বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

দিল্লি ফিরল দরবার
অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়

১৯১১ সালের ডিসেম্বর মাস। রাজ অভিষেকের জন্য লন্ডন থেকে জলপথে বম্বে, তারপর রেলপথে দিল্লি যাত্রা করলেন ইংল্যান্ডেশ্বর জর্জ ও রানি মেরি। যদিও ৭ ডিসেম্বর দিল্লির প্রধান রেলস্টেশনে নামলেন না ইংল্যান্ডেশ্বর জর্জ ও রানি মেরি। পা রাখলেন সালিমগঢ় কেল্লার কাছে, ছোট্ট একটা স্টেশনে। তারপর যমুনা পেরিয়ে মুঘল সম্রাটের মত রাজকীয়ভাবে প্রবেশ করলেন লালকেল্লায়। দিল্লিতে যমুনার ধারে তখন অপেক্ষারত অসংখ্য ভারতীয়। সেই সমস্ত নেটিভদের বুঝিয়ে দেওয়া হল, এই রাজাও মুঘল সম্রাটদের মতোই প্রবল প্রতিপত্তিশালী। অতএব, তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে নিতে হবে।
দিল্লি শহরে আগমন ঘটেছে রাজার। কাজেই তেত্রিশটি বিধিনিষেধ আরোপ করা হল নাগরিকদের জন্য। ভিক্ষে করা, উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো, বিনা অনুমতিতে দরবারে প্রবেশের মতো ‘অপরাধে’ বিধান তখন একটাই—চরম শাস্তি। রাজার শোভাযাত্রা বের হল চাঁদনি চকের রাস্তায়। দু’পাশে উৎসুক অথচ নীরব প্রজাদের ভিড়। রাজা-প্রজার দূরত্ব রক্ষায় কড়া পুলিসি প্রহরা ব্যবস্থা। কিন্তু মুঘল সম্রাটদের মতো হাতির হাওদায় না বসে রাজা পঞ্চম জর্জ বেছে নিলেন ঘোড়া। ফলে শোভাযাত্রার ভিড়ে রাজাকে দেখতেই পেলেন না দর্শকরা। কিন্তু হঠাৎ কোন পরিস্থিতিতে রাজাকে আসতে হল? দেখে নেওয়া যাক...
সিপাই বিদ্রোহের আগুন নিভে যাওয়ার সঙ্গেই অস্তমিত হল ঐতিহ্যশালী দিল্লি শহরের গরিমা। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে ভারতের শাসনভার কেড়ে নিল ব্রিটিশ সরকার। মুঘল স্থাপত্যের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ল রাজধানী দিল্লির ইতিহাস। লক্ষাধিক মানুষের রক্তে ভেজা মাটি থেকে ঔপনিবেশিক শাসনের কেন্দ্রস্থলের শেষচিহ্নটুকু সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল বাংলায়। ব্রিটিশ অধিকৃত ভারতের রাজধানী হয়ে উঠল কলকাতা।
এরপর কেটে গেল অর্ধ শতকের বেশি সময়। দিল্লি তখন পাঞ্জাব প্রদেশের অধীনে প্রায় গুরুত্বহীন সামান্য এক জেলা মাত্র। কিন্তু ভারতে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা ততদিনে ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। স্বরাজের দাবি আর সন্ত্রাস—জোড়া ফলায় নাস্তানাবুদ হচ্ছে ইংরেজরা। হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করলে যে রাজত্ব চালাতে সুবিধা, সেটা তারা সিপাই বিদ্রোহের পরেই বুঝেছিল। কাজেই মুঘল নির্মিত শহরকে বিধ্বস্ত করে সব লুটে নিতে বিশেষ সময় নেয়নি। শাহজাহানের স্বপ্নের কেল্লায় বানানো হল ইংরেজ সৈন্যদের বারাক। জামা মসজিদে মুসলমানদের নামাজ পড়ার উপরেও আরোপ হল নিষেধাজ্ঞা। সেখানে মদের আড্ডা বসাত অত্যাচারী সেনারা। পাশাপাশি, ভারতীয় ধনী ব্যবসায়ীদের কাছে মুঘল সাম্রাজ্যের বহু প্রাসাদ ও মসজিদ বিক্রি করল ইংরেজরা। জামা মসজিদ অবশ্য শর্তসাপেক্ষে ফিরিয়ে দেওয়া হল ওয়াকফ বোর্ডকে। কিন্তু নয়নাভিরাম দিল্লি হয়ে গেল ভগ্নস্তূপের ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়ানো উপেক্ষিত এক শহর।
১৯১১ সাল। মৃত্যু হল ইংল্যান্ডের রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের। মুকুট উঠল পঞ্চম জর্জের মাথায়। বড়লাট (ভাইসরয়) তখন লর্ড হার্ডিঞ্জ। তিনি দিল্লিতে রাজার অভিষেকের আয়োজন করার জন্য আবেদন করলেন রাজদরবারে। এর আগে রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তদানীন্তন বড়লাট লর্ড কার্জন। কিন্তু রাজার অভিষেক আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল লন্ডনে। একই অভিষেকের পুনরাবৃত্তি করে লোক হাসাতে চাননি তিনি। তাই শ্যাম ও কূল, দুই-ই রাখার জন্য পাঠান প্রিন্স অব ওয়েলসকে। রাজা পঞ্চম জর্জ অবশ্য হার্ডিঞ্জের আমন্ত্রণ সাদরে গ্রহণ করলেন।
এই প্রথম কোনও ইংল্যান্ডেশ্বর ভারত ভ্রমণে আসবেন। দিল্লি দরবার আয়োজন করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লেন লর্ড হার্ডিঞ্জ। সুউচ্চ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা শাহজাহানাবাদ শহরের বাইরে এক নতুন জায়গায় আয়োজিত হবে দরবার— কিংসওয়ে ক্যাম্পে।
কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে আসার প্রস্তাব অবশ্য লর্ড হার্ডিঞ্জের লেখা এক প্রশাসনিক নোটের ভিত্তিতে আগেই স্থির হয়েছিল। এই বিশেষ নোট সিমলার ঠাণ্ডায় বড়লাটের প্রাসাদে বসে হার্ডিঞ্জ খুব ভেবেচিন্তে লেখেন। কারণ, কলকাতায় রাজনৈতিক অস্থিরতা। যে কারণে ইংরেজদের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর রীতিমতো সংশয় দেখা দিয়েছিল।
মুঘল সম্রাট শাহজাহান ও তার উত্তরসূরিদের অনুকরণ করে রাজা পঞ্চম জর্জ পত্নী সহ ঝরোখা দর্শনে হাজিরা দিলেন কেল্লার জানলায়। যমুনার বালুকাবেলায় তখন মেলা বসেছে। রাজার মনোরঞ্জনের জন্য। ঠিক এখানেই মুঘলরা হাতির লড়াই দেখতেন। রাজার থেকে বেশি পুলকিত হয়ে নতুন রাজধানী নির্মাণে হাত বাড়ালেন রানি মেরি। অবশ্যই নেপথ্যে। রাজার অভিষেক পর্ব বা দরবার বসার দিন স্থির হল ১২ ডিসেম্বর। প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের সামনে অভিষেক হল রাজার। এর পরেই চমক। রাজা ঘোষণা করলেন, স্থানান্তরিত করা হবে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। কলকাতা থেকে সরিয়ে দিল্লিতে। তাঁর এই ঘোষণায় শুধু দেশীয় রাজারাই নয়, বিস্মিত হল ইউরোপের বণিক সমাজও। ক্রমেই সেই পৌঁছল কলকাতায়। জোর শোরগোল বেধে গেল সেখানেও। কলকাতার যে সমস্ত ব্যবসায়ী ইংরেজদের ব্যবসায় টাকা লগ্নি করে রেখেছিলেন, প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন তাঁরাও। সব প্রতিরোধ উপেক্ষা করে রাজধানী দিল্লির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হল রাজার হাতে, পুরনো শহর শাহজাহানাবাদ থেকে বহু দূরে, উত্তর দিশায়। মুঘলদের হাতে তৈরি প্রাচীর ঘেরা শহর তখন জনবহুল, পূতিগন্ধময় বস্তি! সে শহর ইংরেজদের বসবাসের উপযুক্ত নয়। ইংরেজরা বসবাস করে সিভিল লাইন্সে। সেটি অনেক সাফসুতরো জায়গা।
দিল্লিতে নতুন এক শহর গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করে দেশে ফিরে গেলেন রাজা। বড়লাট হার্ডিঞ্জ হলেন কার্যত ভারতের রাজা। ১৫ ডিসেম্বর বড়লাটের শোভাযাত্রা বেরোল লালকেল্লা থেকে। চাঁদনি চক হয়ে শোভাযাত্রা যাবে ফতেপুরি মসজিদ পর্যন্ত। ঠিক এই পথেই শোভাযাত্রা বের হতো মুঘল সম্রাটদের। জাঁকজমকের সঙ্গে। হার্ডিঞ্জ বসলেন হাতির হাওদায়। চাঁদনি চকের ফোয়ারার কাছে শোভাযাত্রা আসতেই গাছের আড়াল থেকে বড়লাটের হাওদা লক্ষ্য করে ছোড়া হল বোমা। সামান্য আঘাত পেলেন হার্ডিঞ্জ। মারা গেলেন তাঁর ছত্রধর। বন্ধ করে দেওয়া হল শোভাযাত্রা।
হামলাকারীরা ধরা পড়ার পর শুরু হল নতুন শহর গড়ার পরিকল্পনা। ছ’টি বিভিন্ন শহর তৈরি হয়েছে দিল্লির বুকে, সেইসব শহরগুলি প্রায় নিশ্চিহ্ন। কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, একটা নতুন শহর তৈরি ছেলেখেলা নয়। উত্তর দিশায় শহর গড়ে তোলার নানান অসুবিধা বড়লাটের সামনে তুলে ধরলেন আমলারা। নিজের নির্বাচিত স্থান অস্বীকৃত হয়ে যাওয়ায় বেজায় ক্ষুব্ধ হলেন সদ্যনিযুক্ত স্থপতি লুটিয়েন্স। দলবল নিয়ে তিনি বের হলেন জমি খুঁজতে। দক্ষিণ দিকে, রাইসিনা পাহাড়ের মাথায় বড়লাটের বাসস্থান বানানোর পরিকল্পনা মঞ্জুর করলেন হার্ডিঞ্জ স্বয়ং। শুধু অনুচ্চ পাহাড়টা একটু কেটে সমতল করে নিলেই কাজ শুরু করা যেতে পারে— রায় দিলেন আর এক স্থপতি। এই প্রাসাদ ঘিরেই গড়ে উঠবে বাকি জনপদ। নাম দেওয়া হবে—‘নিউ দিল্লি’। আগের জায়গা থেকে তুলে এনে রাইসিনা পাহাড়ে সরিয়ে আনা হল রাজার স্বহস্তে লাগানো নতুন শহরের ভিত্তিপ্রস্তর। কানাঘুষো শোনা গেল, লাল বেলেপাথরটা নাকি কোনও এক প্রাচীন মুঘল কবর থেকে তুলে আনা হয়েছিল। সেই কারণেই নতুন রাজধানীকে ভূতে পেয়েছে।
লুটিয়েন্স সাহেবের সমালোচকরা ইতিমধ্যেই তাঁর পারদর্শিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বড়লাটের কাছে। কিন্তু রানি মেরি আবার লুটিয়েন্সকে একটু বেশিই পছন্দ করতেন। লুটিয়েন্সের নামে প্রধান নালিশ হল, তিনি একেবারে হুবহু পুরনো স্থাপত্যের নকল বানাতে ওস্তাদ। তাতে নিজস্বতার ছোঁয়া থাকে না। তবে মুঘল স্থাপত্যের ছোঁয়া যাতে নতুন শহরে থাকে, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হল লুটিয়েন্সকে। শহরের নির্মাণ কাজে বরাদ্দ করা হল বিপুল পরিমাণ অর্থ। ঠিক হল, চার বছরের মধ্যে গড়ে তোলা হবে এই শহর। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠতেই থমকে গেল শহর গড়ার কাজ।
১৯১৮ সালে শেষ হল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। দু’বছর পর, ১৯২০ সালে আবার কাজ শুরু হল নতুনভাবে। উত্তরে শাহজাহানাবাদ, পূর্বদিকে যমুনা, দক্ষিণে সফদরজঙ্গ গম্বুজের মাঝে নতুন দিল্লি গড়ে তোলার কাজ শুরু হল। বড়লাটের নিবাস বানাতে সব স্থাপত্যের যেন মিশ্রণ বানালেন লুটিয়েন্স। গথিক শিল্প থেকে মুঘল স্থাপত্য—কিছুই বাকি রইল না লাল বেলেপাথরে তৈরি সেই বাসভবনের নির্মাণ কৌশলে। বিশ্বযুদ্ধের শহিদদের স্মরণে তৈরি হল ইন্ডিয়া গেট। বড়লাটের নিবাস থেকে ঢালু পথ গিয়ে মিশল সেখানে। স্থপতি হারবার্ট বেকার বানালেন প্রশাসনিক ভবন, নর্থ ও সাউথ ব্লক। ‘কুইন্সওয়ে’, যা পরবর্তীকালে জনপথ বলে খ্যাত হয়, নির্মিত হল বেকারের তৈরি নকশায়। এই পথের দু’দিকে ইস্টার্ন ও ওয়েস্টার্ন কোর্ট বসিয়ে দিলেন বেকার। এর মধ্যেই এল হার্ডিঞ্জের আদেশ। সাফ জানালেন—নতুন শহরের প্রশস্ত পথগুলির সংযোগস্থল হবে বৃত্তাকার। প্রবল আপত্তি জানালেন লুটিয়েন্স। অবশ্য তা ধোপে টিকল না।
নতুন আইনে ভারতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা চালিত সদ্য গঠিত সংসদের অধিবেশনের জন্য গড়ে তোলার পরিকল্পনা হল ‘পার্লামেন্ট হাউস’। লুটিয়েন্স আর বেকার দু’জনের যৌথ পরিকল্পনায় শুরু হল কাজ। আট বছর লাগল নির্মাণে। ইংল্যান্ডের কনট প্রদেশের ডিউক, প্রিন্স আর্থার এলেন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে। তিনি আবার সম্পর্কে রাজার পিতৃব্য। সংসদ ভবনের অনতিদূরে, মুঘল চাঁদনি চকের অনুকরণে গড়ে তোলার পরিকল্পনা হল একটি বাজার। এক কিলোমিটারের বেশি ব্যাসার্ধের দু’টি সমকেন্দ্রীয় বৃত্তাকার বাজারের নকশা বানালেন স্থপতি রবার্ট টর রাসেল। যে জমিতে সেই বাজার নির্মাণ হল, আগে সেখানে ঘন জঙ্গলে মুঘল আর ইংরেজরা শিকার করতে যেত। ভারতীয় ও বিদেশী ব্যবসায়ীদের প্রলুব্ধ করতে জলের দরে জমি বেচে দিল ইংরেজ সরকার। ভ্রমণরত ডিউকের নাম চিরস্মরণীয় করতে নাম রাখা হল  - ‘কনট সার্কাস’। শেয়াল আর হায়নার রাজত্বের মাঝেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন রানি ভিক্টোরিয়ার তৃতীয় সন্তান, কনটের ডিউক প্রিন্স আর্থার। 
২৬ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে লুটিয়েন্স বানালেন এক ধাঁচের বাংলো, যেখানে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের আমলারা বসবাস করবেন। এর পিছনে নির্মিত হল কেরানি বাবুদের বাসস্থান। নতুন দিল্লির কাজ শুরু হলে শাহ্‌জাহানাবাদের রেলওয়ে স্টেশন হয়ে গেল পুরনো দিল্লি রেলওয়ে স্টেশন। ১৯২৬ সালে পাহাড়গঞ্জ আর আজমেঢ়ি গেটের মাঝে, কনট সার্কাসের গা ঘেঁসে নির্মিত হল নতুন দিল্লি রেলওয়ে স্টেশন।
১৩ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৩১ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে নতুন রাজধানী জন্ম নিল। পর্দা তুললেন বড়লাট আরুইন।  দিল্লির ইতিহাসে সপ্তম শহর নতুন দিল্লি এরপর থেকে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী পর্যায় পর্যন্ত সাক্ষী হয়ে রইল নানা রাজনৈতিক পালাবদলের।

2nd     April,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা