

দাবদাহের কারণে এগিয়ে এসেছে গরমের ছুটি। কিন্তু করোনা কাটিয়ে স্কুল খোলার পরও ছিল নানা ধরনের সতর্কতা। কেমন কাটছিল বিধিনিষেধ মেনে টিফিন পিরিয়ড, জানাল গভঃ স্পনসর্ড মাল্টিপারপাস স্কুল ফর বয়েজ টাকি হাউসের পড়ুয়ারা।

কবে ফিরবে পুরনো টিফিন টাইম?
 দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। খুব কষ্ট পেতাম, বাড়িতে বসে। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করতাম, কবে স্কুল খুলবে, খুব মজা করব, মাঠে খেলব, টিফিন টাইমে হইহই করে কাটাব। কিন্তু স্কুলে এসে শুনলাম অন্য কথা। কেউ কারও সঙ্গে হাতে হাত মেলাবে না, অন্য কারও টিফিন খাবে না, মাঠে নামবে না। তাই টিফিন পিরিয়ডটা আগের মতো নেই। কারও সঙ্গে দুষ্টুমি করতে পারি না। এ এক অন্য পৃথিবী। টিফিন টাইমের পুরনো প্রাণোচ্ছল ভাবটা আর নেই। তাই আমি ফিরে পেতে চাই সেই পুরনো টিফিন টাইম। সবাই মনঃকষ্টে ভুগছি। 
—রৌণক চট্টোপাধ্যায়, অষ্টম শ্রেণি 
ভয়ে চোখ ছানাবড়া!
 আমরা সব বন্ধুরা অপেক্ষা করতাম, টিফিনের ঘণ্টা পড়ার। পায়ের শব্দ, হইচই, গমগম আওয়াজে ভরে থাকত স্কুল ক্যাম্পাস। মাঠে কখনও ক্রিকেট, ফুটবল খেলতাম। ক্লাসরুমে গল্প করতে করতে খাবার ভাগ করে খেতাম। কেউ আনত লুচি, তরকারি। তো কেউ চাউমিন, পাস্তা, নানারকমের ফল। সব খাবার ভাগাভাগি হতো। লাইব্রেরি থেকে বই এনে একসঙ্গে পড়তাম। কত গল্প হতো। মজা, ঠাট্টা, ইয়ার্কিতে ভরে থাকত টিফিন টাইম। এখন সব কিছুই আলাদা। কারও সর্দি, কাশি হলেই হল। বাকিদের চোখ ভয়ে ছানাবড়া। কেবলই মনের মধ্যে সন্দেহ! 
—দেবজিৎ পাল, দশম শ্রেণি 
করোনার নাগপাশ 
 টিফিন পিরিয়ড। সারাদিনের অক্সিজেন নেওয়ার সময়। করোনা কেড়ে নিয়েছে সুন্দর মুহূর্তটাকে। আনন্দ নেই এখন আর টিফিনে। শুধুই সাবধানবাণী। মা, বাবা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হচ্ছে, কেউ কারও সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করবে না, মাস্ক খুলবে না, টিফিন ভাগ করবে না। এমনকী, হলের করিডোরে দাঁড়াবে না। সত্যি বলছি, ভালো লাগছে না। করোনার নাগপাশে বন্দি আমাদের টিফিন টাইম। 
—কুন্তল চক্রবর্তী, সপ্তম শ্রেণি 
ফাঁকা খেলার মাঠ 
 স্বপ্ন ছিল বড় স্কুলে পড়ব। দু’বছর আগে যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম, তখন ভাবতাম উঁচু ক্লাসে খুব মজা করব। বন্ধুদের সঙ্গে হইহই করব। কিন্তু করোনা সব কেড়ে নিল। এখন স্কুলে আসি ভয়ে ভয়ে। নিজের টিফিন নিজেই খাই। চুপ করে ক্লাসরুমে বসে থাকি। তাই টিফিন পিরিয়ডটাকে আলাদা কিছু মনে হয় না। শুধু মন খারাপ হয় ফাঁকা খেলার মাঠ দেখে। 
—হিমাদ্রী নন্দী, ষষ্ঠ শ্রেণি 
নিয়মের দড়িতে বাঁধা 
 আমরা সবাই চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করছি, কবে ফিরবে সেই সোনালি দিনগুলো। মুখে মাস্ক আর হাতে স্যানিটাইজার— দমবন্ধ হয়ে আসছে। নিয়মের দড়িতে বাঁধা পড়ে রয়েছি। টিফিন পিরিয়ডের সুন্দর সময়টাকে মিস করছি। খেলার মাঠ, আনন্দ, হাসি সবই যেন অতীত। টিফিন টাইমটাও যেন কোভিড পরবর্তী জীবনের মতো গতানুগতিক হয়ে গিয়েছে। মজা নেই, খুনসুটি নেই। আছে শুধু ভয়-ভীতি। একা খেতে ভালো লাগে না। তবুও খেতেই হয়। শুধুই অপেক্ষা করছি, কবে করোনার সতর্কতা থেকে পুরোপুরি মুক্তি মিলবে। 
—অরিত্র ঘোষ, সপ্তম শ্রেণি 
সেই মজাটা নেই
 বিদ্যালয় আমার দ্বিতীয় বাড়ি। এখানে পড়ছি সাত বছর। স্কুলের সঙ্গে নাড়ির সম্পর্ক। অনলাইনে ক্লাস করলেও অফলাইনের স্মৃতি ছিল উজ্জ্বল। অবশেষে ফিরে পেলাম অফলাইন ক্লাসের সুযোগ। এবার ফিরে পেতে চাই, স্কুলের টিফিন বেলার সেই আনন্দ। কষ্ট হয় ছোটদের দেখে। ওরা এই টিফিনের সময় মুখে মাস্ক পরে ক্লাসে বসে থাকে। সত্যি বলতে কী, পড়ার চাপ কমে টিফিন পিরিয়ডে। বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা, হইহই, মজা করে টেনশন কমত। কিন্তু আমাদের এখনকার টিফিন পিরিয়ডটা আপাতত মহামারীর দখলে। চুপ করে বসে থাকা ছাড়া উপায় কী? 
—ঋত পাঁজা, একাদশ শ্রেণি 
সংকলক: শম্পা সরকার
ছবি: সায়ন চক্রবর্তী

প্রধান শিক্ষকার কলমে
শিয়ালদা টাকি হাউস বয়েজ স্কুল আজ কলকাতার বুকে অন্যতম সেরা স্কুল। এই স্কুল তৈরির সলতে পাকানোর কাজটা শুরু হয় স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে। ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন হরেন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী। তিনি ছিলেন টাকির জমিদার। তিনিই প্রস্তাব দেন তাঁর কলকাতার এই জমিতে একটি বিদ্যালয় তৈরির। তবে শর্ত একটাই, নাম রাখতে হবে টাকি হাউস। সরকারের অনুমতিক্রমে ১ টাকার বিনিময়ে তিনি এই জমি দান করেন। ১৯৬৫ সালের ৪ মার্চ শুরু হয় এই স্কুলের পথচলা। তখন প্রধান শিক্ষক হয়ে আসেন হিন্দু স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক কানাইলাল মুখোপাধ্যায়। তিনি নতুন ছাত্রদের পাশাপাশি অনগ্রসর ছাত্রদেরও ভর্তি করেন। ১৯৬৭ সালে উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্ররা নজরকাড়া ফল করে। সেই অভাবনীয় সাফল্যই এনে দেয় টাকির প্রকৃত পরিচয়। কানাইবাবুর গড়ে দেওয়া নিয়ম-নিষ্ঠার আজও বিচ্যুতি ঘটেনি। 
সুবর্ণজয়ন্তী পেরিয়ে স্কুলে বাংলা বিভাগ ছাড়াও সূর্য সেন স্ট্রিটে নতুন ক্যাম্পাসে চালু হয়েছে ইংরেজি বিভাগ। পুরনো ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে আধুনিক নতুন ভবন। ইংরেজি মাধ্যমটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজন আরও অর্থসাহায্য। 
এছাড়াও বিগত ১৩ বছর ধরে স্কুলের সঙ্গে যৌথভাবে প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য সারা বছর ব্যাপী নানাবিধ কল্যাণমূলক তথা সামাজিক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে প্রাক্তনী সংগঠন ‘টিব্যাক’।
—স্বাগতা বসাক, প্রধান শিক্ষিকা

8th     May,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ