বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

উপলব্ধি

লীলাপ্রসঙ্গকার স্বামী সারদানন্দ লিখেছেন: সর্বধর্মমতে সিদ্ধ হবার পর ঠাকুরের কয়েকটি ‘অসাধারণ উপলব্ধি’ হয়। তার মধ্যে একটি হল এই: জগদম্বার হস্তের যন্ত্রস্বরূপ হয়ে, স্বীয় জীবনে প্রকাশিত উদারমতের উপযুক্ত অধিকারীদের নিয়ে একটি নতুন সম্প্রদায় তাঁকে গড়তে হবে। এই সম্প্রদায়ই পরবর্তী কালের রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ। স্বামীজী বলেছেন: এ এক অসাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়। এতে সম্প্রদায়ের গভীরতা আছে, কিন্তু সাম্প্রদায়িকতা নেই। অসাম্প্রদায়িকতার উদারতা আছে কিন্তু তরলতা নেই। শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন যেমন একই সঙ্গে সমুদ্রের গভীরতা এবং আকাশের প্রসারতার বিরল সম্মিলন, এই সঙ্ঘও তাই। কারণ, শ্রীরামকৃষ্ণ সঙ্ঘ শ্রীরামকৃষ্ণেরই প্রতিচ্ছবি, তাঁর স্থূলদেহ। শ্রীরামকৃষ্ণ এই সঙ্ঘ গড়তে শুরু করেছিলেন দক্ষিণেশ্বর থেকেই। যেমন তিনি জগজ্জননীর দেখা পাওয়ার জন্য কেঁদেছেন, একটি দিন মায়ের অদর্শনে কেটে গেলে হাহাকার করে উঠেছেন, সাধনার শেষে তেমনই তিনি কেঁদেছেন জগদম্বা-প্রদর্শিত তাঁর চিহ্নিত ভক্তমণ্ডলীর জন্য। কুঠিবাড়ির ছাদে উঠে তিনি ব্যাকুলভাবে ডেকেছেন: “ওরে তোরা কে কোথায় আছিস, আয়!” যতদিন সেই ভক্তেরা আসেননি, দিনের শেষে হতাশ হয়ে একইভাবে বলেছেন, আরও একটা দিন চলে গেল, অন্তরঙ্গ ভক্তেরা তো এল না!
শ্রীরামকৃষ্ণের আহ্বানে যখন ভবিষ্যতের ত্যাগী পার্ষদরা আসতে শুরু করলেন একে একে, শ্রীরামকৃষ্ণ প্রথমেই তাঁদের ভালোবাসা দিয়ে বাঁধলেন। তারপর তাঁদের শুদ্ধ অন্তরে তাঁর সাধনলব্ধ ঐশ্বর্য ঢেলে দিতে লাগলেন। এই ‘ঢেলে দেবার’ প্রক্রিয়া মূল অংশ সবার ক্ষেত্রেই এক ছিল। অর্থাৎ ত্যাগ, বৈরাগ্য, ঈশ্বরনির্ভরতা, সাধনভজনের প্রয়োজনীয়তার কথা সবাইকে বললেন। কিন্তু কে কোন ভাব নিয়ে কোন পথে সাধন-ভজন করবেন তা সকলের ক্ষেত্রে এক হল না। সেখানে যার পেটে যা সয়।
শ্রীশ্রীমাকে ঠাকুর একসময় বলেছিলেন যে—তোমাকে এমন সব রত্ন ছেলে দিয়ে যাব, লোকে মাথা কেটে তপস্যা করেও পায় না। নরেন্দ্র, রাখাল, যোগীন, বাবুরাম—এঁরা সব সেই রত্ন ছেলে। শ্রীশ্রীমা যখন ঠাকুরের সেবার জন্য দক্ষিণেশ্বরে এসে থাকতে শুরু করলেন, তখন থেকেই ঠাকুর শ্রীশ্রীমাকে সেই রত্নছেলেদের চিনিয়ে দিতে লাগলেন। নানা কৌশলে তাঁদের সঙ্গে মায়ের পরোক্ষ সংযোগ ঘটিয়ে দিলেন। শ্রীশ্রীমার মাতৃহৃদয়ও ঠাকুরের সন্তানদের মুহূর্তে আপন সন্তানরূপে গ্রহণ করল। আর সেইসঙ্গেত্যাগী পার্ষদরাও রামকৃষ্ণ-সারদার দৈবী পরিবারে চিরকালের জন্য অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলেন নিজেদের অজ্ঞাতসারে। 
নরেন্দ্র, রাখাল প্রমুখ জন্ম থেকেই ত্যাগব্রতের জন্য উৎসর্গীকৃত। এঁরা প্রত্যেকেই ঈশ্বরের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত। স্বাধীনচেতা, অকুতোভয়, বাঁধনহীন ঈশ্বরময় জীবনই এঁদের অধিক প্রিয়। এঁদের সঙ্ঘবদ্ধ করা চাট্টিখানি কথা নয়। শ্রীরামকৃষ্ণ এবং সারদা দেবীর অপার ভালোবাসাই এঁদের একনীড় করেছিল।
প্রব্রাজিকা বেদান্তপ্রাণা সম্পাদিত ‘সঙ্ঘে শ্রীরামকৃষ্ণপার্ষদদের অবদান’ থেকে

5th     May,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ